বিনোদন ডেস্ক: সেই ২০০৮ সালেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। প্রায় ৮ বছর গোপন ছিল এই খবর। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এই দম্পতির ঘরে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তবে সবকিছু ছিল আড়ালেই। সবকিছু খোলাসা হয় গত বছরের এপ্রিলে। সন্তান কোলে টেলিভিশন লাইভে এসে সেই খবর প্রকাশ করলে শুরু হয় নাটকীয়তা। শাকিব খান এ নিয়ে শুরুতে বিভিন্ন রকম কথা বললেও পরে তাদের মধ্যে মিটমাট হয়ে যায়।
তার মাস কয়েক পরই দু’জনের দূরত্ব বাড়তে থাকে। পুত্র জয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে শাকিব খানের ছবি না থাকা ও অনুষ্ঠানে শাকিবের অনুপস্থিতির কারণে দু’জনের বিচ্ছেদের গুঞ্জন রটে।বছরের শেষভাগে অপু বিশ্বাসকে তালকানামা পাঠিয়ে দেন শাকিব খান। এ নিয়ে শরগরম থাকে গণমাধ্যম। তালাকনামায় অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তোলেন শাকিব।
তালাকনামা থেকে উদ্ধৃত করে শাকিবের আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, বিয়ের সময় ধর্মান্তরিত হয়েই শাকিবকে বিয়ে করেন অপু। এসময় অপু যে কথা দিয়েছিলেন, সেই কথা তিনি রাখেননি। কথা ছিল তিনি মুসলিম রীতিনীতি মেনে চলবেন ও গৃহিনী হয়ে থাকবেন। কিন্তু অপু বিশ্বাস সে কথা রাখেননি। তালাকনামায় শাকিব অভিযোগ তোলেন, পুত্রসন্তান জয়কে বাড়িতে গৃহকর্মীর সঙ্গে তালাবন্ধ রেখে ‘ছেলেবন্ধুকে নিয়ে’ দেশের বাইরেও গেছেন অপু। তাদের এই বিচ্ছেদ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হলেও নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন শাকিব।
অনেক তারকাই সন্তানের দিকে তাকিয়ে হলেও সংসার টিকিয়ে রাখার আহ্বান জানায় শাকিবকে। গত বছরের নভেম্বরের দিকে আইনজীবি সিরাজুল ইসলাম সিরাজের মাধ্যমে তালকনামা পাঠায় শাকিব।
ওই আইনজীবি জানান, তালাকনামা কার্যকর হতে ৯০ দিন সময় লাগবে। আইনজীবীর ভাষ্যে, শাকিব খান যদি মনে করেন এটাই তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, তবে ৯০ দিন পর তালাকনামা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়ে যাবে। আইনের বেঁধে দেওয়া ৯০ দিনের মধ্যে ৪৫ দিন পেরিয়ে গেলেও নিজের সিদ্ধান্ত অটল শাকিব।
চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের আগে এখনও দু’জনের জন্য সংসারের দরজা খোলা আছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিনএসিসি) পারিবারিক আদালতে তাদের দুজনকেই থাকতে বলা হয়েছে। সর্বসাকুল্যে তিনবার পারিবারিক আদালতে ডাক পড়বে তাদের।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, তিনবারের মধ্যে তারা যদি সংসারে ফেরার ঐক্যমতে পৌঁছান তাহলে বিষয়টির সমাধান হবে। অন্যথায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচ্ছেদ ঘটবে। ১৫ জানুয়ারি পারিবারিক আদালতে শাকিব খান আদৌ উপস্থিত থাকবেন কিনা-তাও অনিশ্চিত। একটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরের পর বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে এখনও সংসারে ফিরতে মরিয়া অপু। একমাত্র পুত্র আব্রাম খান জয়ের কথা চিন্তা করেই সংসারে ফিরতে চান তিনি।
এ বিষয়ে অপু বলেন, জয়ের জন্য আমি মৃত্যুকেও আলিঙ্গন করতে পারি। জয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই এই ডিভোর্স আমি মানি না। একটা ব্রোকেন ফ্যামিলির বাচ্চা হয়ে জয় বেড়ে উঠুক, আমি এটা চাই না। বিষয়টি সমাধানের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব। বিচ্ছেদকে ঘিরে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির পরও শাকিবের প্রতি তার কোনও আক্ষেপ নেই বলে জানালেন অপু। তার ভাষ্যে, শাকিবকে এখনও আমি সেই প্রথম দিনের মতোই ভালোবাসি। তবে সে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে সেগুলো সত্য নয়।
এমটিি নিউজ/আশি/এএস