বিনোদন ডেস্ক : একটি সেনমাতে নায়ক যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ একজন নায়িকা। তারপরও পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে নায়ক-নায়িকাদের মধ্যে বৈষম্য! কেনো এমন বৈষম্য? এর নেপথ্যেই বা কি এমন কারণ?
এ কারণগুলোর অন্যতম হচ্ছে, নায়িকাদের 'বিয়ে'। চিরায়ত সমাজ কাঠামোর মধ্যে নায়িকাদেরও আবদ্ধ থাকতে হয়। তাই বিয়ের পর তাকে শ্বশুর বাড়িতে পর্যাপ্ত সময় দিতে হয়। এ কারণে বিয়ের পর নায়িকাদের বাধ্য হয়েই কিছুদিনের জন্য বিরতি নিতে হচ্ছে।
তাছাড়া নতুন সংসারে সবার মন জুগিয়ে চলতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই তাদের ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। এমন কি অনেক পরিবার তাদের 'নায়িকা' বধূকে অভিনয় করতে নিরুৎসাহিত করেন।
এতে নায়িকাদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। কিন্তু বিয়ে নিয়ে নায়কদের এ ধরনের কোনো সংকটেই পড়তে হয় না। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, বিয়ের কয়েক বছর যেতে না যেতেই নায়িকাদের সন্তান জন্মদান ও লালন-পালনের বিষয়টি চলে আসে। সন্তানদের লালন-পালন করার জন্য তাকে আবারো বেশ কয়েক বছর ছুটিতে থাকতে হয়।
তৃতীয়ত, নায়কদের ক্ষেত্রে বয়সের কোঠা ত্রিশ পেরুলেও কাজের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হয় না। কিন্তু নায়িকারা তাদের বিয়ের সময় ঘনিয়ে এলে সুপাত্রের সন্ধান করতে গিয়ে শুটিং থেকে দূরে সরে যান।
চতুর্থ কারণ, অনেক সময় বনিবনা না হওয়ার ফলে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে তারকাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এর ফলে নায়কদের চেয়ে নায়িকারা বেশি সামাজিক সম্যসার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে অনেক দিন তাকে কাজ থেকে বিরতি নিতে হয়। কিন্তু নায়কদের এমন সমস্যা হলেও তারা দিব্যি শুটিংয়ের কাজ চালিয়ে যান।
নায়িকারা চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি শাসন করতে না পারার পঞ্চম কারণ হচ্ছে, নায়িকাদের সন্তান জন্মদানের পর ভক্তের সংখ্যা কমে যায়। সেই সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের সংখ্যাও কমে যেতে থাকে। কিন্তু নায়কের বেলায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে না।
ষষ্ঠ কারণ হচ্ছে, নায়িকাদের সন্তান যত বড় হতে থাকে, সংসারে তাকে তত বেশি সময় দিতে হয়। ফলে একপর্যায়ে নায়িকারা পর্যাপ্ত পরিমাণে অভিনয়ে সময় দিতে পারেন না।
সপ্তম কারণ, চলচ্চিত্রশিল্পের শুরু থেকেই পারিশ্রমিকের ব্যাপারে নায়কদের তুলনায় নায়িকারা অবহেলিত হয়ে আসছেন। অথচ ব্যক্তিজীবনে নায়কদের তুলনায় নায়িকাদের ব্যয়ভার বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু বিষয়টি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের কেউই উপলব্ধি করতে পারেন না।
অষ্টম কারণ, বিবাহিত নায়িকাদের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছাড়া অন্য কোনো চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলে প্রথম দিকে তারা নির্মাতাদের ওপর রুষ্ট হন। এর ফলে তারা একটার পর একটা ছবি ফিরিয়ে দেন। এ সময় তারা ভাবেন, নায়কদের মতো তারুণ্যের শেষ দিন পর্যন্ত নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করে যাবেন। কিন্তু বাস্তবতা তারা অনুভব করতে না পেরে নিজেরাই চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে দূরে সরে যান।
নবম কারণ হচ্ছে, নায়িকাদের মধ্যে একটি বদ্ধমূল ধারণা রয়েছে, তাদের 'যৌবন ক্ষণস্থায়ী'। তারা এ কথা ভেবে দ্রুত ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে অনেক মানহীন ছবিতেও কাজ করেন। এ কারণে, পরে তাদের পশ্চাতে হয়।
দশম কারণ হচ্ছে, স্ক্যান্ডাল কিংবা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। একসঙ্গে পথ চলতে গিয়ে অধিকাংশ নায়িকারা নায়ক, পরিচালক; এমন কি প্রযোজকদের সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ফলে অন্য পরিচালক কিংবা প্রযোজকরা তাদের নিয়ে কাজ করেন না। মূলত এসব কারণেই ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়িকারা ইন্ডাস্ট্রি শাসন করতে পারেন না।
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন