বিনোদন ডেস্ক : মৌসুমীর হাতে ওমর সানীর চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্য ফেসবুকের রিলসে আসে। নায়িকার কাছে নায়কের চাবুকের মারের সেসব দৃশ্য নিয়ে চলে আলোচনা। ফেসবুক ব্যবহারের কারণে এসব নজরে আসে ওমর সানীরও।
তিনিও এসব দেখে নস্টালজিক হন। নব্বই দশকে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করা ওমর সানী তাঁর দীর্ঘ অভিনয়জীবনে তিন ছবিতে একাধিকবার চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে একবার মৌসুমীর হাতে চাবুকের মার খাওয়ার ঘটনা তাঁর বিশেষভাবে মনে আছে।
ওমর সানী জানালেন, ‘প্রেমগীত’ ছবিতে প্রথম চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। এরপর আরও দুটি ছবি ‘আত্ম অহংকার’ ও ‘লাট সাহেবের মেয়ে’তেও নায়িকার হাতে চাবুকের আঘাতে জর্জরিত হয়েছেন—এমন দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে ‘আত্ম অহংকার’ ছবির চাবুকের আঘাতের দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে সত্যি সত্যিই আঘাতপ্রাপ্ত হন ওমর সানী।
সেই গল্পটা বললেন এভাবে, ‘মৌসুমীও তখন “কেয়ামত থেকে কেয়ামত” ছবিতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। মাত্র দুই-তিনটা ছবিতে কাজ করেছে। আমাদের দুজনের প্রথম ছবি। আমরা গাজীপুরের ন্যাশনাল পার্কের ওদিকটায় একটা ডাক বাংলোয় শুটিং করি। সেই ছবিতে সম্ভবত তিনবার চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্য ছিল। প্রথম দিনের শুটিংয়ের চাবুকের মার খেয়েই আমার জ্বর আসে। মৌসুমী নতুন, আমি কয়েক বছর হয় কাজ করছি। নিজেদের প্রমাণ করার ব্যাপারও আছে। চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্যটা একাধিকবারে ওকে হয়। এদিকে দৃশ্যটা বাস্তবসম্মত করতে গিয়ে আমরাও তখন যা করণীয়, করেছি। শুটিং চলাকালীন কিছুই টের পাইনি। রাতে বাসায় ফেরার পর মা দেখলেন, আমার পিঠ লাল হয়ে আছে! এরপর তো হুলস্থুল অবস্থা।’
ওমর সানী তাঁর পরিবারের সঙ্গে তখন ঢাকার তেজতুরি বাজার এলাকায় থাকতেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে ওমর সানী ছিলেন সবার ছোট। গাজীপুর থেকে শুটিং শেষে বাসায় ফিরতে রাত হয়ে যায়। ছেলের পিঠে লাল দাগ দেখে মা তাঁর বোনদের ডেকে আনেন।
ওমর সানী সেই গল্পটা বললেন এভাবে, ‘শরীরের অবস্থা দেখে আমার সহকারীকে ডাকেন মা। চিৎকার করে বলতে থাকেন, কী হয়েছে আমার ছেলের? এই ছবির পরিচালক কে? তারে ডেকে নিয়ে আয়। আমার ছেলের এই অবস্থা কেন করছে? নায়িকাই–বা কে ছিল, কেন এভাবে আঘাত করেছে? বোনদের ডেকে অস্থির। তারপর মাকে বুঝিয়ে শান্ত করা হয়। পরে রাতে আমার গায়ে জ্বর চলে আসে। সেই জ্বর নিয়েই পরদিন আবার শুটিং যাই।’
‘আত্ম অহংকার’ ছবির পরিচালক রায়হান মুজিব, ক্যামেরায় ছিলেন জেড এই মিন্টু। ‘প্রেমগীত’ ও ‘লাট সাহেবের মেয়ে’ ছবি দুটি পরিচালনায় ছিলেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। প্রথমটিতে ওমর সানীর নায়িকা ছিলেন লিমা ও পরেরটিতে মৌসুমী।
কথা প্রসঙ্গে ওমর সানী বললেন, ‘এখন তো আমার নিজের ছবি দেখলে ভালো লাগে না। মনে হয় অভিনয় ভালো হয়নি। এই জিনস প্যান্ট কেন পরলাম। চুলের স্টাইল কেন এভাবে করলাম। হাতের মুঠি এমন কেন করলাম। সংলাপ কেন এভাবে দিলাম—সত্যিই খুব বিরক্ত লাগে। আর এসব কারণে আমার কোনো ছবি পুরোটা দেখা হয়নি, দুই-একটা ছাড়া।’
৩২ বছর আগে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করা ওমর সানী এখন আর অভিনয়ে নিয়মিত নন। নিজের রেস্টুরেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি সম্প্রতি রিয়েল এস্টেট এবং প্রযুক্তিপণ্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছেন। সপ্তাহে পাঁচ দিন নতুন প্রতিষ্ঠানে সময় দিচ্ছেন এবং বেশ উপভোগ করছেন বলেও জানালেন। ওমর সানী বললেন, ‘নতুন প্রতিষ্ঠানে তাঁর কাজের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই নিজের মতো করে কাজ করছেন।’