‘বাজিরাও মাস্তানি’র নাচে ভুল ধরলেন দর্শক
বিনোদন ডেস্ক : বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন সঞ্জয় লীলা বনশালী। কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে তার মেগাবাজেট ছবি বাজিরাও মাস্তানির গান পিঙ্গার ভিডিও। আর তার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। দীপিকা এবং প্রিয়াঙ্কার নাচের এই অংশটিকে অবাস্তব বলেছেন পেশওয়া-দের বংশধর মোহিনী খারকারে। একটি খোলা চিঠি লিখেছেন তিনি পরিচালককে। আর সেখানাই কোনও রাখঢাক না করে তিনি বলেছেন, সঞ্জয় ছবিটি বানানোর আগে কোনও রকম গবেষণা করেননি!
খোলা চিঠিতে তিনি লিখেছেন...
শ্রী বনশালী, সময় এসেছে এবার মুখ খোলার। আপনার ছবি বাজিরাও মাস্তানিতে পিঙ্গা নামে গানটির দৃশ্যায়ন নিয়ে আমার বিশেষ আপত্তি আছে। এই গানের দৃশ্যায়নে এমন সব জিনিস দেখানো হয়েছে যা ইতিহাসের সঙ্গে কোনওভাবেই মেলে না।
এটি কোনও কাল্পনিক কাহিনী নয় সঞ্জয়বাবু। আপনি এমন একটি ঘটনার উপর ছবি তৈরি করেছেন যা ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১০০ বছরের উপর পেশওয়ারা রাজত্ব করেছেন। আপনি কি কোনও পড়াশোনাই করেননি এ ব্যাপারে? আদৌ বোঝার চেষ্টা করেছেন ১৭০০ শতাব্দীর মানুষরা কেমন ছিলেন, সেই সময়টা কেমন ছিল? তাদের আচার-ব্যবহার সম্পর্কে কোনও ধারনা আছে আপনার?
আপনার জ্ঞানবৃদ্ধির জন্যে রইল কিছু নথিভুক্ত তথ্য...
১. কাশিবাই সাহেবের যক্ষা এবং বাতের রোগ ছিল। খানিকটা খুঁড়িয়ে হাঁটতেন তিনি। তাই এভাবে নাচ করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না।
২. যদি তিনি শারীরিকভাবে সুস্থও হতেন, তবুও নাচ শিখতেন না, কারণ সেই সময়ে সেটা রাজপরিবারের সংস্কৃতিতে ছিল না।
৩. পিঙ্গা গানে যে পোশাক দেখানো হয়েছে, সেই ধরনের পোশাক রাজপরিবারের মহিলারা তো নয়ই সাধারণ বাড়ির মহিলারাও পরতেন না। সেই সময়ে যে ভাবে শাড়ি পরা হত, তাতে একটু শরীর দেখানো হত না।
৪. কাশিবাই এবং মাস্তানির জীবনে একবারই সামনা সামনি দেখা হয়েছিল। সেক্ষেত্রেও কোনও আন্তরিকতা ছিল না সেই সাক্ষাতে।
৫. কাশিবাই ছাসের মাহাদজি কৃষ্ণ জোশির মেয়ে ছিলেন। তাই তিনি ছাসকার জোশি নামেও পরিচিত ছিলেন। তার বংশধরেরা এখনও জীবিত।
৬. মাস্তানি রাজনর্তিক ছিলেন না। বুন্দেলখন্দের রাজা ছত্রসালের মেয়ে ছিলেন তিনি। তিনি বাজিরাও-এর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। বান্দার নবাবরা মাস্তানির উত্তরসূরী। তাদের কাছে আপনি অনেক প্রমাণ পাবেন।
আমার কথা বিশেষ বিশ্বাস না হলে আপনি পড়ে দেখতে পারেন শ্রী প্রমোদ ওক-এর লেখা পেশওয়ে ঘরনয়াছা ইতিহাস পড়ে দেখতে পারেন। এছাড়াও সাহায্য নিতে পারেন পেশওয়ে দপ্তর থেকে। বাজিরাও এক বিরাট যোদ্ধা ছিলেন। ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের পরেই তাকে মানা হত। আপনি তাকে নিয়ে এই যে প্রেম কাহিনী বানিয়েছেন, তাতে আদতে তাকে অপমানই করেছেন। এতে তাদের মতো বিরাট মাপের মানুষদের সম্পর্কে সমাজের ভুল ধারনা তৈরি হবে।
১৯ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�