শুটিংয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন পরীমণি
বিনোদন ডেস্ক : গতকাল শুক্রবার সারা দেশে মুক্তি পেয়েছে লোকজ গল্পনির্ভর চলচ্চিত্র মহুয়া সুন্দরী। ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনয় করেছেন পরীমনি। পরীমনির সঙ্গে এ ছবিতে অভিনয় করেছেন সুমিত। সিনেমাটি পরিচলানা করেছেন রওশন আরা নীপা। ‘মহুয়া সুন্দরী’ ছবির জন্য সরকারি অনুদান পেয়েছেন রওশন আরা নীপা। প্রথম দিন সিনেমাটি দেখেতে রাজধানীর বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছিলেন পরী। সবগুলোই হাউজফুল দেখলাম। আশা করছি ছবিটি দর্শকের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
বাংলা লোকজসাহিত্যে মহুয়া সুন্দরী অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে রেখেছে। কারণ মৈমনসিংহ গীতিকার বিভিন্ন পালার মধ্যে মহুয়া সর্বৈব গুণে সমৃদ্ধ। হুমরা বেদে পাহাড়ে বসবাস করে এবং ডাকাতি করে। একদিন সে এক ব্রাহ্মণ মেয়েকে ডাকাতি করে আনে। মেয়েটির নাম রাখে মহুয়া। হুমরা তাকে নিজের সন্তানের মতো লালনপালন করে। মহুয়া নানা ধরনের খেলাধুলা, নাচগান শিখে রীতিমতো সবাইকে আকৃষ্ট করে। হুমরা মহুয়োকে মক্ষী করে একটি বেদের দল গঠন করে। বামনকান্দার ব্রাহ্মণ জমিদার নদের চাঁদ মহুয়াকে দেখে আকৃষ্ট হয়। মহুয়াও তাকে মন দেয়। হুমারের ইচ্ছে মহুয়ার বিয়ে হবে দলের যুবক সুজনের সাথে। তাই বামনকান্দা থেকে তারা দল নিয়ে অনত্র চলে যায়। এভাবেই গল্পের কাহিনী এগোতে থাকে।
বিশ্লেষকেরা বলেছেন, ‘মহুয়া বঙ্গরমণীর রণরঙ্গিনী মূর্তি’। ছবিতে এর কতটুকু বাস্তবসম্মতভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন পরী, তা মূল্যায়ন করবেন দর্শক। পরীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ছবিটির শুটিংকালীন স্মরণীয় একটি ঘটনা। ‘গাজীপুরের হোতাপাড়ায় প্রচণ্ড শীতের মধ্যে একটি যাত্রার শুটিং চলছিল। তখন রাত আড়াইটা। আমি ছিলাম মঞ্চের ওপর চেয়ারে বসা, পাশে ছিল একটি হিটার। ওটার আলতো উষ্ণতায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ যখন রওশন (রওশন আরা নীপা) আপা আমাকে ডাক দিলেন। আমি কিছু না বুঝেই ডায়লগ দিতে শুরু করেছিলাম। এই কথা মনে হলেই আমার হাসি পায়।’
পরীমনি বললেন, ‘প্রথম দিন ছবির স্ক্রিপ্ট পড়ে এত ভালো লেগেছে যে কখন চোখ ভিজে গেছে, টেরই পাইনি। তারপর পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করে ছবিটির জন্য টানা সময় দিয়েছি। আমার মনে হয়েছে, একবার এই চরিত্রে ঢুকে গেলে শেষ না করে বের হতে পারব না। গোড়াতে খুব ভয়ে ছিলাম। আমি অভিনয় করি চলচ্চিত্রে, কিন্তু যাত্রার ঢঙে অভিনয় করতে পারব তো!’
মহুয়া সুন্দরীর চরিত্রে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে পরীমনি বলেন, 'আমার জীবনে এ ধরনের ছবিতে আর কাজ করা হবে কিনা জানি না। এ পর্যন্ত করা ছবিগুলোর মধ্যে সেরা একটি কাজ মহুয়া সুন্দরী। আমি দর্শকদের অনুরোধ করবো তারা যেনো হলে গিয়ে ছবিটি দেখেন।'
পরীমনি বললেন, ‘আমরা সাধারণত যে ধরনের ছবিতে কাজ করি, মহুয়া সুন্দরী সেগুলো থেকে আলাদা। আমাকে যদি অনেক দিন পরে কেউ জিজ্ঞাসা করে আপনার সেরা ছবি কোনটি? ‘উত্তর দিতে গিয়ে অবশ্যই ‘মহুয়া সুন্দরীর’ নাম বলব। কারণ এটা আমার জীবনের আলাদা একটা পার্ট।
‘একজন আমার কাছে জানতে চেয়েছিল, মহুয়া সুন্দরী কি বেদের মেয়ে জোসনা হবে, নাকি খায়রুন সুন্দরী? আমি বলেছি, এটা মহুয়া সুন্দরীই হবে।’
পরীমনি বললেন, ‘মহুয়া সুন্দরীর গল্পটা যাত্রাপালা ঘিরে। দর্শক এখানে আমাকে দুটি চরিত্রে দেখবেন। আমি ছবি রানী। কিন্তু যাত্রার মঞ্চে মহুয়া সুন্দরী। দুটি চরিত্রে এত চমক আছে যে তা বলে বোঝানো যাবে না।’
ছবিটি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত পরীমণি। তিনি আশা করছেন, দেশে যখন মৌলিক গল্পের ছবির সংখ্যা কম, ঠিক এমন সময় ছবিটি দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করতে শতভাগ সমর্থ হবে।‘মহুয়া সুন্দরী’তে মোট ছয়টি গান রয়েছে। সংগীতায়োজন করেছেন ইমন সাহা এবং অমিত চট্টোপাধ্যায়। এতে পরীর বিপরীতে নায়ক হিসেবে থাকছেন সুমিত। তাছাড়া ছবিটিতে আরও অভিনয় করছেন মামুনুর রশীদ, সুচরিতা ও জয়রাজ প্রমুখ।
২১ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�