ফেসবুক নিয়ে ফারুকীর উদ্বেগ
বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের গুণী নির্মাতা মোস্তফা সারয়ার ফারুকী বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো সরকার কতৃক বন্ধ করে দেয়ায়।
এ নির্মাতা বর্তমানে অবস্থান করছেন সদূর কোরিয়ায়াতে। সেখান থেকেই তিনি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ওই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
ফরুকী লিখেছেন, ‘দেশে ফেরার সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই আমি উদ্বিগ্ন বোধ করছি। জীবনে এর আগে একবারই দুই সপ্তাহ একটানা দেশের বাইরে ছিলাম। টেলিভিশন ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজে কোরিয়ায়। কিন্তু সেটা যেহেতু ছবির কাজ ছিলো, খুব বেশি হোমসিক হওয়ার সুযোগ পাই নাই। এইবার দুই সপ্তাহের সফরে বিচিত্র রকমের সব সিনেমাটিক ওয়ার্ক দেখতে দেখতে আমি সত্যিই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম আর দিন গুনছিলাম ‘কবে যাবো ফিরে!’ আজকে যখন সত্যিই ফেরার সময় এসেছে তখন আমি আনন্দের পরিবর্তে কেনো উদ্বিগ্ন বোধ করছি?’
ফারুকী নিজের প্রশ্নের জবাব নিজেই দিয়ে লিখেন, ‘আমি একটা অবরুদ্ধ দেশে ফিরছি যেখানে আমার সকল প্রকার আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সীমিত। ভাইবার বন্ধ, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ, ফেসবুক বন্ধ। যেখানে প্রতি মুহূর্তে আমাকে আন্তর্জাতিক কন্টাক্টসদের কাছে একসেসিবল থাকতে হয়, সেখানে আমাকে এখন একটা সীমিত যোগাযোগের পরিসরে থাকতে হবে।এটা স্রেফ অগ্রহনযোগ্য।’
সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ফারুকী লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের তরুণদের আপনারা পাশে পেয়েছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলে, কোনো তালেবানি রাষ্ট্রের কথা বলে না।এমনকি তালেবানি রাষ্ট্রেও ফেসবুক এবং মেসেজিং সাইট চলছে।’
ফেসবুক বন্ধে সরকারের দেওয়া অযুহাতকে ছেলে ভুলানো উল্লেখ করে তিনি লিখেন, ‘দয়া করে নিরাপত্তার মতো ছেলেভুলানো যুক্তি দেখিয়ে নাগরিকদের উপর জুলুম করবেন না। আবারও বলছি, এটা আপনাদের সরকারের ইশতেহারের সাথে যায় না। দয়া করে নিষিদ্ধ জঙ্গি দলের দর্শনকে আপনাদের দর্শন বানাবেন না। নিরাপত্তা এবং মত প্রকাশের প্লাটফর্ম কোনো মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ বিষয় না।’
শুধু তাই নয়, তারানা হালিমের প্রকাশিত চিঠির উল্লেখ করে ফারুকী লিখেছেন, ‘এই বিষয়ে তারানা আপার আবেগঘন লেখা আমার মধ্যে কোনো প্রকার আবেগ জাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট অভিনেতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। যিনি কান্নার দৃশ্যে জান দিয়ে কাঁদে আর দর্শক হোহো করে হাসে। আমারও হাসি পেয়েছে। তারানা আপাকে অনেক ভালোবাসি। সেই ভালোবাসাও তার যুক্তিগুলো বুঝতে আমাকে কোনো সাহায্য করতে পারে নি। আমি শুধু বুঝতে পেরেছি বিমান দিয়ে টুইন টাওয়ারে হামলা করাতে সবার উচিত ছিলো বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত করে দেয়া। ফোনের মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারে, সুতরাং সবার উচিত ফোন নিষিদ্ধ করে দেয়া। শেষ করতে চাই, বড়ভাই সাংবাদিক ইশতিয়াক রেজার একটা স্ট্যাটাস দিয়ে। তিনি যা লিখেছেন তার সারমর্ম: চাঁদে সাঈদীকে দেখা যাওয়া আর এই অজুহাতে ফেসবুক নিষিদ্ধ করা দুইটাই একই রকমের কুপমন্ডুকতা।’
৩০ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন
�