আমির খানের যত বিতর্কিত মন্তব্য
বিনোদন ডেস্ক : বলিউড তারকাদের অনেকেই অনেক সময় ফান করতে গিয়ে বেঁফাস অনেক মন্তব্য করে বসেন। যা পরবর্তীতে বিতর্কের জন্ম দিয়ে থাকে। তবে এদিক থেকে বেশ সতর্ক ছিলেন বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ আমির খান।
ফলে এই অভিনেতার মুখ থেকে বেরিয়ে আসা প্রতিটি কথাই হবে নির্ভুল আর সত্য বচন—এমনটা মনে করেন অনেকে। এ জন্য বরাবরই আমিরের প্রতিটি কথাকেই গুরুত্বের সঙ্গে নেন তার ভক্ত, এমনকি নিন্দুকেরাও।
হোক তা কোনো জাতীয় ইস্যু কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী শাহরুখের নতুন ছবি—সবকিছু নিয়েই আমির খানের থাকে নির্দিষ্ট মন্তব্য। যখনই এসব নিয়ে মুখ খোলেন আমির, ভারতীয় প্রচারমাধ্যমগুলো হয়ে ওঠে সরগরম। কখনো কখনো সেই বক্তব্য ঝড় তোলে ভারতের রাজ্যসভা থেকে শুরু করে শহরের গলিঘুপচিতেও।
এই যেমন এবার, কী ভোগাটাই না ভুগতে হচ্ছে আমিরকে ভারতের ‘অসহিষ্ণুতা’ বিষয়ে মন্তব্য করে। শেষ নাগাদ এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি থেকে একটু নিস্তার পেতে তাকে উড়াল দিতে হলো যুক্তরাষ্ট্রে!
চিকিৎসার বাহানায় বিতর্ক থেকে নিলেন কিঞ্চিৎ অবসর। কিন্তু আমিরের জন্য এসব নতুন কিছু নয়। এর আগেও আমিরের এমন অনেক মন্তব্য নিয়েই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভারত। মিছিল, বিক্ষোভ, হুমকি, ধমকি, মামলা—অনেক খড়্গই গেছে আমিরের ওপর দিয়ে। চলুন আমিরের সেই দুঃসময়গুলোর খণ্ডচিত্রে নজর দেওয়া যাক।
‘পিকে’ বিতর্ক : সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি। তিনি শুধু পরিচালকের কথামতো বলেছিলেন সংলাপ। পুলিশকে ডেকেছিলেন ‘ঠুল্লে’ বলে। এই ছিল আমিরের দোষ। এ নিয়েই ভারতে ছড়িয়ে যায় উত্তেজনা। তা ছাড়া পোস্টারে নগ্ন ছবি ছাপানোর কারণেও আমিরের নামে মামলা পর্যন্ত হয়। আমির এবং ‘পিকে’ ছবিকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়। তা ছাড়া পিকে ছবির মধ্য দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অপবাদও সইতে হয়েছিল আমির খানকে। কিন্তু ‘পারফেকশনিস্ট’ আমির খুব কৌশলেই বেরিয়ে আসেন এসব বিতর্ক থেকে এবং প্রাপ্য সাফল্যটুকুও অর্জন করে নেন প্রতিবারের মতো।
নর্মদা বাঁধ বিতর্ক : ২০০৬ সালে ভারতের নর্মদা বাঁধ বিতর্ক নিয়ে মন্তব্য করে নিজেই নতুন বিতর্কে জড়িয়ে যান আমির খান। ওই সময় গুজরাটে ছিল বিজেপির শাসন (বর্তমানে ভারতের ক্ষমতাসীন দল), সে সময় এ দলটিকে নিয়েও অনেক ভালোমন্দ বলেন আমির। যার ফলে গুজরাটে আটকে যায় আমিরের ছবি ফানাহ। এ ছবির প্রদর্শনী প্রবল বিক্ষোভের মুখে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
‘শাহরুখ’ নামের পোষা কুকুর : বড় বড় জাতীয় ইস্যুর বাইরেও আমির তার সহকর্মীদের বিষয়ে মন্তব্য করে হয়েছেন সমালোচিত। নিজের ব্লগে একদিন হুট করেই আমির লিখলেন, ‘শাহরুখ আমার পদলেহন করছে। আমি তাকে বিস্কুট খাইয়ে যাচ্ছি। এর চেয়ে বেশি আর কী চাই? এবার কোনো পরিণতির দিকে যাওয়ার আগে বলে দিই, শাহরুখ আমাদের কুকুরের নাম।’ ব্যস। এ নিয়েই শুরু হয়ে গেল লঙ্কাকাণ্ড। শাহরুখ ভক্তরা তো বটেই, চলচ্চিত্র জগতের অনেক বড় বড় কর্তাব্যক্তিও মেনে নিতে পারলেন না আমিরের এই অদ্ভুত তামাশা। সেই যে শুরু হলো, এখনো সম্পর্ক মধুর হয়নি শাহরুখ-আমিরের মধ্যে। এখনো একে অপরের সঙ্গে দেখা হলে সৌজন্যতার খাতিরে শাহরুখ জড়িয়ে ধরেন আমিরকে কিংবা আমির একগাল হেসে কুশল বিনিময় করেন শাহরুখের সঙ্গে; কিন্তু ভালো বন্ধু? সে কি আর সহজ কথা!
অমিতাভের সমালোচনা করে সমালোচিত : শাহরুখ না হয় আমিরের সমসাময়িক, তাই তাকে নিয়ে একটু হাসি-তামাশা করতেই পারেন। কিন্তু আমির খান তো অমিতাভ বচ্চনকেও ছাড় দেননি। স্পষ্টভাষী আমির ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া সঞ্জয়লীলা বানশালির ব্ল্যাক ছবি নিয়ে দিয়েছিলেন বেশ ঝাঁঝালো মন্তব্য। বলছিলেন, অমিতাভ বচ্চনের অভিনয় নাকি এ ছবিতে ছিল ‘ওভার দ্য টপ’ অর্থাৎ একটু বাড়াবাড়ি ধরনের! তারপর তো আর কথা নেই। শাহরুখের ভক্তদের মতো অমিতাভ ভক্তরাও হয়ে উঠলেন ‘আমির বিদ্বেষী’। কয়েক দিন পর্যন্ত তাঁরা আমিরের কুশপুত্তলিকা, পোস্টার, ছবি এসবে আগুন ধরালেন, বের করলেন মিছিল, করলেন বিক্ষোভ। প্রথম আলো অবলম্বনে
০৩ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন
�