 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
বিনোদন ডেস্ক: ভারতের লোকসভা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি মডেল কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন অভিনেতা ফেরদৌস। ভিসা বাতিল, কালো তালিকাভুক্ত এবং ভারত ত্যাগেও বাধ্য হন তিনি। তাকে ঘিরে যখন দুই বাংলা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে তখন তিনি কী বলছেন। সে কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ
পশ্চিমবঙ্গে একটি দলের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় আপনাকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত সরকার, একটি রাজনৈতিক দল আপনার গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। কেন এ কাজে জড়ালেন?
দেখুন আইনগত সব দিক আমার পুরোপুরি জানা ছিল না। তাই নিজের অজান্তে এ সমস্যায় জড়িয়ে গেছি। আমার কাছে যখন প্রচারণায় অংশ নিতে অনুরোধ করা হয় তখন আমি প্রথমে না বললেও আমাকে বলা হয়- আপনি তো এ দেশেও একজন জনপ্রিয় অভিনেতা, তাহলে একজন সেলিব্রেটি হিসেবে এ অনুরোধ রক্ষা করতে অসুবিধা কোথায়। আমিও ভাবলাম তাই তো। আসলে তাদের অনুরোধ রক্ষা করতেই প্রচারণায় অংশ নেই।
কিন্তু এসব বিষয়ে প্রতিটি দেশের নিজস্ব কিছু আইন-কানুন আর নিয়মনীতি আছে, আইনের বাইরে গিয়ে তো অনুরোধ রক্ষা করা যায় না, তাহলে কি আবেগের বশবর্তী হয়েই এ কাজে অংশ নেওয়া?
আমি তো প্রথমেই বলেছি আইনগত বিষয়টি সম্পর্কে আমি পুরোপুরি অবগত ছিলাম না। তাছাড়া আমি ভেবেছি দীর্ঘদিন ধরে কলকাতার ছবিতে কাজ করছি, বলতে গেলে আমার ফিল্ম ক্যারিয়ার সেখান থেকেই শুরু। কলকাতায় অভিনয়, প্রযোজনা, পরিচালনা সবই করেছি। দুই দেশের মধ্যে একটি ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ সুমধুর সম্পর্ক রয়েছে তাই এ প্রচারণায় অংশ নিলে অসুবিধার কিছু হবে না। তাছাড়া উত্তর দিনাজপুরের সঙ্গে অভিনয়ের সুবাধে সেখানে বরাবরই ভালো যোগাযোগ রয়েছে আমার। এখানে একাধিকবার ছবির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছি। এই চিন্তা এবং অনুরোধ থেকেই প্রচারণায় অংশ নেই। হয়তো আবেগও অনেকটা কাজ করেছিল আমার মধ্যে।
নিয়ম অনুযায়ী এক দেশের নাগরিক অন্য দেশের রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে না। এ বিষয়টি আপনার জানা ছিল না?
ওই যে বললাম, যেহেতু আমি ওই দেশেরও একজন জনপ্রিয় অভিনেতা, তাই ভেবেছিলাম সমস্যার কিছু নেই। আমাকে জানানো হয়েছিল উত্তর জেলা নির্বাচন কমিশন অর্থাৎ যেখানে আমি প্রচারণায় অংশ নেই সেই কমিশনের তথ্য অনুযায়ী কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর হয়ে বিদেশিদের প্রচারের বিষয়টি বিধিভঙ্গের আওতায় পড়ে এমন কিছু স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। তাই আমি আশ্বস্ত হয়ে এ কাজে অংশ নেই। বিষয়টি বিধিভঙ্গের আওতায় পড়ে এমন কিছু যে স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই- জেলা নির্বাচন অফিসার এমন রিপোর্ট ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছেন বলে জেনেছি। আবারও বলছি, যেহেতু আমি সেখানকার একজন পরিচিত অভিনেতা, তাই অতসব ভাবিনি। আমার কাছে মনে হয়েছে একজন শিল্পীর কোনো ভৌগলিক গণ্ডি থাকতে পারে না। শিল্পী মানে সর্বজনীন। এ বোধটিই আমার মধ্যে বেশি কাজ করেছিল। তাছাড়া কোনো তারকা নির্বাচনী প্রচারে কীভাবে অংশ নেবে সেটা ঠিক করা হয় রাজ্যস্তর থেকে। তাদের কথা ছিল আমি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নায়ক হলেও পশ্চিমবঙ্গে টালিগঞ্জের অভিনেতা হিসেবে সেখানকার মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তাই প্রচারে অংশ নিতে কোনো অসুবিধা নেই।
সে দেশের অভিযোগ অনুযায়ী আপনি বিজনেস ভিসা নিয়ে কলকাতায় গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন, যা কেবল ভিসার শর্ত ভঙ্গ নয়, বিদেশে গিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচনী প্রচার কাজে অংশ নেওয়ার মতো অনৈতিক কাজ, এ বিষয়ে কী বলবেন?
আসলে আমি তো বলছি, না জেনে-বুঝে এ কাজে অংশ নিয়েছি। এখন আইনগত যে কোনো বিষয় আমি মেনে নিতে বাধ্য। এ নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।
আপনাকে সেখানে কালো তালিকাভুক্ত করায় ভবিষ্যতে সে দেশে চলচ্চিত্রের কাজ করা কীভাবে সম্ভব হবে?
কালো তালিকাভুক্ত করায় ভবিষ্যতে ভিসা পাওয়া কতটা সহজ হবে তা আইনি প্রক্রিয়াতেই নির্ধারণ হবে। এক্ষেত্রে আমার বলার কিছু নেই। আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই, আইনের প্রতি আমি বরাবরই শ্রদ্ধাশীল। আইন আমার জন্য যা নির্ধারণ করবে তা মেনে নেব।-বিডি প্রতিদিন
 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                 
  
                             
                                    
                