বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৯, ১০:০৮:০১

এবার যদি আমরা হেরে যাই, হেরে যাবে পুরো বাংলাদেশ: ইলিয়াস কাঞ্চন

এবার যদি আমরা হেরে যাই, হেরে যাবে পুরো বাংলাদেশ: ইলিয়াস কাঞ্চন

বিনোদন ডেস্ক: সড়ক দুর্ঘ'টনার নির্ম'ম স্মৃ'তির সাক্ষ্য বয়ে চলেছেন বছরের পর বছর। ১৯৮৯ সালে দুর্ঘ'টনা থেকে র'ক্ষা পায় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের জীবন। কিন্তু ১৯৯৩ সালে সড়ক কে'ড়ে নেয় তার স্ত্রীর জীবন। প্রিয় হারা'নোর শো'ক শ'ক্তিতে পরিণত করেন বাংলা চলচ্চিত্রের এই জনপ্রিয় নায়ক।

এদিকে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ স্লো'গান নিয়ে ছু'টে বেড়ান দেশের একপ্রাপ্ত থেকে অন্যপ্রা'ন্তে। এরপরই বাংলাদেশের সড়কে ফোরলেন, সড়কে ডিভাইডার তৈরি, মহাসড়ক থেকে নসিমন-করিমন উ'ঠিয়ে নেওয়া, প্রতিবছর নিরাপদ সড়ক দিবস পালন করা- এমন অসংখ্য সাফল্য এসেছে।

আর ঠিক তেমনি সড়ক পরিবহণ শ্রমিকদের তো'পের মুখেও পড়তে হয়েছে এই ‘নিঃ'স্ব শের'পা’কে। কিন্তু সময়ে-অসময়ে কখনোই নিজেকে রাজপথে থেকে উঠি'য়ে নেয়নি। সড়কে শৃঙ্খ'লা ফে'রাতে চেষ্টা করেছেন একটি যুগোপযোগী ও সবার স্বা'র্থরক্ষা'কারী আধুনিক আইন প্রণয়নের জন্য জনমত গড়ে তুলতে। আড়াই দশকেরও বেশি সময় ধরে টা'না আন্দো'লনের পর কা'ক্ষিত সেই পরিবহণ আইন এখন সড়কে।

যদিও নতুন এই সড়ক পরিবহন আইন সং'শোধ'নের দাবিতে গত কয়েকদিন বাংলাদেশের বাস-ট্রাক শ্রমিকরা ‘কর্মবি'রতি’ পালন করেছেন। আর সেখানে চলচ্চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ছবিকে হে'য় প্র'তিপ'ন্ন করার অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছ'ড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ইলিয়াস কাঞ্চনের ছবি সম্বলিত ব্যানার টা'ঙিয়ে কিংবা কু'শপু'ত্তলিকা তৈরি করে সেখানে জু'তার মা'লা দেয়া হয়েছে।

এদিকে শ্রমিকদের এসব কর্মকা'ণ্ডে ভী'ষণ ক'ষ্ট পেয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘কখনো-কখনো খা'রাপ লাগে। এতোটাই খা'রাপ লাগে যে, যাদের জন্য আমি এতো কিছু জ'লাঞ্জ'লি দিয়েছি কোন কিছু পাওয়ার আশায় নয়। আমি আমার সিনেমার ক্যারিয়ার শে'ষ করেছি নিরাপদ সড়কের জন্য। আমার সঞ্চি'ত অর্থ ব্যয় করেছি।’

এসব ছবির মাধ্যমে ইলিয়াস কাঞ্চনের বিরু'দ্ধে বাস-ট্রাক শ্রমিকদের পু'ঞ্জিভূ'ত ক্ষো'ভের ব'হিঃপ্র'কাশ ঘটেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রতি শ্রমিকদের এতো ক্ষো'ভের কারণ কী? ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘বাংলাদেশে সড়ক দু'র্ঘ'টনা রো'ধের জন্য যে আ'ন্দো'লন সেটি তার মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল। তার প্রতি শ্রমিকদের ক্ষি'প্ত হবার এটিই কারণ বলে মনে করেন তিনি।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘শ্রমিকরা মনে করে, সড়ক দু'র্ঘট'নায় কারো হাত নেই। এটা আল্লাহর ইচ্ছায় হয়। আমি কেন বিষয়টা নিয়ে বলবো? তারা এটাই মনে করে।’

ইলিয়াস কাঞ্চন মনে করেন, ‘তাকে হে'য় প্রতিপ'ন্ন করার পেছনে মালিক-শ্রমিক নেতাদের উ'স্কা'নি রয়েছে। তিনি বলেন, এই শ্রমিকরা নেতাদের কথা দ্বারা প্রভা'বিত। নেতারা যা বলে শ্রমিকরা তাই শোনে। তাদেরকে বলা হয়, সড়কে যা কিছু হোক না কেন আমরা আছি। সেটা ন্যায় হোক, অ'ন্যায় হোক,যা কিছু হোক। এটা শ্রমিকরা ঠিক এককভাবে করে নাই। শ্রমিক-মালিক সংগঠনের নেতৃত্ব যারা দিচ্ছে তারাই এ বিষয়টা করেছে।’

এ সময় ইলিয়াস কাঞ্চন প্রশ্ন তোলেন, ‘এই মালিক সমিতির নামে শ্রমিক সমিতির নামে যে কোটি-কোটি টাকা চাঁ'দাবা'জি করে, সে চাঁ'দা কোন উন্নয়নের কাজে লাগে?’ তিনি অভিযোগ করেন, মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো শ্রমিকদের উন্নয়ন চায় না। কারণ শ্রমিকরা যদি যথাযথ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে কাজ করে তাহলে তার কাছ থেকে সংগঠনগুলো কোন চাঁ'দা নিতে পারবে না।

এ সময় মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো দাবি করেছে গত কয়েকদিনের ‘ক'র্মবির'তি’র সাথে সংগঠনের কোন সম্পর্ক নেই। শ্রমিকরা স্ব'তঃস্ফূ'র্তভাবে এ কর্ম'বির'তি পালন করেছে বলে তাদের দাবি। ইলিয়াস কাঞ্চন প্রশ্ন তোলেন, মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলোর নির্দেশে যদি আ'ন্দো'লন না হয়ে থাকে, তাহলে তাদের নির্দেশে আ'ন্দো'লন প্র'ত্যা'হার হয় কিভাবে?

গতকাল বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাথে বাস-ট্রাক মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর বৈঠকের পর ক'র্মবি'রতি প্র'ত্যা'হার করেছে শ্রমিকরা। সে বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বা'স দিয়েছেন, শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী নতুন সড়ক পরিবহন আইন খতিয়ে দেখার জন্য সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হবে।

এ বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আইনের কোন বিষয় নিয়ে ছাড় দেয়া ঠিক হবেনা। এবার যদি আমরা হে'রে যাই, তাহলে হে'রে যাবে পুরো বাংলাদেশ।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম স্বী'কার করেন যে সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বিভিন্ন সময় টেলিভিশনে নানা মন্তব্য এবং দাবি তোলার কারণে শ্রমিকদের কেউ-কেউ তাঁর উপর ক্ষু'ব্ধ হতে পারে।

এ ব্যাপারে তাজুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আইন পাশ করব সরকার। উনি (ইলিয়াস কাঞ্চন) যেখানে বলে আইন পাশ করলো না কেন, আরো আইন হওয়া উচিত– এগুলো অনেক সময় শ্রমিকরা মনে হয় শোনে, সেজন্য আমার মনে হয় একটা উ'ত্তেজ'না আই'সা পড়ে।’

এ সময় এই শ্রমিক নেতা দাবি করেন, ইলিয়াস কাঞ্চন তাদের প্র'তিপ'ক্ষ নয়। তিনি বলেন, লাখ-লাখ শ্রমিকের ভেতরে উ'ত্তেজ'না হইতেই পারে। শ্রমিকের ব্যাপারটা ক'ন্ট্রো'ল করা অনেক ক'ষ্ট কর।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে