রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২০, ০৮:৪৩:০২

'গাঁ'জা খেতেন সুশান্ত ও অশরীরীর উ'পদ্র'ব ছিল', গৃহকর্মচারীর দীর্ঘ স্বী'কারো'ক্তিতে নতুন রহ'স্য

'গাঁ'জা খেতেন সুশান্ত ও অশরীরীর উ'পদ্র'ব ছিল', গৃহকর্মচারীর দীর্ঘ স্বী'কারো'ক্তিতে নতুন রহ'স্য

বিনোদন ডেস্ক : মাঝেমধ্যেই নাকি গাঁ'জা খেতেন সুশান্ত। আগের ফ্ল্যা'টে রাত বাড়লেই নাকি শুরু হতো অশরী'রীর উপদ্র'ব, গলায় সবুজ র'ঙের কু'র্তায় ফাঁ'স লাগানো সুশান্তের নি'থর দে'হ তিনিই নাকি নিজে হাতে নামিয়ে এনেছিলেন... মুম্বাই পুলিশকে দেওয়া তিন পাতার বয়ানে এমনই নানা অজা'না কথা বলেছেন সুশান্ত সিং রাজপুতের গৃহকর্মচারী নীরজ সিং।

সুশান্ত কা'ণ্ডে তিনি অন্যতম প্রধান প্রত্য'ক্ষদ'র্শী। এই মা'মলায় নী'রজের বয়ান যে খুবই গু'রু'ত্বপূর্ণ তা এক বাক্যে স্বী'কার করে নিয়েছেন সকলেই। ইতিমধ্যেই সিবিআই তিন বার ডে'কে পাঠিয়েছে নীরজকে। কী জানেন নীরজ? কী হয়েছিল সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃ'ত্যুর দিন? কেমন ছিলেন ব্যক্তি সুশান্ত? সুশান্তের বাড়ির পা'র্টিতে কাদের দেখা যেত? ভাইয়ের মৃ'তদেহ দেখে প্রথম কী বলেছিলেন সুশান্তের দিদি মিতু সিং?

'ইন্ডিয়া টুডে'র এক রিপো'র্ট থেকে জানা যাচ্ছে, মুম্বাই পুলিশকে দেওয়া বয়ানে নীরজ বলেছেন, ২০১৯-এর এপ্রিল মাসে তিনি সুশান্ত সিং রাজপুতের বাড়িতে কাজে ঢোকেন। কাজ বলতে খাবার পরিবেশন করা, ঘর প'রিষ্কার রাখা ইত্যাদি। কেপ্রি হাইটসের পালি মার্কেট আবাসনে তখন থাকতেন সুশান্ত। গত বছর ডিসেম্বরে ওই আবাসন থেকে বান্দ্রার এক আবাসনে চলে আসেন সুশান্ত।

নীরজের বয়ান অনুযায়ী, ''সুশান্ত স্যারের আগের ফ্ল্যাটে আমাদের ওয়াকি টকি দেওয়া হয়েছিল। স্যারের কিছু প্রয়োজন হলে ওয়াকির মাধ্যমেই কথা বলতাম আমরা। এক রাতে আমি ঘু'মোচ্ছিলাম। হ'ঠাৎই ওয়াকি থেকে একটা আওয়াজ এল, 'নীরজ লাইট বন্ধ কর'। আমি উ'ঠে স্যারের ঘরে গিয়ে দেখি তিনি অঘো'রে ঘুমো'চ্ছেন এবং ঘরের লা'ইটও বন্ধ। আমি কিছু বুঝে উঠতে না পেরে এসে শুয়ে পড়তে যাব ঠিক এমন সময়েই আবার, 'নীরজ, লাইট ব'ন্ধ কর।' 

সে রাতে আর নাকি ঘুম আসেনি নীরজের। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, গভীর রাতে ড্রা'মের আওয়াজ, লিফটের ওঠানামার শ'ব্দও নাকি পাওয়া যেত সেখানে। আর সেই কারণেই নাকি ফ্ল্যাট পরিবর্তন করেন সুশান্ত। নীরজের বয়ান থেকে জানা যাচ্ছে, গত বছর অক্টোবরে রিয়ার সঙ্গে ইউরোপ ঘুরতে গিয়েছিলেন সুশান্ত। সেখান থেকে ফেরার পর কিছু দিন রিয়ার মুম্বাইয়ের বাড়িতেও ছিলেন তিনি। দিওয়ালি পালন করেছিলেন সেখানেই। এর পরেই নিজের বাড়িতে ফিরে খুবই অসু'স্থ হয়ে পড়েন সুশান্ত। 

নীরজের কথায়, ''স্যার আবার রিয়া ম্যামের বাড়িতে থাকতে যান। স্যারের ম্যানেজার স্যামুয়েল আমায় জানায় স্যারকে নাকি হাসপাতালে ভ'র্তি করা হয়েছে।'' এর দেড় মাস পরেই নীরজকে বান্দ্রার ফ্ল্যাটে শিফট করার কথা জানান স্যামুয়েল। নীরজের কথায়, সুশান্ত আগের থেকে সু'স্থ হন ঠিকই কিন্তু সারা দিন বাড়িতেই থাকতেন। শুধুমাত্র জিমের জন্যই বাইরে বের হতেন তিনি।

সুশান্ত বান্দ্রার ফ্ল্যাটে চলে যাওয়ার পর রিয়াও তার সঙ্গে এসে থাকতে শুরু করেন। নীরজ জানিয়েছেন, রিয়া মাঝে মধ্যে এক দু'দিনের জন্য নিজের বাড়িতেও যেতেন। তার বাবা-মাও মাঝে মধ্যেই ওই ফ্ল্যাটে আসতেন। সকালে উঠেই রিয়া-সুশান্ত ব্ল্যাক কফি খেতেন। এর পর ছাদে গিয়ে ওয়ার্ক আউট। এরপর সুশান্তের বাড়ির অন্য আর এক গৃহকর্মচারী রিয়ার কাছ থেকে রান্নার রুটিন জেনে নিয়ে সেই মতো কাজ করতেন। মাঝে মধ্যেই পার্টি হতো সেখানে। 

নীরজের দাবি, পার্টিতে ম'দ্যপা'ন, গাঁ'জা সেবনও চলত। সুশান্তও নাকি গাঁ'জা খেতেন মাঝে মধ্যে। নীরজ এও জানান, ঘরের কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না সে বিষয়ে রিয়া ক'ড়া হলেও সুশান্ত ছিলেন মাটির মানুষ। রে'গে যেতেন না। জুন মাসের ৮ তারিখ। সুশান্তের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে এসে নিজের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন রিয়া। ঠি'ক কী হয়েছিল সে দিন? 

নীরজ বলছেন, ''আমরা স্যার-ম্যাডামকে খাবার পরিবেশনের প্র'স্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময়ে রিয়া ম্যাডাম ব্যাগ গু'ছিয়ে দিতে বলেন। খুব রে'গে ছিলেন তিনি। এরপরে না খে'য়েই বেরিয়ে যান রিয়া। তার ভাই শৌভিকও বেরিয়ে যান। সুশান্ত স্যার একা ঘরে বসে ছিলেন। রিয়া চলে যাওয়ার পরেই সুশান্তের দিদি মিতু আসেন।'' যদিও রিয়ার আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ''রে'গে গিয়ে নয়, দিদি আসবে বলে সুশান্তই রিয়াকে বলেছিলেন কয়েক দিন নিজের বাড়িতে গিয়ে থাকতে।''

জুন মাসের আট থেকে বারো তারিখ ভাইয়ের বাড়িতে ছিলেন মিতু। নীরজকে তিনি নাকি বলে গিয়েছিলেন, সুশান্তের খেয়াল রাখতে তিনি আবার আসবেন খুব তা'ড়াতা'ড়ি। এমনটা জানিয়েছেন নীরজ নিজেই। তার কথায়, ''মিতু দিদি যখন এলেন তখন দিদির সঙ্গেই এক টেবিলে বসে খাওয়া দাওয়া করতেন সুশান্ত। কিন্তু দিদি চলে যেতেই স্যার ছাদে যাচ্ছিলেন বার বার। আমায় বললেন, ঘরটা পরিষ্কার করে দিতে। আমি তাই করি।'' 

মৃ'ত্যুর ঠিক আগের দিন সকাল সাতটা নাগাদ ঘুম থেকে ওঠেন সুশান্ত, জানান নীরজ। তিনি আরও জানান, ''সকাল ৯ নাগাদ আমি ফিরে আসি। খিচুড়ি বানাই। স্যার কে দিই। ঘর থেকে বেরিয়ে স্যার ছাদে চলে যান। এরপর ফিরে আসেন। কিন্তু খাবার ছুঁ'য়েও দেখেননি। আমের জুস খেয়ে ঘুমোতে চলে যান।''

১৪ জুন মা'রা যান সুশান্ত। ওই দিন কী হয়েছিল? নীরজ পুলিশকে জানান, ''ওই দিন সকালে সাড়ে ছ'টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে স্যারের পোষ্যকে নিয়ে বাইরে যায়। ৮টা নাগাদ ফিরে ঘর পরি'ষ্কার করছিলাম। স্যার ঠান্ডা পানি খেতে চান। স্যারের ঠান্ডা পানি খাওয়া বা'রণ ছিল। রিয়া ম্যাডাম বা'রণ করেছিলেন আমায় দিতে। আমি তাও অল্প ঠান্ডা পানি দিই। স্যার সেই পানি খান।''

এর পর সুশান্তের অপর গৃহকর্মচারী কেশব কলা, ডাবের পানি এবং জুস নিয়ে সুশান্তের ঘরে যান বলে জানান নীরজ। সময় সাড়ে ন'টা। নীরজের দাবি, সুশান্ত কী খাবেন তা জানার জন্য কেশব সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তার ঘরের দরজা ধা'ক্কা দেন। কিন্তু তা ভেতর থেকে ব'ন্ধ ছিল। কেশব ভাবেন সুশান্ত ঘুমাচ্ছেন। কিন্তু এরও বেশ কিছুক্ষণ অবধি কোনও সাড়া না পাওয়ায় ডেকে পা'ঠানো হয় সিদ্ধার্থ পিঠানিকে। 

নীরজ বলেন, ''সিদ্ধার্থ ভাইয়াও ডা'কাডা'কি করে কোনও সা'ড়া না পাওয়ায় ফোন করেন স্যারকে। ফোন বেজে যায়। এরপরেই ফোন যায় মিতু দিদির কাছে। মিতু দিদি বলেন তিনি দ্রু'ত আসছেন।'' নীরজের দাবি, সুশান্তের ঘরের চাবি কোথায় তারা জানতেন না বলেই ডা'কা হয় চাবিওয়ালাকে। চাবিওয়ালা এসে দরজা ভা'ঙেন।

নীরজ জানান, ''সিদ্ধার্থ স্যর প্রথম ঘরে ঢোকেন। অন্ধকার ঘর। খুব ঠা'ন্ডা। কেশব লাইট জ্বা'লায়। দেখি সবুজ রঙের কুর্তায় ফাঁ'স লাগিয়ে সিলিং থেকে ঝু'লছে স্যারের নি'থ'র দেহ। জানলার দিকে মুখ। এর পরেই নীতু দিদিকে ফোন করেন সিদ্ধার্থ। তিনি বলেন, স্যারকে নীচে নামাতে। আমি ছু'রি নিয়ে আসি। সবাই মিলে ধ'রাধ'রি করে স্যারকে শো'য়াই। আর এরই মধ্যে মিতু দিদি ঘরে ঢোকে। ঢু'কেই কাঁ'দতে কাঁ'দতে বলতে থাকে, ''গুলশন (সুশান্তের ডাক নাম) ইয়ে তুনে ক্যয়া কিয়া?''

নীরজ আরও জানান, ''কয়েক দিন আগেই স্যারকে সিগারেটের মধ্যে গাঁ'জা রোল করে দিয়েছিলাম আমি। সেই সিগারেটের কেসের কাছে গিয়ে দেখি কেস ফাঁ'কা।'' মুম্বাই পুলিশের পর ইতিমধ্যেই নীরজের বয়ান রেক'র্ড করেছে সিবিআই। সেখানে নীরজ নতুন কিছু বলেছেন কি না, তা নিয়ে বাড়ছে কৌ'তূহ'ল। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে