মৃত্যুশয্যায় দিতির দুই ইচ্ছা!
বিনোদন ডেস্ক : মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়লেও ভেঙে পড়েননি ঢাকাই চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী পারভিন সুলতানা দিতি। মাথার চুল খসে পড়লেও সেগুলো নিজেই সংগ্রহ করে রাখছেন তিনি। তবে সেই চুলগুলো দিতির দুই ইচ্ছা। চুলগুলো জমিয়ে দুটো পরচুলা বানাবেন তিনি। একটা তার এক বন্ধুর জন্য, যার টাক পড়ে যাচ্ছে এবং আরেকটা তার নিজের জন্য।
ভারতের মাদ্রাজের এক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন পারভিন সুলতানা দিতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ভক্ত, শুভানুধ্যায়ীদের কাছে খবর পৌঁছে দিচ্ছেন দিতি কন্যা লামিয়া চৌধুরী।
৪ জানুয়ারি সোমবার দিতির একটি ছবি পোস্ট করেন লামিয়া, সেখানে দেখা যায় কেমোথেরাপির কারণে পড়ে যাওয়া চুলগুলো জমিয়ে রাখছেন দিতি।
ছবিটির সঙ্গে লামিয়া লিখেন, ‘তার যখন চুল পড়া শুরু হলো, তিনি একটি থলেতে নিজের চুল জমানো শুরু করলেন। এটা নিয়ে তিনি মন খারাপ করেননি’। চিকিৎসকরা খুব অবাক হয়েছিলেন। তারা এ বিষয়ে তাকে কয়েকবার সতর্ক করেছিলেন। বিষয়টি তারা খুব সংবেদনশীলতার সঙ্গে উপস্থাপন করেছিলেন।
তিনি একজন অভিনেত্রী। দিন শেষে তার চেহারাই তার কাছে সবকিছু। কিন্তু কোনো পাত্তাই দেননি তিনি। এতো গেল কেবল চুল। আসবে আর যাবে। তিনি বললেন, চুলগুলো জমিয়ে দুটো পরচুলা বানাবেন। একটা তার এক বন্ধুর জন্য, যার টাক পড়ে যাচ্ছে এবং আরেকটা তার জন্য।
তিনি আমাদের গল্প শুনিয়েছিলেন যে, আগেও তিনি চুল হারিয়েছেন। একবার শুটিং ফ্যানের সঙ্গে নাকি তার চুল আটকে গিয়েছিল। সব চুল কেটে ফেলতে হয়েছিল। আরেকবার কেমিকেলের কারণে তার চুল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সে সয়য় তিনি চুল ছেটে ফেলেন।
এসব কারণে তিনি মন খারাপ করেননি। সময় নষ্ট করেননি। স্রষ্টার প্রকৃত যোদ্ধার মতো সামনে এগিয়ে গেছেন তিনি। যেকোনো দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে একদম তৈরি, কোনো অভিযোগ নেই তার।
তিনি একবারও হোঁচট খাননি, একবারও ভাগ্যকে প্রশ্ন করেননি। নিজের জন্য কখনো দুঃখবোধ করেননি। তার আস্থা আমাকে বিমোহিত করেছে, উৎসাহিত করেছে আবার বিরক্তও করেছে।
কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি, তার কষ্ট পেতে দেখে আমার রাগ হয়েছে। মনে হয়েছে তিনি বিষয়টা পুরোপুরি বুঝতে পারছেন না। তখন আমার আরো রাগ হয়েছে। কিন্তু তিনি যে সারাজীবন এমনই ছিলেন। এই স্পৃহা কোনোদিন মরবে না।
ভারতের মাদ্রাজে যাওয়ার পর তার মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে। ডিসেম্বরে পরপর দুটি অস্ত্রোপচারের পর অবস্থার আরো অবনতি হয়।
৪ জানুয়ারি লামিয়া ফেসবুকে লিখেন, ‘তেজষ্ক্রিয় রশ্মির প্রভাবে পারকিনসন্স রোগ বাসা বেঁধেছে দিতির শরীরে।’
৫ জানুয়ারি,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম