বিনোদন ডেস্ক : কাজী হায়াতের ফোন বেজেই চলছে। কেউ ধরছেন না। কয়েক দফা চেষ্টার পর মেয়ে মিমের নম্বরে কল করা হয়। কয়েকবার রিং হতেই তিনি ধরলেন। পরিচয় দিয়ে বাবার কথা জানতেই হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। কোনো কথা বলতে পারছিলেন না। কাঁদতে কাঁদতে বাবার জন্য দেশবাসীর কাছে চাইলেন দোয়া।
ফোনের লাইন কেটে যাওয়ার আগে বাবা সম্পর্কে মেয়ে কাজী আফরোজা মিম এটুকু বলে রাখলেন, আজ বাবার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হয়েছে। তাই দ্রুত হাসপাতালে সাধারণ বেড থেকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। ''ছোটবেলা থেকে এই আব্বা-আম্মাই আমাদের সুন্দরভাবে গড়ে তুলেছেন। তারা খুব সাধারণ ও সাদামাটা জীবন যাপন করে আমাদের সব চাওয়া–পাওয়া পূরণ করেছেন। এই আব্বাটা কখন যে আমার ছেলে হয়ে গেছে, তা টেরই পাইনি। আমার সেই আব্বাটা দুদিন ধরে আইসিইউতে। আমার কিচ্ছু ভালো লাগছে না। কেউ তো আমাকে একবার বলেন, আমার আব্বার কিছুই হয়নি।''
বিলাপ করতে করতে এভাবেই বাবা দেশবরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনয়শিল্পী কাজী হায়াতের সর্বশেষ অবস্থার বর্ণনা করছিলেন তারই মেয়ে কাজী আফরোজা মিম। কাজী আফরোজা মিম ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সেরেছেন। বর্তমানে দেশের নামকরা একটি প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। আজ সোমবার সকাল ও দুপুরে দুই দফায় কথা হয় কাজী আফরোজা মিমের সঙ্গে।
তিনি জানালেন, গতকাল তার বাবাকে হাসপাতালের কেবিন থেকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনায় আক্রান্ত মা রোমিসা হায়াৎ সুস্থ হলেও এখনো তিনি হাসপাতালেই ভর্তি। মিম বলেন, ''করোনার শুরু থেকে আব্বাকে ঘরের বাইরে বের হতে দিইনি। এমনিতে আমার আব্বার অনেক ধরনের শারীরিক জটিলতা, তাই ঘরের বাইরে বের হতে দিতে ভয় লাগত। আমার সেই আব্বাকে করোনা কীভাবে সংক্রমণ করল ভাবতেই পারছি না। হাসপাতালে আব্বাকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে কিছুই ভালো লাগছে না। সবাই আমার আব্বার জন্য দোয়া করবেন।''
চলচ্চিত্র পরিচালক বাবা কাজী হায়াতের কথা বলতে বলতে কেঁদেই চলছেন মেয়ে কাজী আফরোজা মিম। তিনি বললেন, ''ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, ব্লাড প্রেশার, কিডনিসহ নানা জটিলতায় আক্রান্ত বাবা। ফুসফুসেও সংক্রমণ হয়েছে। অক্সিজেন সাচুরেশন উঠানামা করছে।'' করোনায় আক্রান্ত বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াৎকে ১৫ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। একই হাসপাতালে তার স্ত্রীকেও ভর্তি করানো হয়। ৮ মার্চ দুজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তারা দুজন বাসাতেই ছিলেন।