বৃহস্পতিবার, ০৫ আগস্ট, ২০২১, ০৬:৩২:৫৮

খুলনার মাদ্রাসাপড়ুয়া নজরুল রাজ যেভাবে হয়ে উঠেন অঢেল সম্পদের মালিক

খুলনার মাদ্রাসাপড়ুয়া নজরুল রাজ যেভাবে হয়ে উঠেন অঢেল সম্পদের মালিক

বিনোদন ডেস্ক : পরীমনিকে চিত্রজগতে নিয়ে আসেন রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার কথিত চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ। সিনেমায় নাম লেখানোর আগে দীর্ঘদিন রাজের কাছেই থাকতেন পরীমনি। পিরোজপুরের এক প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে ঢাকায় এসে রাজের কাছেই থাকেন পরীমনি। গ্ল্যামার জগতে পরীমনির উত্থানে রাজের ভূমিকা ছিল প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ।

গ্রেফতার রাজ ১৯৮৯ সালে খুলনার একটি মাদ্রাসায় দাখিল সম্পন্ন করেছেন। যদিও তার দাবি, ঢাকায় এসে তিনি গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। রাজ ঢাকায় এসে বিভিন্ন ব্যবসাবাণিজ্য শুরু করেন। ঠিকাদারির কাজও করেন রাজ। এরপর মিডিয়া জগতের ব্যবসায় তার অনুপ্রবেশ ঘটে। বৃহস্পতিবার বিকেলে র‍্যাব সদরদফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়েন নজরুল ইসলাম রাজ। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ উদ্দেশ্যপ্রণদিতভাবে নিজের অবস্থানের অপব্যবহার করেছেন। রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে অনৈতিক কাজ করে বিপুল অংকের অর্থের মালিক হয়েছেন তিনি।

রাজের উত্থানের পেছনের ইতিহাস জানাতে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, রাজ গ্রেফতারকৃত মিশু হাসান ও জিসানের সহযোগিতায় ১০-১২জন তরুণী নিয়ে একটি অপরাধচক্র তৈরি করে। এই চক্রটি গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ডিজে পার্টির আয়োজন করত। এসব পার্টিতে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রম সংঘটিত হতো। এসব পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের থেকে বিভিন্নভাবে মোটা অংকের অর্থ সংগ্রহ করা হতো। এরইমাধ্যমে রাজসহ এই চক্রের সদস্যরা রাতারাতি বিপুল পরিমান অর্থের মালিক বনে যান।  

গ্রেফতারকৃত রাজ জানায়, রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে এসব অনৈতিক কাজ ও ডিজে পার্টি দিয়ে মাদক ব্যবসার মাধ্যমে যেসব অর্থ উপার্জন করতেন তা নিজের আমদানি, ঠিকাদারি, বালুভরাটসহ বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নি করতেন। তার এসব ব্যবসায় কয়েকজন অর্থের যোগানদাতার নামও বলেছেন রাজ। তার সেসব ডিজে পার্টিতে কারা অংশ গ্রহণ করত, কারা অর্থ সরবরাহ করত যে তথ্য পেয়েছি আমরা। আসামি কর্তৃক দেওয়া তথ্যগুলো তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীর গডফাদার হিসাবে পরিচিত নজরুল রাজ প্রথমে নামে-বেনামে বিভিন্ন নাটক, সিনেমায় প্রযোজনা করতেন। এটি ২০১৪ সালের ঘটনা। ২০১৮ সালে রাজ তার রাজ মাল্টিমিডিয়া প্রতিষ্ঠা করে। তার এই প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাতে পরীমনিকাণ্ডে এই প্রতিষ্ঠানের যোগসূত্রিতা পাওয়া গেছে।

এর আগে র‌্যাব সূত্র জানিয়েছিল, নজরুল রাজ একেক সময় একেক পরিচয়ে চলাফেরা করেন। কখনও চিত্রপরিচালক, কখনও ব্যবসায়ী আবার কখনও রাজনীতিবিদ। প্রতারণার মাধ্যমে তিনি অঢেল টাকার মালিক বনে গেছেন। বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৪টি হিসাবে ৯ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। অবশ্য ব্যাংকের বাইরেও তার হাতে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা রয়েছে। ঠিকাদারি কাজের ডন হিসাবে পরিচিত জিকে শামীমের সঙ্গেও সখ্য গড়ে ওঠে রাহের। সম্প্রতি তিনি জিকে শামীমকে কারাগারে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে তদবির করছিলেন। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে