বিনোদন ডেস্ক : দেশের নিত্য পরিচালক আজিজ রেজা। যিনি দীর্ঘ ৪১ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি অমিত হাসান, নাঈম, ওমর সানি, শাকিব খানের মত অভিনেতা বানিয়েছেন। একান্ত এক সাক্ষাৎকারে আজিজ রেজা বলেন, আমি ৪১ বছর এই চলচ্চিত্রে কাজ করছি। আমার হাতে তৈরি হয়েছে, অমিত হাসান, নাঈম, ওমর সানি, শাকিব খান, নিপুণ, ইরিনের মত অভিনয় শিল্পীদের। আমার কষ্ট লাগে তখনই, যখন শুনি চলচ্চিত্রের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে। আজ শুনলাম রোজিনা আপা পদত্যাগ করেছেন। আহ্, খুবই দুঃখ জনক কথা।
এ সময় জায়েদ খান প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, জায়েদ খানকে বলতে শুনি, করোনার সময় অমুকের লাশ কাঁধে নিয়েছি। অমুকের পাশে দাঁড়িয়েছি। অমুককে আর্থিক সহযোগীতা করেছি। জায়েদের কাছে আমার প্রশ্ন, জায়েদ খান আপনি কোথায় ছিলেন আমার ভাতিজা নিত্য পরিচালক কাশমীর রেজা যখন মারা যায়? মুখে অনেক কিছু বলা যায়। মিডিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য মিথ্যা বলা সহজ, বাস্তবতা অনেক কঠিন।
এ সময় ভাতিজা কাশমীর রেজার মৃত্যুর কথা স্বরণ করে আজিজ রেজা বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর ২১ সালে আমার ভাতিজা মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যায়। তার স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে। তার মৃত্যুর সময় জায়েদ খানকে পাশে পায়নি। এখন পর্যন্ত জায়েদ খান আমাদেরকে একটা ফোন করেও শান্তনা দেন নি। জায়েদ যখন ১৮৪ জন শিল্পীকে বাতিলের চিঠি পাঠিয়েছিলো তার মধ্যে আমার কাশমীরও ছিল। এই চিঠি হাতে পাবার পর ভেঙে পড়ে সে।
আজিজ রেজা বলেন, শিল্পী সমিতির নোটিশ পাবার পর কাশমীরের বউ তার সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায় এবং ওই সময় তাকে বলে যায়, তুমি খারাপ বলে আজ শিল্পী সমিতি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে কাশমীর মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। কিছুদিন পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাশমীর বলতো আমাকে কেন শিল্পী সমিতি থেকে বাদ দেয়া হলো। আজ আমার ভাতিজা পৃথিবীতে নেই।
তিনি বলেন, জায়েদ খান নায়িকা কবরীর লাশ কাঁধে নিয়েছেন, কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রকিশোরের লাশ নিয়েছেন, খ্যাতিমান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের লাশ নিয়েছেন। কেন জানেন? তারা বড় মাপের শিল্পী। তাদের লাশ কাঁধে নিলে মিডিয়া দেখবে। আমার ভাজিতার লাশ নিলে তো আর কেউ দেখবে না। শুধু কাশমীর না, এমন অনেকের খোঁজ জায়েদ খান রাখেন না।
আজিজ রেজা আরও বলেন, বিগত সময় নায়িকা মৌসুমির সাপোর্ট করেছিল বলে ১৮৪ জনকে বাদের নোটিশ করেছিল জায়েদ খান। তাহলে এখন কেন ওমর সানী-মৌসুমী জায়েদের কাছে যায়? এই চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে শেষ করে দিয়েছে কিছু মানুষ। আমাদের আলমগীর ভাই, ইলিয়াস কাঞ্চনের মত বড় মানুষ যখন সিনেমার দায়িত্ব নেন তখন তো আর কোন কথা থাকতে পারে না। এই চেয়ার নিয়ে কেন এত ক্ষমতার ব্যবহার? কি আছে এই চেয়ারে?
এ সময় নিপুণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিপুণ খুবই ভালো মনের মানুষ। সব সময় গোপনে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমদের খাবারসহ শিল্পীদের পাশে থাকে। ডিপজল ভাইও খুব ভালো মানুষ। তিনি কোটি টাকা দান করেন মানুষের জন্য। আমি বলবো এই সব মানুষ যদি শিল্পী সমিতির পাশে দাঁড়ায় আবার সেই সোনালী দিন ফিরে আসবে।