রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২, ০৬:৩১:১৫

মৃত্যুর কাছে হেরে গেল ভালোবাসা, সর্বহারা হলেন সব্যসাচী!

মৃত্যুর কাছে হেরে গেল ভালোবাসা, সর্বহারা হলেন সব্যসাচী!

বিনোদন ডেস্ক: মনের জোরে লড়াই করে যাচ্ছিলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। আর তার পাশে দাঁড়িয়ে সাহস যোগাচ্ছিলেন সব্যসাচী চৌধুরী। তিনিও কিন্তু লাগাতার যুদ্ধ করে গিয়েছেন। কিন্তু, এবারে আর ফিরিয়ে আনতে পারলেন না কাছের মানুষকে। 

আজ সর্বহারা হলেন সব্যসাচীও। গত ১ নভেম্বর ঐন্দ্রিলার ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে তার পাশে ছিলেন সব্যসাচী। হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালেই থাকছিলেন। শেষ পর্যন্ত ছিলেন। তার লড়াইকে যখন কুর্নিশ জানাচ্ছে সবাই, সেই সময় বলেছিলেন, "আমার মায়ের কিছু হলে বাবা যেটা করত, আমিও সেটাই করছি।"

তাকে আলাদা করে ক্রেডিট দেওয়ার দরকার নেই বলে জানিয়েছিলেন তিনি। বুধবার ঐন্দ্রিলা শর্মার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার পর থেকেই বিমর্ষ হয়ে গিয়েছিলেন অভিনেতা। একটা একটা করে হার্ট বিট কমে যাচ্ছিল। আর তার বুক ভেঙে যাচ্ছিল অসহায়তায়। তবু শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গিয়েছেন তিনি। 

কাছের বন্ধুর চোখ দু'টো ডাই লেটেড হয়ে গিয়েছে। হাত অসাড়। মুখ, পা ফুলে যাচ্ছে। এসব দেখে বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারেননি তিনি। এমন সময় নাকি নড়ে উঠেছিল ঐন্দ্রিলার হাত। মায়ার টান উপেক্ষা করতে পারেননি সব্যসাচী। ছুটে গিয়েছিলেন উপরে। শেষ পর্যন্ত মিউজিক থেরাপি চালিয়ে গিয়েছেন নিজ উদ্যোগে। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি।

শনিবার বিকেলে দ্বিতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার পর ফেসবুক থেকে ঐন্দ্রিলা শর্মা সম্পর্কিত যাবতীয় পোস্ট ডিলিট করে দেন সব্যসাচী চৌধুরী। এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, 'ঐন্দ্রিলা কি আর নেই?' যদিও সেই সময় ছিলেন অভিনেত্রী। রাতে ১০ বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তার। শত চেষ্টা সত্ত্বেও আর ফেরানো সম্ভব হয়নি ঐন্দ্রিলাকে।

সব্যসাচীকে সর্বহারা করে চলে গেলেন তিনি। ২০১৭ সালে কালার্স বাংলার ঝুমুর ধারাবাহিকের সেটে দেখা হয়েছিল দুই অভিনেতার। ক্যানসারকে হারিয়ে তখন সদ্য বিনোদনের জগতে পা রেখেছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। এই সিরিয়ালের হাত ধরেই ডেবিউ করেন তিনি। সব্যসাচী ছিলেন তার বিপরীতে। 

দুই অভিনেতার অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রি মুগ্ধ করেছিল দর্শককে। অফস্ক্রিন তাদের বন্ধুত্বও গাঢ় হয়ে উঠেছিল। ২০২১ সালে যখন ঐন্দ্রিলা শর্মা ফের ক্যানসারে আ'ক্রা'ন্ত হলেন, সেই সময় তার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন সব্যসাচী। গোটা লড়াইয়ে তার সহযো'দ্ধা ছিলেন তিনি। 

বন্ধুকে খাইয়ে দিয়েছেন। গল্প পড়ে শুনিয়েছেন। ছোট ছোট ইচ্ছেগুলো পূরণ করেছেন। কঠিন মুহূর্তে তার অবলম্বন হয়ে উঠেছেন। যা দেখে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, "এভাবেও ভালোবাসা যায়?" মৃত্যু এবং ঐন্দ্রিলার মাঝে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অভিনেতা। তবে মৃত্যুর কাছে হেরে গেল ভালোবাসা, সর্বহারা হলেন সব্যসাচী।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে