উৎসা হাজরা: ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়ালের জবা থেকে ‘নিম ফুলের মধু’ সিরিয়ালের পর্ণা, অভিনেত্রীর পল্লবী শর্মার সব চরিত্রেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ২০১৬ সালে শুরু হয়েছিল ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়াল। এই সিরিয়াল জবা চরিত্রে তুমুল জনপ্রিয়তা পান তিনি। টলিপাড়ায় যাত্রাটা কেমন ছিল?
পল্লবী বলেন, দুই বছর হয়ে গেল। আসলে এই বিরতিটার প্রয়োজন ছিল। কোনও সিরিয়াল শুরু হলে তখন দিনের পুরো সময়টাই সেখানে দিতে হয়। মাসে একটা দিন ছুটি পাওয়া যায়। নিজের জন্য আর কোনও সময় থাকে না। তাই এই দু’বছর শুধুই নিজেকে সময় দিয়েছি। এই কয়েক দিনে নিজের শখগুলো মন ভরে পূরণ করেছি।
তিনি বলেন, কলেজে পড়ার সময় ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়াল শুরু হয়। এই সিরিয়াল শেষ হওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল বিরতিটা খুব জরুরি। দর্শকের ‘জবা’ চরিত্রটা ভুলে যাওয়া প্রয়োজন। তবে যতক্ষণ না নতুন চরিত্রে সামনে আসবো, ততদিন তো জবাই থেকে যাব। তাই পর্ণা আসার পর এখন দর্শক জবার পরিবর্তে পর্ণা বলে সম্মোধন করা শুরু করেছেন।
ছোটবেলা খুব একটা সহজ ছিল না জানিয়ে পল্লবী বলেন, আমার ছোটবেলা মোটেই সহজ ছিল না। আমি তখন দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তখন মা-কে হারাই। ব্রেন টিউমর হয়েছিল। বাবার পক্ষে আমায় একা বড় করা সম্ভব ছিল না। বাবা ব্যবসার কাজে বাইরে থাকতেন। দাদাও বাবার সঙ্গে সেই ব্যবসায়ই যুক্ত হয়। তাই পিসির বাড়িতেই আমি থাকতাম।
তিনি বলেন, যখন দশম শ্রেণিতে পড়ি মাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক আগের দিন বাবা মারা যান। আচমকাই হার্ট অ্যাটাক হয়। দেখতাম, সবার মা-বাবা পরীক্ষার সময় ডাবের জল খাওয়াচ্ছে, খাবার খাওয়াচ্ছে। আমি তখন হবিষ্যি খেতাম। সে এক অদ্ভুত সময় গিয়েছে। তবে ‘কে আপন কে পর’ করার পর আর আমায় ফিরে তাকাতে হয়নি।
জবা বলেন, পিসিও মারা গিয়েছেন দু-তিন বছর হল। যদিও পিসিও আমার অনেকটা অভাব পূরণ করেছেন। পিসিরও কোনও সন্তান ছিল না। তবুও মা-বাবার জায়গা তো কেউ পূরণ করতে পারে না। সেই জন্য কখনও কখনও মনে হয়, সেই অভাবটা এই জীবনে আর পূর্ণ হবে না।
পল্লবী বলেন, আমি এখনও সিঙ্গল। আসলে আমি খুব সহজে প্রেমে পড়ি না। তা বললে ভুল বলা হবে। প্রেমে পড়েছি। কিন্তু সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। কারণ সেই মানুষটা ভাল ছিল না। যখন প্রথম ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি তখন হয়েছিল। এখন আমি জীবনে শান্তি চাই। এমন এক জনকে চাই যাঁর মধ্যে নিজের বাবাকে খুঁজে পাব। সূত্র: আনন্দবাজার