বিনোদন ডেস্ক: ১৯৭৫ সাল, ন'ক'শাল আন্দোলনে উত্তাল পশ্চিমবাংলা। সেই সময়ই হঠাৎই একটা খু’ন আর হারিয়ে যান এক মহিলা, নাম কাবেরী। কী হল তার? কোথায় হারিয়ে গেলেন? এই গল্প নিয়ে কৌশিক গাঙ্গুলির আগামী ছবি ‘কাবেরী অন্তর্ধান’।
এই ছবিতেই একজন শিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী। সেই শিল্পীর একটা রাজনৈতিক দর্শন রয়েছে। একদিকে সে খ্যাপাটে পাগলাটে এক লোক। অন্যদিকে যে সময়ের গল্প বলা হচ্ছে সেই সময় নিয়ে কথা বলে চলেছে আর হাজারও রহস্য বয়ে চলেছে বুকের ভেতরে।
এ তো গেল চরিত্রের কথা! কিন্তু সেই সময়ে কেমন ছিল প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জীর জীবন। ছোট্ট প্রসেনজিতের জীবনের সত্তর দশকের অ'ভিঘা'ত কতটা ছিল? অদ্ভুত এক নি'রাপ'ত্তাহী'নতায় পরিবারসহ টালিগঞ্জের বাড়ি ছেড়ে চলে যান প্রসেনজিৎরা।
অভিনেতা বলেন, ‘আমি তখন অনেকটাই ছোট ছিলাম। সেই সময় কোনও রাডনৈতিক দর্শন ছিল না। পরবর্তীকালে অনেক পড়েছি, জেনেছি বিষয়টা নিয়ে। যেটা মনে আছে যে, তখন আমাদের বাড়ি ছিল টালিগঞ্জে। আমি, মা আর বোন থাকতাম। বাবাও থাকতেন কিন্তু কাজের সূত্রে বেশিরভাগ সময় বাবা থাকতেন মুম্বাইয়ে।’
প্রসেনজিৎ বলেন, ''অদ্ভুত এক নি'রাপ'ত্তাহীনতা থেকে আমরা বাড়ি বদলে ফেলি। টালিগঞ্জে তখন আমাদের বিশাল বাড়ি কিন্তু নি'রাপ'ত্তাহী'নতায় আমরা বাড়ি ফাঁকা করে দমদমে মামার বাড়ি চলে যাই। কিছু কিছু জিনিস মনে আছে। সন্ধ্যা হলেই বাড়িতে লাইট বন্ধ, মোমবাতির আলোয় পড়তে হত। চারিদিক থেকে গু'লি আর বো'মের আওয়াজ।''
বুম্বা দা বলেন, “মাঝে মাঝে আমার বোন অসুস্থ হয়ে পড়ত, আমি অসুস্থ হয়ে পড়তাম। আমাদের সমসাময়িক ভাই-বোনেরা অসুস্থ হয়ে যেত। আমাদের দিদিমার কাজ ছিল বিকেল বেলা গল্পের বই পড়া। তখন তো এতো মোবাইল ছিল না, টেলিভিশন ছিল না।”
প্রসেনজিৎ আরও বলেন, “আমরা যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ি সেই কারণে গল্পের বই থেকে গল্প পড়তেন। আমাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। যেহেতু আমরা সারাদিন ঘরের মধ্যে আটকে থাকতাম, তাই ঐ আওয়াজটা যাতে কানে না আসে।’
টলিউডের এই কিংবদন্তি বলেন, ‘মাঝে মাঝে অনুভব করতে পারতাম যে, মাঝে মাঝেই বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসছে। হয়তো খুব নিকটতম আত্মীয়র কিছু হয়েছে। আমার মনে আছে, সেই সময় আমার মাসির সঙ্গে একজনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। দুই পরিবারের মধ্যে কথা হয়ে গিয়েছিল। তাকে হঠাৎ একদিন পাওয়া যাচ্ছিল না।
প্রসেনজিৎ বলেন, সেই ঘটনা নিয়ে বাড়িতে বেশ উ'ত্তে'জনা ছিল। আমরা অতটা বুঝতে পারতাম না, কিন্তু অনুভব করতে পারতাম। পরবর্তীকালে শুনেছি যে, তাকে আর পাওয়াই যায়নি। ঐ বয়সে স্কুলে যাওয়াটা বন্ধ হয়ে গেল। সেটা বিশাল প্রভাব ফেলেছিল। এরকমই হালকা হালকা মনে আছে সেই সময়ের কথা।’