বৃহস্পতিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ১১:২৫:২৮

আমি ‘মনা’ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলাম : মাহফুজ আহমেদ

 আমি ‘মনা’ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলাম : মাহফুজ আহমেদ

বিনোদন ডেস্ক : শোবিজের জনপ্রিয় তারকা আপনি। হঠাৎ ব্রেক দেয়ার কারণ? আসলে আমার একঘেয়েমি ভাব চলে এসেছিল। গতানুগতিক কাজ থেকে আমি সব সময়ই দূরে থাকতে চাইতাম। কিন্তু একটা সময় আমার মনে হয়েছিল যা চাচ্ছি তা করতে পারছি না। সে কারণেই আড়ালে যাওয়া। অবশ্য ওই সময়টাকে আমি অন্যভাবে কাজে লাগিয়েছি।

আপনার অভিনীত সর্বশেষ ছবি কবে মুক্তি পেয়েছিল? ২০১৫ সালে ‘জিরো ডিগ্রি’ ছিল আমার অভিনীত সর্বশেষ ছবি। ওই ছবির শুটিং অবশ্য আরো আগে করা ছিল। ওই ছবির পর আর নাটকেও কাজ করা হয়নি।

‘প্রহেলিকা’ সিনেমায় যুক্ত হলেন কিভাবে? আমাকে বাধ্য করা হয়েছে অভিনয়ে ফিরতে। প্রশ্ন উঠতে পারে, কে বাধ্য করল? বাইরের কেউ নন, ব্যক্তি মাহফুজ অভিনেতা মাহফুজকে বাধ্য করেছে এই সিনেমায় অভিনয় করতে। প্রহেলিকার গল্প ও প্রতিটি চরিত্রই আমাকে মুগ্ধ করেছে। এই সিনেমার গল্পটি আমার কাছে আসে দুই বছর আগে। এরপর চিত্রনাট্যকার পান্থ শাহরিয়ারের সাথে এ নিয়ে একাধিকবার আলাপ-আলোচনার পর গল্পটি এমন এক জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়, যেখান থেকে কোনো অভিনেতার ফিরে আসা সম্ভব নয় বলে আমার মনে হয়।

নতুন করে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? ছোটবেলায় বার্ষিক পরীক্ষার আগের রাতে যেমন অনুভূতি হতো, ঠিক তেমন মনে হয়েছে। আমি আদৌ তৈরি কি না, শেষ পর্যন্ত পারব কি না? এ প্রশ্নটি নিজের মধ্যে ছিল। তবে সাঁতার একবার শিখলে তা তো আর ভুলে না মানুষ। আমি তো একজন অভিনয়শিল্পী। অভিজ্ঞতার কারণেই ভেতরের তোলপাড়টা লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। প্রথম দিন একটি শট দেই আর দেখি। কয়েকটি সিকুয়েন্স পরেই আমার আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। এরপর থেকে আমি শুধুই মনা।

আপনার চরিত্রটি নিয়ে বলবেন? আমি মনা চরিত্রে অভিনয় করেছি। সিনেমা মুক্তির আগে চরিত্রটি নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে এটুকু বলব, আমি ‘মনা’ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলাম। চরিত্রটি থেকে বের হওয়ার জন্য শুটিং শেষ করার পরদিনই দেশের বাইরে চলে যাই। আশা করছি সিনেমাটি মুক্তির পর আপনারাও বুঝতে পারবেন কেন আমাকে এমনটি করতে হয়েছিল।

বুবলীর সাথে কাজ করতে কেমন লেগেছে? ভালো লেগেছে। তবে একটু জড়তা ছিল আমার। এত দিন পর যে কারো সাথেই অভিনয়ে ফিরলে একটু জড়তা কাজ করত। সেটি বুবলীর জায়গায়, টুবলী থাকলেও হতো! তবে সেটি স্বল্প সময়ের জন্য।

বুবলীর সাথে কাজের বোঝাপড়াটা কেমন ছিল? অসাধারণ। শুধু একটি সিকুয়েন্সের কথা বলি। আমাদের দুজনের একটি লম্বা সিকুয়েন্স ছিল। প্রায় ছয় মিনিটের, ওয়ানটেক শট। ফলে আমি খুবই কনফিউজড ছিলাম বুবলীকে নিয়ে। কারণ আমার অ্যাক্টিংয়ের পর তার রিঅ্যাকশনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই সিকুয়েন্স শেষ করার পর আমি জাস্ট বিস্মিত। দারুণ অভিনয় করে বুবলী। তার সাথে কাজ করে আমি অনেক কিছু শিখেছি। নির্দ্বিধায় বলতে পারি বুবলী আমার অন্যতম পছন্দের কো-অ্যাক্টর।

একটি গানে আপনাকে সব সময় কানটুপি পরা দেখা গেছে। কারণ কী? শুধু গান নয়, সিনেমার পুরোটা সময় কানটুপি মাথায় ছিল। এটিই এই সিনেমার রহস্য। আমার ধারণা, সিনেমা শেষ হওয়ার দুই-চার মিনিট আগেও টুপির রহস্য কেউ বুঝতে পারবে না। এই টুইস্টটা এখন খুলতে চাচ্ছি না। পর্দাতেই দেখুক সবাই।

প্রহেলিকার কোন জায়গাটি ব্যতিক্রম মনে হয়েছে? দর্শক কেন প্রহেলিকা দেখবে বলে মনে করছেন? দর্শক গল্প দেখতে চায়। সেই চরিত্রগুলো দেখতে চায়, যেগুলো সে দেখেনি, ভাবেনি কিংবা দেখার পর মনে হয় এটি তো হতে পারে। ঠিক সেরকম একটি গল্পে নির্মাণ হয়েছে সিনেমাটি। সিনেমার একটি কমপ্লিট প্যাকেজ ‘প্রহেলিকা’। যারা একটি সম্পূর্ণ সিনেমা দেখতে চায়, তারা প্রহেলিকা দেখবে এটি আমার বিশ্বাস।

এখন থেকে অভিনয়ে নিয়মিত পাওয়া যাবে আপনাকে? আবার যদি ব্যক্তি মাহফুজ শিল্পী মাহফুজকে তাড়া করতে থাকে, তাহলে অবশ্যই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব। তবে সে রকম গল্প পেতে হবে।

ভালো গল্প কিভাবে বাছাই করেন আপনি? গল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমি প্রথমে চরিত্রগুলোকে গুরুত্ব দেই। যে চরিত্রগুলো থেকে সত্যিই কিছু শেখার থাকে, যেখানে নিজেকে ফুটিয়ে তোলার সাথে সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করা যায় সেটিকেই আমার কাছে সেরা গল্প মনে হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে