বিনোদন ডেস্ক: কলকাতায় বাংলাদেশ ফিল্ম উৎসবে যোগ দিতে এসে পকেটমারের কবলে বাংলাদেশের নামী অভিনেতা শরিফুল রাজ। অভিনেত্রী পরীমণির স্বামী। দুই বাংলায় যে নায়িকাকে নিয়ে চর্চার অন্ত নেই।
স্বামী শরিফুল রাজের সঙ্গে তার বিচ্ছেদের খবরেও নজর ছিল দুই বাংলার অনুরাগীদের। তবে কলকাতায় এসে দৃশ্যবদল! ফোন হারিয়ে দুঃসময়ে অন্যের ফোন থেকে স্ত্রীকে মেসেজ করলেন শরিফুল। কিন্তু ঠিক কী ঘটেছে?
নন্দন চত্বরে পরীমণির স্বামীর পকেট থেকে মোবাইল উধাও করে পালাল দুষ্কৃতী। এবার সেই দামি আইফোন মোবাইলের সন্ধান পেতে তোলপাড় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগে। এই ব্যাপারে রবিবার হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। নন্দন ও রবীন্দ্র সদন এলাকার প্রত্যেক সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
শনিবার থেকেই নন্দনে শুরু হয়েছে পঞ্চম বাংলাদেশ ফিল্ম উৎসব। তাতে যোগ দিতে আসেন দুই দেশেরই নামী অভিনেতা ও পরিচালকরা। বাংলাদেশের বিখ্যাত ছবিগুলি দেখতে নন্দনে জমে উঠেছে দুই দেশেরই মানুষের ভিড়। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার অভিনেতা ও পরিচালকদের সামনেও ভিড় করেন।
কিন্তু ওই উৎসাহী দর্শকদের মধ্যে যে পকেটমার ভিড় করেছে, তা বুঝতে পারেননি কেউ। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার নন্দনে এসে উপস্থিত হন অভিনেতা শরিফুল রাজ। গত কয়েক বছর ধরে তিনি বাংলাদেশের বহু বিখ্যাত ছবিতে অভিনয় করেছেন।
শনিবার তারই অভিনীত ছবি ‘পরান’ দেখানো হয় ফিল্ম উৎসবে। ওই ছবি শেষ হওয়ার পর নন্দন চত্বরেই একটি সাংবাদিক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে অংশ নেন দুই দেশের সাংবাদিকরাই। ওই সাংবাদিক বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা শরিফুল রাজ। সাংবাদিক বৈঠকের পর অভিনেতাকে ঘিরে তার গুণমুগ্ধদের ভিড় সৃষ্টি হয়।
এরপর অভিনেতা নন্দন চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময়ই সঙ্গে থাকা একটি মোবাইলে কোনও ফোন এসেছে কি না, তা দেখতে গিয়েই বুঝতে পারেন, পকেটে নেই আইফোন মোবাইল। তিনি দেখেন, নিজের পকেটে কিংবা ঘনিষ্ঠদের কারও কাছেই মোবাইলটি রাখা নেই।
উদগ্রীব হয়ে তাকে মোবাইলটি খুঁজতে দেখে নন্দনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা চলে আসেন। শরিফুল তাঁদের সবটা খুলে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে হেস্টিংস থানার কর্মকর্তারা এসে অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পৌঁছায় লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে।
গোয়েন্দাদের একটি টিমও হাজির হয় নন্দনে। মোবাইল চুরির তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু কোনওভাবে অভিনেতার কাছ থেকে মোবাইলটি পড়ে গিয়েছে, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। এদিন শরিফুল রাজ নিজেই উপস্থিত হন হেস্টিংস থানায়। তিনি পুলিশের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জমা দেন।
তারই ভিত্তিতে পুলিশ চুরির মামলা দায়ের করে। লালবাজারের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সিসিটিভির ফুটেজে অভিনেতাকে তার যে ‘গুণমুগ্ধ’রা ঘিরে ছিলেন, তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই ব্যক্তিদের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল পকেটমার।
ওই সময় নন্দন চত্বর থেকে কারা বেরিয়েছেন, তাদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যেই কোনও পরিচিত মোবাইল চোর ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। চুরির পর থেকে অভিনেতার মোবাইলটি বন্ধ হয়ে যায়। কেউ মোবাইল খুললেই সেদিকে নজর দিয়ে সেটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে কলকাতায় গিয়ে ফোন হারিয়ে দিশেহারা শরিফুল রাজ। স্ত্রীয়ের সঙ্গে এখন আপাতত দূরত্ব তৈরি হলেও পরদেশে ফোন খুঁইয়ে পরীমণির কথাই তার প্রথম মনে পড়ে। পরীমণির মন্তব্য, “এমনিতে খোঁজ নেয় না কিন্তু প্রয়োজন পড়লে জানায়।”