বিনোদন ডেস্ক: আশি-নব্বইয়ের দশকে বলিউডের পরিচিত অভিনেত্রী নীনা গুপ্ত। বিগত চার-পাঁচ বছর ধরেও তিনি সাহসী চরিত্রে অভিনয় করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বর্তমানে ক্যারিয়ারে প্রতিষ্ঠিত অবস্থানে থাকলেও শুরুর যাত্রাটা সহজ ছিল না নীনার জন্য।
২০২১ সালে আত্মজীবনী ‘সচ কাহুঁ তো’ প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। যেখানে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি পেশাগত জীবন নিয়েও লিখেছেন। সেখানেই উঠে এসেছে ‘কাস্টিং কাউচ’-এর কথা। নীনার দাবি, কাজের বিনিময়ে তাকে হোটেলে রাত কাটানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন এক প্রযোজক।
অভিনেত্রী তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের অভিজ্ঞতা মনে করে লেখেন, ‘আমি তখন পৃথ্বী থিয়েটারে পারফর্ম করছি। হঠাৎ এক প্রযোজকের ফোন কল আসে আমার কাছে। দক্ষিণী ফিল্মজগতের ওই প্রযোজক ফোন করে আমার সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি তখন থিয়েটারের কাছেই এক হোটেলে ছিলেন।
প্রযোজক নীনাকে জানান, কাজ নিয়ে আলোচনা করার জন্য হোটেলে গিয়ে দেখা করতে হবে। হোটেলটি থিয়েটারের কাছাকাছি হওয়ার কারণে অভিনেত্রীও দেখা করতে রাজি হয়ে যান।
হোটেলে পৌঁছনোর পর নীনা ভাবেন, লবিতে প্রযোজকের সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলোচনা সেরে নেবেন। কিন্তু এই আচরণে যদি কাজের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়, সেই ভয়ে তিনি প্রযোজকের রুমে চলে যান।
অভিনেত্রীর ভাষায়, হোটেলের যে রুমে প্রযোজক ছিলেন সেখানে যাওয়ার পর নানা বিষয়ে দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়। ছবিতে তাকে কোন চরিত্রের জন্য পছন্দ করা হয়েছে তা-ও প্রযোজককে জিজ্ঞাসা করেন তিনি।
যার উত্তরে প্রযোজক জানান, ছবিতে কোনও মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাবেন না নীনা। বরং নায়িকার বান্ধবীর চরিত্রে অভিনয় করতে হবে তাকে।
আলোচনা শেষে হোটেল রুম থেকে যখন নীনা বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন তাকে প্রযোজক জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি রাতে এখানে থাকবে না?’ যেটা শুনে রীতিমতো আঁতকে ওঠেন সে সময়ের নবাগত এই অভিনেত্রী।
নীনা তার বইয়ে লিখেছেন, ‘প্রযোজকের কথা শোনার পর আমার মনে হচ্ছিল, কেউ যেন আমার শরীরে এক বালতি বরফ মিশ্রিত পানি ঢেলে দিয়েছে। আমার সব রক্ত যেন শুকিয়ে গিয়েছিল তখন। আমি বুঝতে পারছিলাম না কী করব। কোনও রকম নিজেকে শান্ত করে হোটেল থেকে দৌড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম।’
নীনার কাছে ‘কাস্টিং কাউচ’-এর অভিজ্ঞতা যে কতটা ভয়ানক তা-ও উল্লেখ করেছেন অভিনেত্রী। তিনি লেখেন, ‘এই অভিজ্ঞতা সত্যিই খুব ভয়াবহ।’