বিনোদন ডেস্ক : ছোট থেকেই দারিদ্রের সঙ্গে সংগ্রাম করে বড় হয়েছেন। জীবনে প্রত্যাখ্যান এসেছে বারবার। তারপরও ভেঙে না পড়ে লড়াই করে গিয়েছেন। বছর কয়েক আগেও যাকে নিয়ে কোনো উন্মাদনা ছিল না, এখন সেই তিনিই বি-টাউনের অন্যতম নাম। বলা হচ্ছে বলিউডের জনপ্রিয় গায়িকা নেহা কক্কড়ের।
তার জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছানোর কাহিনি অনেকেরই অজানা। তবে নেহার কিছু সাক্ষাৎকার শুনলেই তার সংগ্রামের গল্প জানা যায়। সংসার চালাতে প্রতিদিন সকাল হলেই শিঙাড়া নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন নেহার বাবা। সেই টাকায় কোনো রকমে টেনেটুনে সংসার চলত তাদের।
মাত্র ৫০ টাকা আয় দিয়ে জীবন শুরু করেছিলেন নেহা। বয়স তখন মাত্র চার। সংসার-দুনিয়ার লড়াই বোঝার মতো ক্ষমতা ছিল না। তবুও ওই বয়সেই নেহা বুঝতে পেরেছিলেন বাবার কষ্ট।
চার বছর বয়স থেকেই গান গাওয়া শুরু নেহার। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গান গাইতেন ছোট্ট নেহা। সে সময় তার দৈনিক রোজগার ছিল মাত্র ৫০ টাকা। শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বিয়েবাড়ি, অন্নপ্রাশনেও গাইতে যেতেন নেহা।
১৬ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময়ই নেহা উপলব্ধি করে এভাবে জীবন কাটানো যাবে না। দিল্লি থেকে পাড়ি দেন মুম্বাইয়ে। ঠিক করেন, গানের জগতেই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন প্রথমেই ধাক্কা খায় ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ নামে এক জনপ্রিয় গানের প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে। অডিশন থেকেই বাদ পড়েন নেহা।
তবে থেমে যাননি কখনোই। নিজেকে প্রতিদিন তৈরি করেছেন। অপেক্ষায় ছিলেন শুধু সুযোগের। সেই সুযোগ আসে সঙ্গীত পরিচালক প্রীতমের হাত ধরে। সাইফ আলি খান, দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত ‘ককটেল’ সিনেমায় একটি গান গাওয়ার সুযোগ পান নেহা।
নেহার গাওয়া ‘সেকেন্ড হ্যান্ড জওয়ানি...’ নিমেষে মানুষের মনে দাগ কেটে ফেলে। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর এক সঙ্গীত পরিচালক তার দরজায় টোকা দিয়েছেন। নেহার ঝুলিতে হিট গানের সংখ্যা নেহাত কম নয়। মূলত তার গাওয়া ‘পার্টি সং’ বেশি জনপ্রিয়। নেহার ‘ব্লু হ্যায় পানি পানি’ হোক বা ‘আয়াও রাজা’ কিংবা ‘কালা চশমা’— যে কোনও পার্টিতে এই সব গান ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চলে।
যে ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ থেকে একদিন প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন, সেই শোয়েই এখন বিচারক নেহা। নেহার জীবন পাল্টে গিয়েছে। ৫০ টাকা রোজগার দিয়ে শুরু করা নেহা এখন কোটিপতি। এক কামরার ঘরে বড় হওয়া নেহা এখন থাকেন দেড় কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে। গাড়ি, বাড়ি— কী নেই এখন তার। এখন নেহার সম্পত্তির পরিমাণ ১০৪ কোটি টাকা।
২০২০ সালে নতুন জীবনে পা দিয়েছেন নেহা। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে নেহা তার জীবনের গল্প শেয়ার করে নিয়েছেন। কীভাবে ধীরে ধীরে নিজের স্বপ্ন তিনি বুনেছেন, তা বলেছেন।