বিনোদন ডেস্ক : বর্তমান সময়ের টক অব দ্য কান্ট্রি ছাগলকাণ্ড। ১৫ লাখ টাকার ছাগল নিয়ে এখনও চর্চার কমতি নেই। এর মাঝেই ১৫ লাখ নয়, ১৬ টাকার এক ছাগল কাঁদিয়েছিল জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদকে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে ৯ বছর বয়সে ছাগল নিয়ে তার জীবনের একটি দুঃখের ঘটনা শেয়ার করেন তিনি।
শৈশবে একবার মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন ফারুক আহমেদ। এমন সময় অভিনেতার হঠাৎ চোখ যায় একটি কালো ছাগলের দিকে। ছাগলের ছোট্ট বাচ্চা। কেউ একজন ছাগলটিকে বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন। ছাগলটি খুবই পছন্দ হয় তার। ফারুক বায়না ধরলেন ছাগলটি কিনবেন। অভিনেতার মা-বাবা কেউই রাজি নন। তবু নাছোড়বান্দা ফারুক আহমেদ, ছাগলটি তার চাই-ই।
সেই স্মৃতি স্মরণ করেন ফারুক বলেন, ছাগলটির দাম চেয়েছিল ২০ টাকা। পরে দর-কষাকষি করে ১৬ টাকায় ঠিক হয়। কিন্তু টাকা পাব কোথায়? মাকে বললাম। মা বললেন, এত টাকা আমি পাব কোথায়? তোর বাবাকে বল। আমি আব্বার কাছে গিয়ে ১৬ টাকা চাইলাম। আব্বা বললেন, বাবা আমি স্কুলশিক্ষক।
১৬ টাকা দিয়ে ছাগল কেনার সামর্থ্য আমার নেই। আব্বাকে বললাম, আব্বা আমার কাছে ৫ টাকা আছে, আপনি ১১ টাকা আমাকে দেন। আব্বা সন্তানের মনরক্ষার জন্য আমাকে পকেট থেকে ১১ টাকা বের করে দিলেন। কেনা হলো ছাগল।
কথাগুলো বলেই কিছুটা মন খারাপ হয়ে গেল এই অভিনেতার। কিছু সময় চুপ থেকে ফারুক আহমেদ বলতে শুরু করলেন, সেই অল্প বয়সে আমি বুঝিনি যে ১১ টাকা দিতে আব্বার কত কষ্ট হয়েছে। কারণ, বাবা ছিলেন স্কুলের শিক্ষক। একদম বাড়তি কোনো কিছু করার উপায় ছিল না আমাদের। কষ্টে আমাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে চলতে হতো। কিন্তু বাবা সাধ্যের মধ্যে সবকিছু করার চেষ্টা করতেন। সেখানে ১১ টাকা বাড়তি খরচ মানে বিলাসিতা। সেবার হয়তো আমি সবাইকে অনেকটা বিপদেই ফেলেছিলাম।
ছাগলটি কিনে ঢাকায় চলে এলেও তার মনটা পড়ে থাকে গ্রামে। কারণ ছাগলটাকে তিনি তার ফুফুর কাছে রেখে এসেছিলেন যেন দেখে রাখে। এরপর গ্রামে গিয়ে মন খারাপ হয়ে যায় তার। বললেন, ফুফু জানান, আমার ছাগলটা নাকি তিন মাস পরই মারা গেছে। শুনে সঙ্গে সঙ্গে আমার কান্না চলে আসে।
আমি কাঁদছি। আব্বা আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন, কেঁদো না থাক বাবা, তোমাকে এবার আরও সুন্দর একটা ছাগল কিনে দেব।আমি আব্বার চোখের দিকে তাকালাম। দেখলাম, তার চোখ ভেজা। বাবাও কাঁদছেন। দুচোখ থেকে গড়িয়ে পানি ঝরছে।