বিনোদন ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম দাবি করেছেন, গতকাল রোববার বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে তার ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির লোকজন।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
হিরো আলম বলেন, গতকাল আদালতে আমি গিয়েছিলাম মামলা করার জন্য। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমার ওপর যে হামলা হয় এবং বগুড়ায় উপ-নির্বাচনে নির্বাচনি ফলাফল ছিনিয়ে নেওয়ায় মামলা করতে গিয়েছিলাম। সেখানে ৮/১০ জন ছেলেপুলে আমার ওপর হামলা করে। তারা অতর্কিত হামলা চালায়। এর আগে, তারা শুধু বলে ‘এই তুই তারেক রহমানকে গালিগালাজ করছিস কেন?, তোর এত সাহস কুটি থেকে আসলো’- এই একটা কথা বলেই তারা মারধর শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এই দুই দলের লোকজনই আমাকে মেরেছে। কারণ হলো দুইটা। আওয়ামী লীগের লোকজন মেরেছে, কারণ আমি তাদের লোকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আর রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা করায় তারা (বিএনপি) মেরেছে। আমাকে মারার এই দুইটাই ছিলো মূল কারণ।
আলোচিত এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর বলেন, কালকে গন্ডগোল হওয়ার পর অনেকেই বলেছেন, সেখানে বিএনপির কোনো লোক ছিলো না। আমি ফুটেজ দেখেছি। সেখানে কয়েকজনের পরিচয় আমরা জানতে পেরেছি। এর মধ্যে রনি ও নাজমুল নামে দুই জনের পরিচয় পেয়েছি। এই দুইজন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এখন তারা বহিষ্কৃত। নুরুন্নবী নামের একজন কালো করে যে ছেলেটা আমাকে মারধর করেছে, সে আওয়ামী লীগের। ফুটেজে ছবি দেখে এগুলো আমরা বের করেছি।
তিনি বগুড়ার বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাকে মারধরের পর যখন বললাম বিএনপির লোকজন মারধর করেছে। মারধরের ফুটেজ তো সবার কাছেই ছিলো। পরে তারা কোর্টে গিয়ে ওই ছেলেদের ধরে নিয়ে এসে মিডিয়ার সামনে কেন বললো এরা বিএনপির কেউ না? এটা প্রমাণ করলো না কেন? আমার নামে আপনারা গুজব কেন ছড়াচ্ছেন? আপনারা বলছেন, হিরো আলম ভাইরাল হওয়ার জন্য এটা করছে। আমি হিরো আলম কী রাজনীতি করে ভাইরাল? আমি হিরো আলম নাটক, গান, সিনেমা করে ভাইরাল হয়েছি। রাজনীতিতে এসেছি পরে।
হিরো আলম বলেন, বগুড়ায় আমি আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতেছি। আমি গতকাল বিএনপির কারো নামে মামলা করিনি। আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের লোকজন আমার ওপর যে অত্যাচার জুলুম করেছে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। গতকাল যারা আমাকে মারধর করেছে ছাত্র আন্দোলনে তাদের কোনো ফুটেজ দেখাতে পারবেন? আমরা ছাত্র আন্দোলনের সামনে ছিলাম। এটা যাচাই করতে আপনারা মিডিয়ার ফুটেজ দেখতে পারেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা আমার ওপর হামলা করেছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো। আমাকে মারধরের ফুটেজ তো সারা বাংলাদেশ দেখেছে। হামলাকারীদের যদি ধরা হয় তখনই বেরিয়ে আসবে তারা কারা। বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা ভাই গতকাল সংবাদ সম্মেলনে যে কথাগুলো বলেছেন, সেগুলো আমি শুনেছি। তাদেরকে একটা কথা বলতে চাই, ভাই আপনাদের আমি শ্রদ্ধা করি, বিএনপিকে ভালোবাসি। গতকাল আমার মামলাটা ছিলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আপনাদের লোকজন যে বলছে, আমি তারেক রহমানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছি, এই ফুটেজটা আপনারা বের করবেন। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আমার যদি ভুল হয়ে থাকে আমি ক্ষমা চাইবো।
প্রজন্ম লীগে যোগদান করেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবর জিয়ারত করেছিলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি পাল্টা প্রশ্নে করে বলেন, প্রজন্ম লীগে আমি যোগদান করেছিলাম এমন কোনো কাগজপত্র কেউ দেখাতে পারবেন কিনা? আমি যদি প্রজন্ম লীগে যোগদানই করতাম তাহলে এর আগে যে নির্বাচন হলো সেখানে তো আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করতাম। আমি তো কংগ্রেস থেকে ডাব মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছি।