শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৬:১৭:২৩

সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ভয়ংকর ৩০ মিনিট

সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ভয়ংকর ৩০ মিনিট

বিনোদন ডেস্ক : বান্দ্রার মতো অভিজাত এলাকায় ‘ছোট নবাবের’ ওপর হামলার খবরে উদ্বিগ্ন পুরো চলচ্চিত্র জগৎ ও তার ভক্তরা। এ হামলা মুম্বাইয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে পুরো ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

সে প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, পুরো ঘটনা ছিল ৩০ মিনিটের। বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর হামলার দুই ঘণ্টা আগে বাড়িতে কারও প্রবেশের কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়নি পুলিশের ফরেনসিক বিভাগ। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজেও কারও প্রবেশের দৃশ্য ধরা পড়েনি এ সময়ে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিনেতার বাড়িতে চুরি করার জন্যই প্রবেশ করেছিল এক বা একাধিক দুর্বৃত্ত। এমনকি অভিনেতার ভবনের সব প্রবেশপথ ও বাড়ির নকশা সম্পর্কে আগে থেকেই জানা ছিল তাদের। ‘ফায়ারস্পেস’ দিয়ে সাইফ-কারিনার বাড়িতে তারা প্রবেশ করে। এরপর ভবনের পেছনের দিকের সিঁড়ি বেয়ে অভিনেতা যেখানে থাকেন, সেখানে পৌঁছায় দুর্বৃত্তরা।

বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে তৈমুর আর জেহর ঘরে প্রবেশ করতে দেখা গেছে অনুপ্রবেশকারীকে। প্রথমে একজনকে অভিনেতার ছোট ছেলে জেহর ঘরে দেখা যায়। জেহর আয়া এলিয়ামা ফিলিপ জানান, তিনি রাত ২টার দিকে অনুপ্রবেশকারীকে দেখতে পান এবং তার মুখোমুখি হন।

তিনি বলেন, বাথরুমের দরজা খোলা এবং আলো জ্বলতে দেখে আমি ধরে নিয়েছিলাম হয়তো কারিনা কাপুর। তবে এরপরই কিছু একটা সমস্যা টের পেয়ে বিষয়টি দেখতে যখন এগিয়ে যাই, তখন একজন লোককে বাথরুম থেকে বেরিয়ে তৈমুর এবং জেহর ঘরে প্রবেশ করতে দেখি।

৫৬ বছর বয়সি গৃহকর্মী জানান, তিনি যখন ওই লোকের মুখোমুখি হন, তখন তার কাছে এক কোটি রুপি দাবি করা হয়। ওই দুর্বৃত্তকে তাড়ানোর চেষ্টার সময় তিনি আহত হন। একই ঘরে থাকা আরেক গৃহকর্মী জুনু তখন সাইফের ঘরে ছুটে যান এবং অভিনেতাকে জাগিয়ে তোলেন। 

অভিনেতা অনুপ্রবেশকারীদের মুখোমুখি হলে তাকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। এ সময় গীতা নামের বাড়ির আরেক গৃহকর্মী সাইফকে হামলাকারী অনুপ্রবেশকারীকে পরাস্ত করতে এবং তাকে একটি ঘরে আটকে রাখতে সাহায্য করেন। এরপর সবাই বাড়ির উপরের তলায় চলে যান; কিন্তু ততক্ষণে অনুপ্রবেশকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

পুলিশ সূত্র মতে, ষষ্ঠতলার সিসিটিভি ক্যামেরায় তার পালানোর দৃশ্য ধরা পড়ে। তবে এরপর তার আর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি, এমনকি লবি এলাকার সিসিটিভিতেও তাকে দেখা যায়নি। পুলিশের সন্দেহ, ‘ফায়ারস্পেস’ ব্যবহার করে নিচতলায় পৌঁছে পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায় সে। পুরো ঘটনার স্থায়িত্ব ৩০ মিনিটের।

মেরুদণ্ডে একটিসহ ছয়টি আঘাতের কারণে রক্তে ভাসছিল সাইফ। এমন সময় কোনো গাড়ি বের হওয়ার জন্য প্রস্তুত না থাকায় তাড়াহুড়ো করে সাইফকে অটোরিকশায় চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান বড় পুত্র ইব্রাহিম। অভিনেতার বাড়ি থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরেই হাসপাতাল।

ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় অভিনেতাকে দ্রুত কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অস্ত্রোপচার শেষে তিনি এখন বিপদমুক্ত।

বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর হামলার সঙ্গে সঙ্গেই জোর তদন্তে নেমে পড়েছে মুম্বাই পুলিশ। এর মধ্যে ৩৫টি পৃথক দল গঠন করে তদন্তের কাজ শুরু করেছেন তারা। এ মামলায় সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাইফ-কারিনার বাসার এক পরিচারিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয় পুলিশ স্টেশনে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে