বিনোদন ডেস্ক : বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত গোটা ভারত। বুধবার মধ্যরাতে আকস্মিক এ ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কে বলিউড তারকারাও। ইতিমধ্যে হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে মুম্বাই পুলিশ। সাইফের মতো প্রভাবশালী তারকার বাড়িতে এক বহিরাগতের ঢুকে পড়াটা চমকে দেওয়ার মতো! সে রাতে আহত সাইফকে হাসপাতালে নিয়ে যান তার ছেলে ইব্রাহিম।
মাঝরাতে ড্রাইভার না থাকায় নিজের গাড়ি নিয়ে যেতে পারেননি সাইফ। পাননি অন্য কোনো গাড়িও। তাই আহত বাবাকে অটোতে তুলেই হাসপাতালে ছোটেন ইব্রাহিম। যে অটোচালক রক্তাক্ত সাইফকে বুধবার গভীর রাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন, তার নাম ভজন সিং রানা।
ওই অটোচালকের দাবি, আহত অবস্থায় তার অটোয় যে সাইফ আলি খান বসে রয়েছেন, প্রথমে তা বুঝতেই পারেননি তিনি। শেষে হাসপাতালে পৌঁছনোর পর সাইফ নিজেই নিজের পরিচয় দেওয়ার পর অভিনেতাকে চিনতে পারেন তিনি। একই সঙ্গে ভজন জানিয়েছেন, ওই পরিস্থিতিতে সাইফের থেকে অটোভাড়াও নেননি তিনি। তবে বিপদের মুহূর্তে তিনি যে সাইফকে সাহায্য করতে পেরেছেন, এটা ভেবেই খুশি ভজন।
শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের সামনে ওই অটোচালক বলেন, ‘রাতে আমি অটো নিয়ে যাওয়ার সময় আচমকাই রাস্তার পাশের একটি বাড়ির গেট খুলে এক নারী চিৎকার করে আমাকে থামতে বলেন। একজন আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে বলে জানান তিনি। একটু পরেই আমি দেখি সাইফ আলি খান হেঁটে আমার অটোর দিকে আসছেন। যদিও তখন তাকে আমি চিনতে পারিনি। উনি নিজেই অটোতে উঠে বসেন।
তার সঙ্গে আরো একজন কমবয়সী ব্যক্তি (সম্ভবত সাইফপুত্র ইব্রাহিম) এবং একটি শিশুও ছিল। অটোয় উঠে উনি খালি আমাকে জিজ্ঞেস করেন হাসপাতালে পৌঁছতে কতক্ষণ লাগবে। আমি বলি, আট থেকে দশ মিনিটের মধ্যেই পোঁছে যাব।’
ভজন জানিয়েছেন, সাইফের পিঠ যে রক্তে ভেসে যাচ্ছিল তা তিনিও দেখেছেন। সাইফের সাদা জামার পিছন দিক রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। সাইফের ডানদিকে ঘাড়ের কাছ থেকেও রক্ত পড়ছিল। প্রথমে ভজন ভেবেছিলেন, এটা হয়তো আর পাঁচটা মারামারির কোনো ঘটনার মতো। তবে গোটা রাস্তায় সাইফ স্বাভাবিকই ছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই অটোচালক। লীলাবতী হাসপাতালে পৌঁছে সোজা জরুরি বিভাগের সামনে অটো নিয়ে গিয়ে থামান তিনি। তখন সাইফ আলি খান নিজেই অটো থেকে নেমে হাসপাতালের কর্মীদের নিজের পরিচয় দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে অনুরোধ করেন। তখনই ভজন সিং সেফকে চিনতে পারেন। তবে দু-তিন মিনিট অপেক্ষার পর ফিরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
ভজনের কথায়, সাইফের পীঠ থেকে এতটাই রক্ত বেরোচ্ছিল যে তার অটোর সিটেও রক্তের দাগ লেগে যায়। পরে তা তিনি পরিষ্কারও করে নেন। ভজন জানান, ‘আমি ওনাদের থেকে ভাড়াও নিইনি। বিপদের সময় আমি যে ওনাদের সাহায্য করতে পেরেছি, এটা ভেবেই ভালো লাগছে।’
গত বুধবার মধ্যরাতে সাইফ আলি খানের বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়েছিল দুর্বৃত্তরা। ছেলের ঘরের সামনে ওই ব্যক্তিকে দেখে তার ওপর ঝঁপিয়ে পড়েন সাইফ আলি খান। তখনই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় দুর্বৃত্তরা। হাসপাতালে নেওয়ার পর সাইফের নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। সাইফের নিউরো সার্জন নীতিন দাঙ্গে জানিয়েছেন, তার পিঠে থোরাসিক স্পাইনাল কর্ডের পাশ থেকে ২-৩ ইঞ্চি গভীরে ঢোকা ধারালো অস্ত্র বের করা হয়েছে। দ্রুত তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার স্পাইনাল ফ্লুইড (মেরুদণ্ডের রস) বেরোতে শুরু করেছিল, তা বন্ধ করতেই এই অস্ত্রোপচার। তবে অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে, স্থিতিশীল রয়েছেন অভিনেতা।