বিনোদন ডেস্ক : বলিউডের মুন্নাভাই সঞ্জয় দত্ত। যিনি আয়েশি জীবন-যাপনেই অভ্যস্ত। কিন্তু জানেন কি, এই আয়েশি জীবনের মানুষটি জেলখানায় ৪ বছর ৩ মাস ১৪ দিন কিভাবে কাটিয়েছেন?
ভাবছেন হয় তো তিনি বলিউডের একজন সুপারস্টার। তাই তার জন্য সাতখুন মাফ! না, মোটেও তা নয়। অন্য আট-দশজন বন্দীর মতই থাকতে হয়েছে তাকে। নিয়ম মেনেই কাজ করতে হয়েছে সেখানে তার।
তাহলে কি কাজ করতেন সঞ্জয় দত্ত? এখন নিশ্চয় এমন প্রশ্নে উদ্রেক হচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নিই জেলখানাতে কি কাজ করতে হত সঞ্জয়কে আর সেখানে কিভাবে কাটত তার সময়গুলো?
আজ বুধবার সাকালে সঞ্জয় দত্ত যখন জেল থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন তার ঝুলিতে ছিল কাগজের ব্যাগ তৈরি আর রেডিও ডিস্ক জকি হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা। অর্থাৎ তিনি কারাগারে বসে বসেই কাগজের ঠোঙ্গা বানাতেন। এর বিনিময়ে তিনি পেতে দৈনিক ৪৫ রুপি।
এছাড়া কারাগারের রেডিওতে একজন উপস্থাপক হিসাবেও তিনি কাজ করেছেন।
১৯৯৩ সালের মুম্বাই বোমা হামলার ঘটনার পর, হামলাকারীর কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র কেনার অভিযোগে সঞ্জয় দত্তর সাজা হয়।
কিন্তু সেসময় সঞ্জয় দত্ত দাবী করেছিলেন, হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার কারণে তিনি তার পরিবারকে বাঁচাতেই ওই অস্ত্র কিনেছিলেন।
এদিকে ওই ঘটনায় তার ৫বছরের সাজা হলেও ভালো ব্যবহারের কারণে সঞ্জয় দত্তের ১৪৪ দিনের সাজা কমে যায়।
২০১৩ সালে পুনের ওই কারাগারে সঞ্জয় দত্তকে কারাভোগ শেষ করার জন্য পাঠানো হয়। যদিও অনেকের দাবি, সেলেব্রিটি হওয়ার কারণে তিনি অনেক বেশি প্যারোল ভোগ করেছেন।
কারাগারে সঞ্জয় দত্ত সবচেয়ে নিরাপত্তার ওয়ার্ড, ‘ফ্যান্সি ওয়ার্ডে’ আট ফুট বাই দশ ফুটের একটি সেলে বাস করতেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের সেলগুলো ছিল ঠিক পাশেই। কারাবন্দীদের পোশাকই তাকে পড়তে হতো।
সঞ্জয় দত্তের কারাগারের বাইরে একটি ছোট বাগান ছিল, নিরাপত্তা রক্ষীদের নজরবন্দি হয়ে সেখানে তিনি হাঁটাচলা করতে পারতেন।
একজন কারাবন্দী জানিয়েছেন, তাকে কারাগারে সবাই ‘বাবা’ বলে ডাকতো। কারাগারে তিনি অনেক বই পড়তেন। লাইব্রেরী থেকে প্রতি সপ্তাহে তিনি দুইটি বই আনতেন।
সকাল ৬টায় ঘুম থেকে ওঠার কিছু পর কারারক্ষীরা তার কাগজের ব্যাগ বানানোর জিনিসপত্র নিয়ে আসতো। নিউজপেপার কেটে কেটে তিনি ব্যাগ বানাতেন। এতে প্রতিদিন তার আয় হতো ৪৫ রুপি।
দুপুরে তাকে কারাগারের অভ্যন্তরীণ রেডিও কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে তিনি রেডিও জকি হিসাবে একটি প্রোগ্রাম উপস্থাপনা করতেন। দুপুরের খাবারের পরও তিনি রেডিওতে কাজ করতেন।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন