বিনোদন ডেস্ক : মেয়ের মৃত্যুর পর মাত্র একটা সপ্তাহ কেটেছে। দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না প্রত্যুষার মা সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়। চোখ বুজলেই ভেসে উঠছে শেষ দেখা মেয়ের মুখটা।
একমাথা সিঁদুর নিয়ে কেমন শান্ত ভাবে শুয়েছিল সে। কে পরাল ওকে সিঁদুর? ভেতরের যন্ত্রণা কাউকে কিছু না বলে, বাড়ি থেকে এত দূরের একটা শহরে নিজেকে শেষ করে দিল- এসব বলে ডুকরে কেঁদে উঠলেন প্রত্যুষার মা।
ঠিক এ জায়গাতেই খটকা লাগছে সোমার। আমার মেয়ে তো খুব শক্ত মনের ছিল। কষ্ট হলেও নিজের মনে চেপে রাখত, গুমরে মরত। মুখ ফুটে কাউকে কিছু বলত না। অনেকবার দেখেছি, কারো সঙ্গে ঝগড়া হলে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ত। একা একাই ঘুরে বেড়াত। কিন্তু সুইসাইড! না, এটা ও করতেই পারে না। নিজের জীবন ও নিজেই শেষ করে দেবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না।
প্রত্যুষার মা গণমাধ্যমকে জানান, মুম্বাইয়ে যাওয়ার পর থেকেই ওর ব্যস্ততা বাড়ে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও কমতে থাকে। তবে রাহুলের সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল। ও আমাকে রাহুলের ব্যাপারে সব জানিয়েছিল। আমাদের সঙ্গে প্রত্যুষাকে যোগাযোগ রাখতে রাহুলই বারণ করেছিল।
তিনি জানান, এমনকি রাহুলের সাবেক বান্ধবী সালোনির কথাও বলেছিল। ওর সঙ্গে সালোনি খারাপ ব্যবহার করত, আর তাতে মন খারাপ করে ফোনে আমার কাছে কান্নাকাটি করত মেয়েটা। আমরা তো ঘটা করে জানুয়ারিতেই বিয়ে দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু রাহুল ডেট পিছিয়ে জুনে করতে বলে।
সোমা জানান, এও বলে যে, তাড়াতাড়ি বিয়ে করলে নাকি ও কোনও সম্পত্তি পাবে না। আমরা তাও তো মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু কী যে হয়ে গেল- দীর্ঘশ্বাস পড়ে সদ্য কন্যা হারা মায়ের।
কান্না সামলে তিনি বলে ওঠেন, ৩১ মার্চ রাতেই আমি আর ওর বাবা ওর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলাম। রাহুলের সঙ্গে ঠিকুজি মিলিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম। হঠাৎ ডোরবেল বাজে। আর ও ফোনটা কেটে দেয়।
সোমা বলেন, আমার আর ওর একটা জয়েন্ট অ্যকাউন্ট আগে ছিল। ও মুম্বাই চলে আসার পর আলাদা করে রাহুলের সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খোলে। ওর যাবতীয় রোজগারের টাকা সেখানেই রাখত। সেসব কোথায় গেল বলুন তো? এর জবাব রাহুলকে দিতেই হবে।
কান্না চেপে সোমা বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি এটা আমি নিশ্চিত। ওর কত স্বপ্ন চিল জানেন? অনাথআশ্রম তৈরি করবে ভেবেছিল। কে এটা করেছে, আমি খুঁজে বের করবই।
৯ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম