বিনোদন ডেস্ক : ‘আর কতক্ষণ দেবের জন্য অপেক্ষ করব?টিউশন ফেলে দেবকে দেখার জন্য এসেছি। কিন্তু নেতারা এত বকবক করছেন যে বিরক্ত লাগছে। আরে আপনাদের নয়, দেবকে দেখবো বলেই এসেছি। কথা গুলো সভা আশায় জনতার।
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে কাটোয়ার চন্দ্রপুর, খণ্ডঘোষের বেরুগ্রাম, বর্ধমানের মির্জাপুর— ভোট প্রচারের সভা নাকি শুক্রবারের দেবের সিনেমার মেগা রিলিজ গুলিয়ে যাচ্ছিল প্রায়। চোদ্দ, একুশ থেকে একেবারে চল্লিশ-বাহাত্তর, দেবকে দেখতে স্কুল পড়ুয়া, তরুণী, গৃহবধূদের ভিড় যেন কিছুতেই বাগ মানছিল না। তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মীরা তো জনসভার মাঠের চেহারা দেখে বলেই ফেললেন, ‘এক সময় মনে হচ্ছিল মুকুল রায়ের মতো নেতা নয়, দলের কোনও প্রার্থী নয়, আছে শুধু তারকা দেব।’
ব্যপারটা কার্যত তাই। বৃহস্পতিবার, পয়লা বৈশাখে পরপর জনসভায় কোথাও দেড় ঘন্টা তো চার ঘন্টা দেরিতে পৌঁছলেন নায়ক। তাপমাত্রা যে চল্লিশ ছুঁইছুঁই মাঠ দেখে তা বোঝাই যাচ্ছিল না। বরং সভা শুরু হয়ে যাওয়ার কিছু পরে মাঠ বোঝাই করে ছিলেন শুধু মহিলারা। প্রকাশ্যেই চেঁচিয়ে বারবার তারা জানাচ্ছিলেন, আর কিছু নয়, রুপোলি পর্দার নায়ককে সামনা-সামনি দেখতেই ছুটে এসেছেন তারা। ভিড়ের কথা বুঝতে পেরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ মুকুল রায়ও এক বার বলে ফেললেন, ‘আমাদের বক্তব্য শুনতে নয়। সভায় তরুণী-যুবতীরা এসেছেন, তারুণ্যের জয়গান গাইতে।’
মুকুল রায় মঞ্চে উঠেই বলেন, ‘কলকাতায় একটি কাজের জন্য আসতে দেরি হল। আপনারা অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন। আপনাদের রাজনৈতিক বক্তব্য শোনার মতো ধৈর্য্য আর নেই।’ তারপরেই সোজা আবেদন করেন, ‘দিদির পছন্দের মানুষ আপনাদের প্রার্থী হয়েছেন। আপনারা তাকে জেতাবেন।’ ততক্ষণ ভিড়ের সাড়াশব্দ তেমন ছিল না, কিন্তু দেব মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে নমস্কার করতেই শুরু হয়ে যায় চিৎকার। হাত নাড়তে নাড়তে মহিলারা মঞ্চের কাছে চলে আসেন। দেব বলেন, ‘ভাল আছেন তো? আপনাদের প্রার্থীদের জেতাবেন।’
ভিড়ের আকর্ষণ বুঝে তৃণমূল প্রার্থীদের জেতানোর আহ্বান জানিয়েই মুকুল রায় মাইক্রোফোন তুলে দেন দেবের হাতে। চিৎকার, আবেগও লাগাম ছেঁড়ে। এক বার হাত মেলাতে, কাছ থেকে দেখতে, মোবাইলে ছবি তুলতে সব ব্যারিকেড ভেঙে মঞ্চের কাছে চলে যান তরুণী-মহিলারা। পুলিশের অবস্থাও সঙ্গীন।
দেবও এ বার ভক্তদের দিকে ফুলের তোড়া ছুড়ে দেন। প্রচণ্ড চিৎকারে মিশে গোলাপের পাপড়ি গিয়ে পড়ে দেবের জামায়-মাথায়। আর কোনও কথা না বলে হাত নাড়তে নাড়তে বেরিয়ে যান নায়ক। পিছনে মুকল রায়। তারও পিছনে স্বপন দেবনাথ-সহ জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু ও অন্যান্য নেতারা।
কোনও রকমে বেরিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় এক মহিলা নেত্রী বলেন, ‘হিরো পর্দায় এলেই যেমন চিৎকার-হাততালি-সিটি ওড়ে, আমাদের সভাতেও দেবকে দেখে তেমনটা হল। ভিড়টা কেন বোঝা গেল।’
১৫ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস