মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬, ১০:০৬:৩১

মাহির কথিত স্বামীকে আদালতে তোলা হচ্ছে আজ

মাহির কথিত স্বামীকে আদালতে তোলা হচ্ছে আজ

বিনোদন ডেস্ক : ২ দিনের রিমান্ড শেষে আজ আদালতে তোলা হবে ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহির কথিত স্বামী শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে শাওনকে। ফেসবুকে ছবি প্রকাশ করে মানহানি করার অভিযোগে মাহির করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গত শুক্রবার (২৭ মে) রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মাহিয়া মাহি এ মামলা করেন। গ্রেফতারকৃত শাওনের বাবার নাম নজরুল ইসলাম। তিনি গুলশানের একজন ব্যবসায়ী। শাওন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ফিল্ম এন্ড মিডিয়া বিভাগে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ডিবি দক্ষিণ বাড্ডার বাসা থেকে শাওনের কম্পিউটার জব্দ করেছে।

ডিবি পুলিশ জানায়, মামলার পরদিন সকালে দক্ষিণ বাড্ডার বাসা থেকে শাহরিয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ তাকে আদালতে পাঠায়। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আজ মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, চলচ্চিত্র জগতে মাহিয়া মাহি বলে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম শারমিন আক্তার নীপা। মামলায় তিনি বাদী হিসেবে প্রকৃত নামটি ব্যবহার করেছেন। মামলায় মাহি উল্লেখ করেছেন, ২৭ মে তার বন্ধু শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে তার কিছু ছবি কয়েকটি অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে শাহরিয়ার ছাড়া তার কয়েকজন বন্ধুও জড়িত বলে তার ধারণা। বিয়ে ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এসব ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

মামলার এজাহারে মাহি অভিযোগ করেন, ২৫ মে তার বিয়ে হয়েছে। এ অবস্থায় দাম্পত্য সম্পর্ক নষ্ট ও তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে তারা এসব করছেন। শাহরিয়ার ছাড়াও তার (শাহরিয়ার) বন্ধু হাসান, আলামিন, খাদেমুল ও শাহরিয়ারের খালাতো ভাই রেজওয়ান জড়িত বলে মাহি ধারণা করছেন।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদে শাওন জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে বাড্ডার কাজী অফিসে তারা বিয়ে করেন। উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজে একই ক্লাসের শিক্ষার্থী ছিলেন শাওন ও মাহী। ঐ সূত্র ধরে তাদের মধ্যে স্কুল জীবন থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।  দুই বছর আগে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের কাগজপত্রও জিজ্ঞাসাবাদে ডিবির তদন্তকারী টিমের কাছে উপস্থাপন করেছেন শাওন।

একজন ডিবির কর্মকর্তা জানান, শাওনের কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক থেকে মাহী ও শাওনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে। শাওন স্বীকার করেছেন যে তিনিই মাহীর সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে আপলোড করেছেন। মাহীর অনুমতি নিয়েই তিনি এসব ছবি আপলোড করেন।

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে শাওন দাবি করেছেন কলেজ জীবনের শুরু থেকেই মাহীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে উঠে তার। বিয়ের আগে থেকেই তাদের সম্পর্ক ছিল স্বামী-স্ত্রীর মতোই। এক সঙ্গে বিভিন্নস্থানে সময় কাটিয়েছেন তারা। কলেজ জীবন থেকেই মডেল, অভিনেত্রী হওয়ার শখ ছিল মাহীর। চলচ্চিত্র নির্মাণকারী একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রধরে ২০১২ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরুর পরও তাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। গত বছর থেকেই দূরত্ব সৃষ্টি হয় তাদের।

২০১৫ সালে বাড্ডার কাজী অফিসে বিয়ে করেন শাওন ও মাহী। সিনেমার শুটিং স্পটেও যেতেন শাওন। সিনেমার প্রযোজক-পরিচালক থেকে শুরু করে সবাই জানতেন মাহীর স্বামী শাওন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, মাহী-শাওন স্বামী-স্ত্রী হয়ে থাকলেও তাদের গোপন ছবি ফেসবুকে আপলোড করতে পারেন না। তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক আছে কী না সেটি দেখার বিষয় নয়। অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি আপলোড করার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, শাওনের কয়েকজন বন্ধু অভিযোগ করেছেন, ডিবি পুলিশের কয়েক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে মাহীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে স্প্ল্যাশ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগিতায় ‘ঢাকা অ্যাটাক’ নামে একটি সিনেমার শুটিংয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা অভিনয় করছেন। এই সিনেমার নায়িকা মাহী। এই ছবির শুটিংয়ের সূত্র ধরে ওইসব কর্মকর্তার সঙ্গে মাহীর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। তারাই এখন শাওনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
৩১ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে