বিনোদন ডেস্ক : প্রেমি ঘটিত ব্যাপার নিয়ে কয়েকদিন আগেই রাজধানীর এক উঠতি মডেল আত্মহত্যা করেছিলেন। সে ঘটনায় তার প্রেমিককে আটকও করেছেন পুলিশ। এ ঘটনার রেশ এখনও রয়ে গেছে শোবিজ অঙ্গনে। অথচন এরই মধ্যে আরও এক উঠতি মডেল মাহাতারা রহমান শৈলীর আত্মহত্যার নিঃসন্দেহে হতাশ করার মতই।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মহাখালীর বাজার গেইটে ১০৫/৩ নম্বর বাড়ির নিজ বাসা থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শৈলীর এ ঘটনায় অনেকেই সন্দিহান। তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। প্রশ্ন উঠেছে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা? তবে তার স্বামীর দাবী, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিংফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে শৈলী।
এ ঘটনায় আশেপাশের লোকজন জানিয়েছেন, রাত ১২টার দিকে পায়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন অভি-শৈলী দম্পতি। বাড়ির পাশের বটতলা এলাকায় পৌঁছলে দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এসময় রাস্তার মধ্যেই শৈলীকে মারধর করেন অভি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যান শৈলী।
বাসার মালিকের মেয়ে সুমি জানান, এসময় শৈলীর চিৎকার শুনেছেন তারা। তিনি চিৎকার করে বলছিলেন- ‘তুই আমার গায়ে হাত তুললি কেন, রাস্তায় আমাকে মারলি কেন?’ এসময় প্রতিবেশী একজন ফোনে ওই বাড়ির মালিকের স্ত্রী আসমা বেগমকে বিষয়টি জানান। শব্দ শুনে ও ফোনে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দরজা খুলেন তারা। এসময় অভিকে দ্রুত উপরে উঠতে দেখেন সুমি। তার হাতে ছিল একটি ব্রিফকেস। এর পাঁচ মিনিট পরেই আবার চিৎকার শুনতে পান তারা। আশেপাশের সবাই চতুর্থ তলায় উঠে দেখতে পান অভি ও হৃদয়ের স্ত্রী মৌ কান্নাকাটি করছে আর দরজার লক ভাঙার চেষ্টা করছে। অভি তখন জানান, দরজার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেয়েছেন শৈলী ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে।
এদিকে মডেল শৈলী কেন বা কি কারণে আত্মহত্যা করলেন? এর কোন সঠিক উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হচ্ছে, শৈলীর স্বামী অভিজিৎ বাচ্চির নির্যাতনের কারণেই সে আত্মহুতি দিয়ে থাকতে পারে।
পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে অভিজিৎ বাচ্চিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সূত্র বলছে, শৈলী মডেলিং করতেন। তবে নিয়মিত ছিলেন না। তার বাবা মতিউর রহমান একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি)। তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল সদরে। ছয় মাস আগে অভিজিৎ বাচ্চি ওরফে অভির সাথে প্রেমের মাধ্যমে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়।
বনানী থানার এসআই ক্ষিদাম চন্দ্র জানান, শৈলী ১০৫/৩ মহাখালী বাজার গেটে স্বামীর সাথে থাকতেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে স্বামী অভিজিৎ বাচ্চি তাকে অচেতন অবস্থায় মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন খান জানান, শৈলর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মতিউর রহমান অভিযোগ করেছেন, স্বামী অভিজিৎ বাচ্চি তার মেয়েকে নির্যাতন করতেন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে শৈলী আত্মহত্যা করতে পারেন।
এদিকে পুলিশের কাছে অভিজিৎ বাচ্চি দাবি করেছেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে কলহের জের ধরে শৈলী সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
১৬ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন