বিনোদন ডেস্ক :পুরো নাম কে এম মোশাররফ হোসেন। ১৯৮৯ সালে মঞ্চ নাটক দিয়ে পথচলা শুরু। ক্যারিয়ারের বয়স প্রায় ২৭ বছর। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের ১৬ বছর পর ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে টিভি নাটকে নিয়মিত হন। সেসব নাটকের শেষে তাঁর নাম দেখা যেত ‘মোশাররফ হোসেন’। ২০০৫ সালের শেষের দিকে হঠাৎ করেই নামের সঙ্গে ‘করিম’ যুক্ত করে লিখতে থাকেন ‘মোশাররফ করিম’। তিনি ভক্তদের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন এই মোশাররফ করিম নামেই। নামের শেষে ‘করিম’ শব্দটির যুক্ত করার রহস্যটা কী? জানতে হাজির হয়েছিলাম অভিনেতা মোশাররফ করিমের কাছে।
সূত্রাপুর থানা থেকে একটু ভেতরে কাঠপট্টি। শুটিং বাড়িটি খুঁজে পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হলো না। শুটিং বাড়ির ছাদের ওপরে উঠে দাঁড়িয়ে শুটিং দেখছি। শুটিংয়ের ফাঁকে আমাকে দেখামাত্রই এই অভিনেতা হাত দিয়ে ইশারা করলেন, তার মানে অনেকটা এ রকম—দৃশ্যধারণ শেষ করেই আসছি, একটু দাঁড়াও ভাই। মোশাররফ করিমের বাবা প্রয়াত কে এম আবদুল করিমফুরসত মিলতেই ডাকলেন তিনি। বাবার কথা মনে করিয়ে দিতেই একটু যেন চুপ করে গেলেন সময়ের এই জনপ্রিয় অভিনেতা। তিনি বলছিলেন, ‘করিম নামটি আমার বাবার নাম থেকে নেওয়া। বাবার নাম ছিল কে এম আবদুল করিম। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন।’ বলেই একটু নির্বাক অন্যমনস্ক হয়ে গেলেন তিনি। ততক্ষণে হয়তো বাবার স্মৃতিগুলো ভর করছিল। এই ফাঁকে বলে রাখি, মোশাররফ করিমের বাবা ১৯৮৯ সালে মারা যান। সে বছরই তিনি মঞ্চনাটকের সঙ্গে যুক্ত হন। তখন আজকের এই দাপুটে অভিনেতা সবে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র। মোশাররফ আবার বলা শুরু করলেন, ‘বাবা তো মারা গেছেন। যত দিন জীবিত ছিলেন, তত দিন তিনি ছিলেন আমার সেরা বন্ধু। ফাদার ওয়াজ মাই অনলি ফ্রেন্ড। আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। আমরা খুব হাসিঠাট্টা করতাম। অনেকে ভাবত, তিনি ছেলেকে আশকারা দিচ্ছেন, মাথায় তুলছেন, লাই দিচ্ছেন। কিন্তু বাবা সেসব কখনো গায়ে মাখেননি।’
প্রশ্ন করলাম, বাবার কাছ থেকে ছেলেরা তো অনেক কিছু ধারণ করে। আপনার মধ্যে সে রকম কী কী আছে? খানিক ভেবে মোশাররফ করিম জবাব দিলেন, ‘আমার সমস্ত গঠনটাই বলতে গেলে বাবার মতো। আমার বাবা আমার চেয়ে সুদর্শন ছিলেন। আমার কথা বলা, পড়া, চলা, হাঁটা বা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সবই বাবার কাছ থেকে পেয়েছি। বলা যেতে পারে, আমি আমার বাবার দ্বিতীয় সংস্করণ।’ বলেই আবার আনমনা হয়ে গেলেন মোশাররফ করিম। হয়তো বাবার কথাগুলোই এই অভিনেতার মনের দরজায় উঁকি দিচ্ছিল আরও একবার। যে অভিনেতা তাঁর বাবাকে স্মরণীয় করে রাখতে নামের শেষে যোগ করেছেন প্রিয় বাবার নাম।-প্রথম আলো
১৯জুন২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এমএম