শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:১৫:২৯

আজ ‘মায়ের বিয়ে’!

 আজ ‘মায়ের বিয়ে’!

বিনোদন ডেস্ক : সুদেষ্ণা রায় আর অভিজিত্‍ গুহর নতুন ছবির নাম দেখে আক্কেল গুড়ুম৷ কিন্তু মেয়েরা যে আজকাল সত্যিই মায়ের বিয়ের ব্যবস্থা করছেন তা আবিষ্কার করলেন টাইমস অব ইন্ডিয়ার ভাস্বতী ঘোষ।

পোস্টারে চোখ পড়তেই আক্কেল গুড়ুম! সে কী! মায়ের আবার বিয়ে হয় নাকি? বাকি সবকিছু হতে পারে, তাই বলে বিয়ে?

পরিচালক সুদেষ্ণা রায় আর অভিজিত্‍ গুহর নতুন ছবি কিন্তু বলছে, মায়ের বিয়ে হয়৷ আর হয় বলেই তাদের নতুন ছবিরও নাম ‘মায়ের বিয়ে’৷ ছবির এমন নাম রেখে নাকি মহা সমস্যায় পড়ছেন তারা।  

মানে অনেকে বলছেন, ‘বাবা কেন চাকর’ ধরনের নাম৷ তবে বলে রাখা ভালো, ‘বাবা কেন চাকর’ কিন্তু প্রসেনজিত্‍ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত একটি বাংলা ছবি৷

প্রশ্ন শুনে সুদেষ্ণা বলছেন, প্রথমত অনেকের মতে ছবির এরকম একটা ছবির নাম ‘চিপ’! কিন্তু তাদের আমি বললাম, দেখুন, এটা একেবারে সোজাসাপটা কমিউনিকেশন৷

আর দ্বিতীয় কারণটা হলো, মায়ের যে বিয়ে হতে পারে, সেটাই তো এখনও অনেকে মেনে নিতে পারেন না৷ ফলে তাদের তরফে আমাদের কাছে কিছু গালাগালওি এসে পৌঁছছে৷

তাদের মতে, এটা অত্যন্ত রিগ্রেসিভ ভাবনা-চিন্তা৷ কিন্তু একজন সিঙ্গল মাদার, যার সন্তান বড় হয়ে গেছে, তার মধ্যে তো একাকিত্ব থাকতে পারে৷ তিনিও তো একজন জীবনসঙ্গী খুঁজতে পারেন৷

এমনকী এ শহরেও তো একজন সন্তান তার মায়ের বিয়ে দিয়েছেন৷ মায়ের বিয়ে দেয়া যে একটা প্রোগ্রেসিভ চিন্তা, সেটাই আমরা বলতে চেয়েছি এ ছবির মাধ্যমে৷

পরিচালক সুদেষ্ণা রায়ের যুক্তি যে অকাট্য সেটা বোঝা গেল সানির সঙ্গে কথা বলে৷ টেলিভিশনে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টরের কাজ করেন এ কন্যা৷ ২০১৪ সালে যিনি নিজের মায়ের বিয়ে দিয়েছেন৷

হঠাত্‍ এমন একটা কাজ করার চিন্তা মাথায় এল কী করে? সানি বলছেন, 'টেলিভিশনে কাজ করি৷ তারপর আমার নিজের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর মা'কে একেবারেই কোনো সময় দিতে পারছিলাম না৷

তখন মনে হলো, মা’র জীবনেও যদি একজন সঙ্গী আসেন তা হলে বেশ হয়৷ আমরা কিন্তু একেবারে পাত্র দেখার মতো করেই সবটা করেছি৷ শেষ পর্যন্ত মা'র বিয়ে হয়ে যায়৷ এখন মা বিদেশে থাকেন, বলেন তিনি৷

অনেকের আবার একটা ধারণা রয়েছে, শুধুমাত্র উচ্চবিত্ত মানুষরাই এমন ভাবনা-চিন্তাকে সমর্থন করেন৷ বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজ এমন ভাবনাকে কখনওই প্রশয় দেবে না!

কিন্তু মধ্যবিত্ত সমাজের এক প্রতিনিধি অপর্ণা বলছেন অন্য কথা৷ অপর্ণা দাস পেশায় হেয়ার স্টাইলিস্ট৷ সিঙ্গল মাদারও বটে৷ অপর্ণা বলছেন, আমি নিজের দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবিনি।  

কারণ আমার ইচ্ছে করেনি৷ কিন্তু কোনও সিঙ্গল মাদার যদি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন, মানে কারও যদি মনের ইচ্ছে থাকে সেটা, সেক্ষেত্রে একেবারেই কোনও সমস্যা নেই৷ ‘মায়ের বিয়ে’ ছবির গল্পটা সে কারণেই পছন্দ হয়েছে আমার৷

ছবিতে এমনই এক মায়ের চরিত্রে দেখা যাবে শ্রীলেখা মিত্রকে৷ সিঙ্গল মাদার৷ শ্রীলেখার মেয়ের চরিত্র আবার দেখা যাবে সায়নি ঘোষকে৷ অন্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রটিতে অভিনয় করছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী৷ শ্রীলেখা নিজেও সম্প্রতি সেপারেশনের পথ বেছে নিয়েছেন৷

আপনি ব্যক্তিগত জীবনেও কি এ কনসেপ্টকে সমর্থন করেন? শ্রীলেখা বলেন, দেখুন আমি এখনই আমার বিয়ের কথা ভাবছি না৷ কিন্তু এই কনসেপ্ট আমার কাছে ভীষণভাবেই গ্রহণযোগ্য৷ সাধারণত মা-বাবা'কে আমরা 'মা-বাবা' ভেবে নিয়েই বসে থাকি৷

কিন্তু মা'র জীবনেও যে একাকিত্ব থাকতে পারে, সেখান থেকে কারও সঙ্গে বাকি জীবন কাটানোর একটা ইচ্ছে থাকতেই পারে, সেটাই ভুলে যাই৷ পাশ্চাত্য থেকে আমরা এত কিছু গ্রহণ করি৷ সেক্ষেত্রে মায়ের বিয়ে দেয়ার কনসেপ্ট গ্রহণ করতেও কোনও অসুবিধে থাকার কথা নয়, যোগ করেন তিনি৷

পরিচালকদ্বয়ের ছবিতে সবসময়ই থাকে কমিক রিলিফ৷ তারই মধ্যে সমাজ থেকে তুলে আনা নানা সিরিয়াস ইস্যু নিয়ে একটা মেসেজ তুলে ধরার চেষ্টাও থাকে৷ এবারও ফর্মুলা একই তো?

অভিজিৎ গুহ হেসে বলেন, একদম, সমাজের একটা সিরিয়াস ইস্যু, সেটাকেও সহজ ভাবে একটা গল্পের মধ্যে বলার চেষ্টা রয়েছে এ ছবিতে৷ পরবর্তীকালে হাউজ হাজব্যান্ড নিয়েও একটা ছবি তৈরির প্ল্যান করছি আমরা৷ হাসতে হাসতে যোগ করছেন কে বলতে পারে, ছবিটা দেখার পর একেবারে নতুনভাবে ভাবতে শিখবেন না দর্শক?

এসকে মুভিজ প্রযোজিত ‘মায়ের বিয়ে’ মুক্তি পাচ্ছে আজ ২৫ সেপ্টেম্বর।
২৫ সেপ্টেম্বর/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে