বিনোদন ডেস্ক : বলিউডে আজ যারা স্টার অভিনেতা-অভিনেত্রী হয়েছেন তারা প্রায় সবাই নিজের বাব-দাদা বা আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যেমেই এখানে এসেছেন এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তবে এমন কিছু স্টার আছেন, যারা নিজের প্রচেষ্টায় বলিউডে এসেছেন। এবং জয়ও করেছেন। অথচ এদের চৌদ্দ পুরুষের কেউই ছিল না বলিউডে। এমনকি চলচ্চিত্র-নাটকেও ছিল না। শুধু তাই নয়, এসব তারকারা নিতান্তই ছোটখাটো চাকরি করতেন। আর সেখান থেকেই তারা উঠে এসেছেন। এবং সুপারস্টার থেকে শুরু করে মেগাস্টারও হয়েছেন। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারও।
রজনীকান্ত : বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমা জগতে তাকে মেগাস্টার বল হয়। বর্তমানে তার বয়স প্রায় ৭০। তাতে কি? এখনও তিনি নায়কের অভিনয় করছেন বেশ প্রতাপের সাথেই। শুধু তাই নয়, ভারতের সব অভিনেতার থেকেও বেশি পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন তিনি।
তবে একসময় এই রজনীকান্ত ব্যঙ্গালুরু ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসে কাজ করতেন। সেসময় কান্নাড়া ভাষার একটি পৌরাণিক নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে মঞ্চে কাজ শুরু করেন। তারপর অসংখ্য ব্যবসা সফল ছবিতে অভিনয় করেছেন এই তারকা। বর্তমানে তার ‘কাবলি’ ছবিটি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। আর এই ছবিটি মুক্তির আগেই ২০০ কোটি রুপি ব্যবসা করেও ফেলেছে। আর এতেই বুঝা যায়, তিনি কতটা জনপ্রিয়।
নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী : ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা তিনি। তার জন্ম ভারতের উত্তর প্রদেশের এক কৃষক পরিবারে। ছিলেন রসায়নবিদ। ভাগ্যের অন্বেষণে একসময় দিল্লিতে পাড়ি জমান। সেখানেই মঞ্চ অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মে এই অভিনেতার। পরে তাকে ভারতের জাতীয় নাট্যশালায় দারোয়ানের চাকরি করতে হয়েছিল দেড় বছর। এভাবেই নাট্যশালার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। সেখান থেকে বড় পর্দায় আগমন।
অক্ষয় কুমার : বলিউডে তাকে খিলাড়িখ্যাত অভিনেতা বলা হয়ে থাকে। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই তারকা। তার অসংখ্য ব্যবসা সফল ছবি রয়েছে। তবে তিনি বলিউডে নিজের যোগ্যতা এসেছেন। আর রাজ করছেন। একসময় তায়কন্দোতে ব্ল্যাক বেল্ট পাওয়ার পর মার্শাল আর্ট শিখতে ব্যাংকক গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে থাকতে তিনি একটি রেস্তোরার বাবুর্চি ও বেয়ারা হিসেবে কাজ করতেন। ভারতে ফিরে আসার পরে মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষক হিসেবে পেশা শুরু করেন। তার এক ছাত্রই তাকে ছোট একটি কোম্পানিতে টুকটাক মডেলিংয়ের সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
দেব আনন্দ : ভারতীয় সিনেমার এক অসম্ভব জনপ্রিয় নায়ক। নায়ক হওয়ার আগে সেন্সর অফিসে কেরানীর পদে চাকরি করতেন এই তারকা। তখন তাঁর মাসিক বেতন ছিল মোটে ১৬৫ রুপি। ভীষণ স্টাইলিশ এই নায়ক তাঁর সময়ের মেয়ে ভক্তদের মধ্যে ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
বোমান ইরানীর : বলিউড যাত্রা একটু বেশি বয়সে হলেও খুব অল্প সময়েই দর্শক মন জয় করতে পেরেছেন এই অভিনেতা। ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’-ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন বোমান। তাঁর আগে মুম্বাইয়ের তাজ মহল প্যালেস হোটেলের বেয়ারা ও রুম সার্ভিসের চাকরি করতেন। পারিবারিক একটি বেকারি চালাতে তাঁর মাকেও সাহায্য করতেন মাঝেসাঝে।
আরশাদ ওয়ার্সি : নায়ক হিসেবে সফল হতে না পারলেও পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে অনেক আলোচিত হয়েছেন তিনি। মূলত ‘মুন্না ভাই’ সিরিজের সার্কিট চরিত্রটি তাঁকে অনেক সফলতা এনে দেয়। কমেডি ঘরানার অনেক ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করে ঝুলিতে উঠেছে নানা পুরস্কার। অথচ একসময় মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রসাধনী বেঁচতেন এই তারকা। এরপর একটি ফটো ল্যাবে চাকরি নিয়েছিলেন। নাচের প্রতি প্রবল ঝোঁক থাকায় মুম্বাইয়ের একটি নাচের দলে যোগ দেন। এভাবেই মিডিয়ায় নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার হিসেবে টুকটাক কাজ শুরু করেন। বিখ্যাত নির্মাতা মহেশ ভাটের সহকারী হিসেবেও কাজ করেছিলেন আরশাদ। এভাবেই ধীরে ধীরে তাঁর অভিনয়ের দুনিয়ায় আগমন।
২৫ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন