বিনোদন ডেস্ক : মাইকেল জ্যাকসনের নাচ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। সেই মুগ্ধতাই টেনে নেয় তাঁকে নাচের জগতে। মৃত্যুভয় উপেক্ষা করেই নেচে নেচে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন আদিল ফারাজ। আইএস-এর গাড়িবোমা হামলা কেড়ে নিয়েছে ইরাকের এই তরুণ শিল্পীর প্রাণ।
আদিল ফারাজ ইরাক, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশেই পরিচিত নাম। পরিচিত নাচের কারণে৷ শৈশবে ডিভিডিতে পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের নাচ দেখে সেই যে মুগ্ধ হয়েছিলেন, মুগ্ধতার আবেশটা আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি৷ ঘরে বসে বসে ইউটিউবে শুধু মাইকেল জ্যাকসনের নাচ দেখতেন আর চেষ্টা করতেন সেভাবে নেচে সবার মন জয় করার।
অল্পদিনেই তাঁর চেষ্টা সার্থক হতে শুরু করে৷ দিল স্টেজে নাচ শেষ করেছেন অথচ উপস্থিত দর্শকরা করতালিতে চারপাশ মুখর করে তোলেনি, এমন কখনোই হয়নি।
তবে বেশিদিন সাধারণ মানুষের করতালি আর প্রশংসার মাঝেই থেমে থাকেনি ব্যাপারটা৷ ম্যানহাটান ভিত্তিক ব্যাটারি ড্যান্স কোম্পানির নজরে পড়ে যান আদিল৷ নাচের প্রশিক্ষণ দিতে তাঁকে জর্ডানে নিয়ে যায় ব্যাটারি ড্যান্স কম্পানি৷ তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি৷ প্রায় নিয়মিতই স্টেজে নাচতেন আদিল৷ জনপ্রিয়তাও বাড়ছিল দ্রুত।
গত রবিবার বাগদাদের এক বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন আদিল ফারাজ৷ ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে নিজের বাবা-মা আর তিন ভাইয়ের জন্য কেনাকাটা আর করা হয়নি তাঁর৷ তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর গাড়ি বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি৷ ওই বোমা হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৭৫ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
ভয়ঙ্কর এই গাড়িবোমা হামলার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে নেমেছে শোকের ছায়া৷ আদিল ফারাজের পরিবার এবং তাঁর অসংখ্য ভক্তও এখন শোকবিহ্বল৷ আদিলের ছোট ভাই বিলাল বলছিলেন, ‘‘আদিল চেয়েছিল নাচে আরো উন্নতি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে৷ চেয়েছিল বিয়ে করে সংসারজীবন শুরু করতে৷ কিছুই হলো না।''
কিছুদিন আগে জর্ডানের আম্মান শহরেই নাচতে গিয়েছিলেন আদিল৷ ২৩ বছর বয়সি ইরাকি তরুণ সেদিন গ্যারি জুলসের ‘ম্যাড ওয়ার্ল্ড' গানের সঙ্গে নেচেছিলেন৷ আদিল ফারাজের নাচ সেদিনও মুগ্ধ করেছিল সবাইকে৷ নাচ শেষে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া দেখে অভিভূত আদিল বলেছিলেন, ‘‘মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন দেখছি।'' এক জঙ্গি হামলা কেড়ে নিয়েছে তাঁর জীবনের সব স্বপ্ন৷ ‘পাগল পৃথিবী'-র স্মৃতি রেখে চলে গেছেন আদিল ফারাজ। -ডিডাব্লিউ
০৯ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম