বিনোদন ডেস্ক : নুসরাত ফারিয়া। উপস্থপনা ও মডেলিং দিয়েই শোবিজে তার পথচলা। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ফারিয়া অভিনীত ‘আশিকী’ সিনেমা।
এদিকে সিনেমা মুক্তির আগের থেকেই এই নায়িকাকে নিয়ে বাংলাদেশে চলছে তুমুল হৈ চৈ। তার কারণ হচ্ছে, তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বলিউডের বিতর্কীত অভিনেতা ইমরান হাশমির বিপরীতে ‘গাওয়াহ: দ্য উইটনেস’ সিনেমাতে।
তবে মজার ব্যাপর হলো গাওয়াহ: দ্য উইটনেস’ সিনেমাতে তার চরিত্রটি এখনো খোলাশা করেন নি পরিচালক বিষ্ণু দত্ত। তার ভাষ্যমতে, এ ছবির প্রধান চরিত্রে রূপদান করবেন ইমরান হাশমি, নওয়াজ উদ্দিন এবং পায়েল সরকার। সে ক্ষেত্রে ফারিয়ার চরিত্রটি কৌতূহলে ঘেরাই রয়ে যাচ্ছে। তারমানে কি! ফারিয়া কেন্দ্রীয় চরিত্রে নয়?
এদিকে ফারিয়ার বলিউডে অভিনয় নিয়ে বায়লাদেশে যে তোলপাড় চলছে তা কি প্রথম বলেই? কিন্তু বলিউডে বাংলাদেশি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় এটাই তো প্রথম নয়। এর আগেও বাংলাদেশি তারকারা বলিউডে কাজ করেছেন। রীতিমতো কেন্দ্রীয় চরিত্রেই অভিনয় করেছেন।
সে সব ছবি বক্স অফিসে তোলপাড়ও করেছে। সে তালিকায় ববিতা-শাবানা থেকে শুরু করে আছেন হাল আমলের রিয়াজ-ফেরদৌস পর্যন্ত। এমনকি একটি সিনেমায় পরিচালনাতেও ছিলেন একজন বাংলাদেশি।
ববিতা অভিনয় করেছিলেন হিন্দি সিনেমা ‘গেহরি চোট’ এ যেটি বাংলা ভাষায় ছিলো ‘দুরদেশ’। ছবিটি ১৯৮৩ সালে মুক্তি পায়। এ সিনেমাটি ছিল একাধারে ভারত, বাংলাদেশ ও কানাডার যৌথ-প্রযোজনা।
সিনেমাটির প্রযোজনা করেছিল কানাডাভিত্তিক ফ্রেন্ডস ফিল্মস এবং বাংলাদেশের এহতেশাম প্রোডাকশন। সিনেমাটির পরিচালনায়ও ছিলেন ভারত-বাংলাদেশের দুইজন গুণী নির্মাতা— ভারতের অম্ব্রিশ সান্যাল এবং বাংলাদেশের এহতেশাম।
থ্রিলার ঘরানার সিনেমাটির শুটিং হয়েছিল কানাডার টরন্টোতে। মূল চরিত্রগুলোতে অভিনয় করেছিলেন ভারতের শশী কাপুর, শর্মিলা ঠাকুর, রাজ বাবর, পারভীন ববি, ডেভিড আব্রাহাম, বাংলাদেশের ববিতা এবং ভারতের নাদিম বেগ। সিনেমাটিতে অভিনয়ের কিছুদিন পরেই ডেভিড আব্রাহাম মারা যান।
অন্যদিকে রোজিনা অভিনয় করেছিলেন বলিউডের ‘আর পার’ সিনেমাতে। এই ছবিটি ১৯৮৫ সালে মুক্তি পাওয়া বলিউডের ‘আর পার’ সিনেমাটিও ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত। শক্তি সামন্ত পরিচালিত অ্যাকশন ঘরানার এই সিনেমাটিতে কাস্ট করা হয় দুই দেশের অভিনয় শিল্পীদের।
ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে মিঠুন চক্রবর্তীর বিপরীতে অভিনয় করেন রোজিনা। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন ভারতের রাজেশ খান্না, মন্দাকিনী, উৎপল দত্ত, মানিক দত্ত, তরুণ ঘোষ, অসিত কুমার সেন এবং বাংলাদেশের সুমিতা দেবী, গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ হাসান ইমাম, এটিএম শামসুজ্জামান, আহমেদ শরীফ, অমল বোস প্রমুখ।
সিনেমাটি পরে ‘অন্যায় অবিচার’ নামে বাংলায়ও মুক্তি দেয়া হয়। সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেন আর ডি বর্মণ।
বলিউডের সুপার হিট সিনেমা ‘শত্রু’তে অভিনয় করেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী শাবনা। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৮৬ সালে। এটিও ছিলো ভারত-বাংলাদেশ যৌথ-প্রযোজনার সিনেমা। মূলত ১৯৮৪ সালের টালিগঞ্জের রঞ্জিত মল্লিক অভিনীত শত্রু সিনেমাটিই একই নামে রিমেক করা হয়।
প্রমোদ চক্রবর্তী পরিচালিত অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার সিনেমাটিতে ভারতের রাজেশ খান্নার বিপরীতে অভিনয় করেন বাংলাদেশের শাবানা। এ ছাড়াও অভিনয় করেন গোলাম মোস্তফা এবং সৈয়দ হাসান ইমাম। আর ডি বর্মণের সংগীত পরিচালনায় লতা মুঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলের পাশাপাশি কণ্ঠ দেন অ্যান্ড্রু কিশোর। ছবিটি ব্যবসাও বেশ ভালো করে। বক্স অফিস থেকে তুলে আনে ১ কোটি ৭০ লাখ রুপি।
বাংলাদেশের ফেরদৌস অভিনয় করেছিলেন বলিউডের সিনেমা ‘মিট্টি’তে। ইকবাল দুররানির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় ছবিটি বলিউডে মুক্তি পায় ২০০১।
হিন্দি ক্রাইম-থ্রিলার ঘরানার সিনেমাটিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন বাংলাদেশের ফেরদৌস। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন শর্বানি মুখার্জি, রানি রাজকুমার, আরিফ জাকারিয়া, কূলভূষণ খরবন্দ, বিশাল রেড্ডি প্রমুখ।
সিনেমাটি বক্স অফিসে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও, দর্শক-সমালোচকদের প্রশংসা ঠিকই কুড়াতে সক্ষম হয়।
বাংলাদেশেরে রিয়াজ অভিনয় করেছিলেন বলিউডের ‘ইট ওয়াজ রেইনিং দ্যাট নাইট’ সিনামাতে। এটি ছিলো ভারত ও আমেরিকার যৌথ প্রযোজনার সিনেমা। এটি একই সঙ্গে ইংরেজি ও বাংলায় মুক্তি পায় ২০০৫ সালে।
মহেশ মাঞ্জরেকারের পরিচালনায় সিনেমাটিতে বাংলাদেশের রিয়াজ অভিনয় করেন সুস্মিতা সেনের বিপরীতে। সিনেমাটিতে অন্যান্যদের মধ্যে অভিনয় করেন ভারতের রিয়া সেন, ভিক্টর ব্যানার্জি, মুনমুন সেন, অতীত শাহ এবং আমেরিকার ডন মুয়েলার, স্টেফানি সিগেল।
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন