শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৬, ১২:২৪:১৯

‘তারা আমার নাম দিলেন ববিতা’

‘তারা আমার নাম দিলেন ববিতা’

বিনোদন ডেস্ক: জীবনের ৬২টি বছর পার করে ৬৩-তে পা দিচ্ছেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতা। শনিবার (৩০ জুলাই) তার জন্মদিন। বিখ্যাত চিত্রপরিচালক ও কথাশিল্পী জহির রায়হানের নায়িকা হয়েই চলচ্চিত্রে পা রাখেন ববিতা। জন্মদিনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ববিতা বেশ নষ্টালজিক। কীভাবে তার নায়িকা জীবন শুরু হয়েছিলো, ফিরে গেলেন সেই সব দিনে-

‘মা (বেগম জাহানারা) ডাক্তার ছিলেন। আমিও ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। লেখাপড়ায়ও ভালো ছিলাম। খুব ছোটবেলায় সুচন্দা আপার সঙ্গে মাঝে মাঝে শুটিংয়ে গিয়ে দেখতাম, একই শট তিনি বারবার দিচ্ছেন। খুব বিরক্ত লাগত, বোন এত কষ্ট করছে? সিনেমা করতে এত কষ্ট করতে হয়? সিদ্ধান্ত নিলাম, অভিনয় করবো না। এরমধ্যে জহির (রায়হান) ভাইয়ের সঙ্গে আপার বিয়ে হলো। তিনি বিখ্যাত পরিচালক, দুলাভাই হলেন। তিনি বললেন, ‘পপি (ডাকনাম), আমার সিনেমায় তোকে টিনএজ মেয়ের অভিনয় করতে হবে।’ বয়সও তখন ১২-১৩। আমি বেঁকে বসলাম- ভালো লাগে না, করবো না। মা-বোন খুব বোঝালেন, দুলাভাই বলছে, কর। ছবিটির নাম ‘সংসার’। রাজ্জাক ভাই আমার বাবা, সুচন্দা আপা মা।’

তখন তার নাম ফরিদা আক্তার পপিই আছে। ববিতা হয়নি। ‘সংসার’ এর বছর দুয়েক পর জহির রায়হান যখন পরের ছবি ‘জ্বলতে সুরজ কি নিচে’তে হাত দিলেন, নায়িকা শবনমের শিডিউল পাচ্ছিলেন না। ববিতা বলছেন, ‘ছবির প্রযোজক বিখ্যাত ক্যামেরাম্যান আফজাল চৌধুরী বললেন, ‘এত দুশ্চিন্তা করছ কেন? তোমার ঘরেই তো নায়িকা আছে।’ জহির ভাই যখন বললেন, রিফিউজ করে দিলাম। আগের মতোই মা-বোন বোঝাতে লাগলেন, ‘এই ছবিতে নায়িকা হবে, নাদিমের সঙ্গে অভিনয় করবে। করো।’ বললাম, এক শর্তে করতে পারি—এটাই হবে প্রথম এবং শেষ। আফজাল ভাই আর তার স্ত্রী মিলে আমার নাম দিলেন ববিতা।’

ছবিটি শেষ পর্যন্ত হয়নি। বড় আর্টিস্টদের শিডিউল পাওয়া গেল না, পশ্চিম পাকিস্তানে শুটিং করতে হবে ইত্যাদি কারণে ছবিটি আটকে গেল। জহির রায়হান ববিতাকে নায়িকা করেই আরেকটি ছবির প্লান করলেন ‘শেষ পর্যন্ত’।

প্রথম ছবিতে যিনি ছিলেন ববিতার বাবা, এ ছবিতে তিনিই নায়ক! ববিতা বলছেন, ‘ছবিটি করতে গিয়ে খুব অস্বস্তি হলো- কয়েক দিন আগেও যাকে বাবা ডেকেছি, এখন তিনি আমার প্রেমিক, তাকে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতে হবে! লজ্জায় অভিনয় করতে পারছিলাম না।’ এ ছবিটি ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট মুক্তি পায়।

সেই থেকে ‘নায়িকা ববিতা’র যাত্রা শুরু। দুর্ভাগ্যক্রমে ওই দিনই তার মা মারা যান। ‘শেষ পর্যন্ত’ ছবির পারিশ্রমিক তিনি পেয়েছিলেন ১২ হাজার টাকা। ওই টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছিলেন ববিতা।-বাংলামেইল
৩০ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে