কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): রাত ১টায় অস্ত্রোপচারের (সিজার) মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন তিনি। এর ২৪ ঘণ্টা পর গতকাল শনিবার বেলা ১টায় নবজাতককে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষার হলে এসে স্নাতক (পাস) পরীক্ষা দিলেন ওই মা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা টি. আলী কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া ওই মায়ের নাম রৌশনারা বেগম।
পরীক্ষার্থীর পরিবার ও কলেজসূত্রে জানা গেছে, রৌশনারা উপজেলার কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের আকছিনা গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৬ সালে বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের সংকুচাইল গ্রামের সালাউদ্দিন সোহাগের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। রৌশনারা কসবা মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক (পাস) পরীক্ষার তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিচ্ছেন। আর মাত্র একটি পরীক্ষা বাকি আছে তাঁর।
গত শুক্রবার রাতে রৌশনারার প্রসব ব্যথা উঠলে তাঁকে উপজেলার কুটি চৌমহনী সেন্ট্রাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর একটি ছেলে হয়। পরদিনই (গতকাল) রৌশনারা তাঁর বড় বোন ইয়াছমিন আক্তার ও মা নুরজাহান বেগমকে সঙ্গে নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নবজাতককে নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসেন। পরীক্ষা শেষে আবারও হাসপাতালে ফিরে যান তিনি।
সরেজমিনে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, রৌশনারা অন্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন। পাশের একটি কক্ষে নবজাতকটিকে তোয়ালে দিয়ে মুড়িয়ে কোলে নিয়ে বসে আছেন রৌশনারার বড় বোন ও মা। ঘণ্টাখানেক পরপর গিয়ে নবজাতকে দেখে আসছেন মা রৌশনারা।
পরীক্ষা শেষে রৌশনারা বলেন, ‘পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। নতুবা আমার জীবন থেকে একটি বছর চলে যেত। সকালেও চিন্তা করতে পারিনি পরীক্ষায় অংশ নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই পরীক্ষা দিতে এসেছি।’
কক্ষ পরিদর্শক কসবা টি. আলী কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আলমগীর উসমান ভূইয়া বলেন, ‘এটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। রৌশনারার কাছে অসুস্থতাও হার মেনেছে। প্রত্যেক মেয়ের এ ধরনের সাহস থাকা প্রয়োজন।’
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস