ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে : পরকীয়ার জন্য আলোচিত-সমালোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফারজানা রতন সোনিয়া এখন কারাগারে। কানাডা থেকে দেশে ফেরার পরই মঙ্গলবার ঢাকা বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। সোনিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতনের সাবেক স্ত্রী।
স্বামীর ঘরে থেকেই জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিক আহমেদের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সোনিয়া। মোবাইল ফোনে তাদের মধ্যে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তার ভিত্তিতে ২০১৬ সালের জুন মাসে ঢাকার গুলশান থানায় আইসিটি আইনে মামলা করেন সোনিয়ার স্বামী আবদুল হান্নান রতন। পরে মামলাটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। ওই আদালতে মামলাটির চার্জ গঠন করা হয়। মামলায় তৌফিক ও সোনিয়াকে আসামি করা হয়।
২২ ডিসেম্বর সোনিয়া কানাডা থেকে দেশে ফেরার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শ্রীরামপুরে গ্রামের বাড়ি হওয়ায় ওই থানা পুলিশের কাছে তাকে সোপর্দ করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন জানান, ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা তাকে পরে আদালতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।
নবীনগর থানার ওসি মো. আমিনুর রশিদ শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, সোনিয়াকে পরদিনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে প্রেরণ করেছেন তারা। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান। এরপর বৃহস্পতিবার তার জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে ৩ ডিসেম্বর স্বামী আবদুল হান্নান রতনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সোনিয়া ও তার পরকীয়া প্রেমিক জেলা আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ তৌফিক আহমেদকে ঢাকা মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ সময় পাঁচশ' টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। এদিকে আদালতে অনুপস্থিত থাকায় আদালত সোনিয়ার বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ মামলায় অভিযোগ করা হয়- জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতনকে ২০১৬ সালের ১ মে রাত ৯টার দিকে ঢাকার গুলশান এলাকার ১২১/১২২ নম্বর রোডের মাঝখানে তার সাবেক স্ত্রী সোনিয়া ও পরকীয়া প্রেমিক সৈয়দ তৌফিক আহমেদ হত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান রতন। এ ঘটনায় ওই রাতেই আবদুল হান্নান রতন বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গুলশান থানা পুলিশ তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।