চাঁদপুর : স্কুলের বকেয়া বেতন না দেয়ায় মাঠে দাঁড় করিয়ে শাস্তি দেয়ায় লজ্জা-অপমানে নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রী।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে চাঁদপুর সদরের বাগাদী গ্রামের শেখ বাড়িতে আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে।
নিহত ছাত্রী সাথী আক্তার (১৩) দেলোয়ার হোসেন শেখের মেয়ে। সে বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে পড়ত।
জানা গেছে, পরীক্ষার নির্ধারিত ফি ৪০০ টাকা। এর মধ্যে সাথী ৩২০ টাকা পরিশোধ করে। বাকি থাকে ৮০ টাকা। এ টাকার জন্য সাথীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গতকাল রোববার বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন রোদের মধ্যে এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখেন। পরে অন্য শিক্ষকরা তাদের শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যান।
সাথীর মা শায়লা বেগম বলেন, আজ সকালে সাথী বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে তার কাছে পরীক্ষার ফি পরিশোধ করার জন্য ৮০ টাকা চায়। তিনি বাড়ির অন্যদের কাছে টাকা জোগাড় করার জন্য যান। তখন সাথী বিদ্যালয়ে না গিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়।
ছাত্রীর বাবা জানান, রোববার দুপুরে পাওনা পরিশোধ না করায় স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে মাঠে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখে।
তিনি জানান, সোমবার সকালে মেয়েকে স্কুলের বকেয়া পাওনা পুরো টাকা দিতে পারেননি। স্কুলে গেলে আবারো অপমান হতে হবে এ লজ্জায় সে দুপুর ১টায় নিজ ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ খবর শোনার পর এলাকাবাসী দুপুর ২টায় স্কুলের গেইট, দরজা, জানালা ভাঙচুর করে। এসময় স্কুল বন্ধ করে স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা বাড়িতে চলে যান।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন মজুমদার জানান, বেতন ভাতাদির জন্য ছাত্রীকে কোনো চাপ প্রয়োগ বা শাস্তি দেয়া হয়নি। সে কি কারণে আত্মহত্যা করেছে জানেন না তিনি।
এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বিল্লাল জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের শাস্তির ভয়েই ছাত্রীটি আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। প্রকৃত ঘটনা জানতে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।
২৯ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম