সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৩৮:৪৪

আলমগীরকে ভালোবেসে চাঁদপুরে এসে সংসার করছেন ভিয়েতনামী কন্যা

আলমগীরকে ভালোবেসে চাঁদপুরে এসে সংসার করছেন ভিয়েতনামী কন্যা

চাঁদপুর থেকে : ভিয়েতনামী এক কন্যা বাংলাদেশি যুবক আলমগীর (৩৫)কে ভালোবেসে এদেশে সংসার পেতেছেন। ভালোবাসার সূচনা মালয়েশিয়ায় হলেও প্রেমিক যুগল এটিকে বাস্তবে রূপ দিতে ছুটে আসেন দেশের বাড়িতে। মানুষের বিড়ম্বনা এড়াতে দীর্ঘদিন থাকেন তারা লোক চক্ষুর আড়ালে।

সম্প্রতি প্রেমিক যুগল তাদের এলাকায় রাস্তায় ঘুরে উপস্থিতি জানান দিলে উৎসুক মানুষ ও গণমাধ্যম কর্মীরা খুঁজতে থাকেন হ্যানয় টু শাহরাস্তির প্রেমকাহিনী। চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার পৌর শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের লদের বাড়ির মৃত মোবারক হোসেনের পুত্র মো. আলমগীর হোসেন ১০ বছর আগে জীবিকার প্রয়োজনে মালয়েশিয়ায় জোহরবারুতে পাড়ি জমান। সেখানে চাইনিজ কোম্পানি মিতরিয়া-এস,টি,এ-১তে চাকরি জুটিয়ে নেন। এ ভাবে দেশ-বিদেশ মিলে চলতে থাকে তার জীবন।

আলমগীরের বাড়িতে সরজমিন গিয়ে জানা যায়, তার মা খোদেজা বেগম (৪৫) পুত্রবধূ টিউ থিতু (৩০)কে নিয়ে খোশ মেজাজে রয়েছেন। শাশুড়ির কথা বলার ইশারা পেয়ে, মিষ্টিভাষী পুত্রবধূ টিউ থিতু ইংরেজিতে হ্যানয়-ঢাকা-শাহরাস্তি পর্যন্ত আসার প্রেমগল্প শুরু করেন।

তিনি জানান, ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে বাকান থানার ওয়েন তোং মহল্লায় তার জন্ম। সেখানে পিতা মৃত চি ইউ তাই (৯০) মা টিউ থিতু নিয়াত (৭৫) ও ৪  ভাই, ৩ বোনের মাঝে থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা শেষ করেন। তারপর একসময় বড় দু’ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এতে পরিবারটিতে নেমে আসে চরম অভাব ও হতাশা। তখনই সবার আদরের ছোট মেয়ে থিতু পাড়ি জমান মালয়েশিয়ার জোহরবারুতে।   

সেখানে ২০০৬ সালে চাইনিজ ইলেকট্রনিক কোম্পানি মিতরিয়া এস টি এ-২তে সি এম এম পদে ১ হাজার ৭ শত রিংগিত বেতনে যোগ দেন। আলমগীর আর থিতুর ফ্যাক্টরি পাশাপাশি হওয়ায় দুজনার দেখাদেখি হতো। এ দেখাদেখির এক পর্যায়ে দুজন একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেন। ওই ভালোবাসার প্রথম কথা হয় ২০১৬ সালের মে মাসে। এ কথা বলাবলি     প্রেমের গভীরতা যেন একদমই সই ছিল না। ওই শুভ কাজ সারতে টিউ থিতু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নুর আমিনা নাম পরিবর্তন করেন। জুন মাসে তারা বসে পড়েন বিয়ের পিঁড়িতে। এ ভাবে চলতে থাকে দু’জনার সংসার।  
     
কিছু দিন গড়াতেই আমিনা বুঝতে পারেন তিনি মা হতে চলেছেন। সমস্যা ঘটে এদেশে বাচ্চা হলে অনেক  রিংগিত দিতে হবে মালয় সরকারকে। ওই টাকার চাপ সামলাতে গত বছরের ২০শে ডিসেম্বর তারা ঢাকায় অবস্থান নেন। সেখানে দীর্ঘ দিন থাকার পর সম্প্রতি গ্রামের বাড়ি শাহরাস্তিতে ফিরে আসেন। আসার দিন হাজার হাজার মানুষ বিদেশি বউকে একনজর দেখতে ভিড় জমায়। চলতি বছরের ১৭ই মার্চ তিনি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। তার ওই ১ মাস বয়সী বাচ্চার নাম আবিদ হাসান শিহাব। এদিকে স্বামী আলমগীর গত ২৭ মার্চ জীবিকার প্রয়োজনে মালয়েশিয়া উড়ে যান।

আমিনা জানান, তিনি মূলত চাইনিজ খাবারে অভ্যস্ত। তারপরও বাংলা খাবার মানিয়ে খাচ্ছেন, পানি হিসেবে মিনারেল ও নাস্তা বলতেই ফলমূল মুখে তুলছেন। তার বড় সমস্যা ভাষা। পরিবারের অন্য সদস্যরা ইংরেজিতে দখল না থাকায় দিন কাটে কথা না বলার কষ্টে। তারপর বুদ্ধিমতি আমিনা আকার ইঙ্গিতে সবাইকে সামলিয়ে নিচ্ছেন।

স্বামী আলমগীরের  সঙ্গে ইমুতে যোগাযোগের মাধ্যমে ও বাচ্চা শিহাবকে বুকে জড়িয়ে বাকি সময় পার করছেন। এছাড়া তিনি হ্যানয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলছেন। এমজমিন
২৪ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে