সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:৫৯:৩১

চাঁদপুরের মাছঘাটে আজ হঠাৎ ইলিশের কেজি কত হলো জানেন?

চাঁদপুরের মাছঘাটে আজ হঠাৎ ইলিশের কেজি কত হলো জানেন?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ইলিশ আহরণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ। ফের নদীতে শুরু হয়েছে মাছ শিকার। রোববার প্রথম দিনই চাঁদপুরের মাছঘাট সরগরম দেখা গেছে। নদ-নদীতে নানা প্রজাতির মাছের সঙ্গে পাঙাশ পেয়ে জেলেরা ভীষণ খুশি। 

এছাড়া জালে সামান্য কিছু ইলিশও ধরা পড়েছে। জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে চাঁদপুরের মেঘনা ও মুন্সীগঞ্জ-শরীয়তপুরের পদ্মা নদীতে জাল ফেলেও আশানুরূপ ইলিশ মিলছে না। তার পরিবর্তে জালে উঠে আসছে অসংখ্য পাঙাশ। তবে দাম ভালো পাওয়ায় তাদের ইলিশ না পাওয়ার আক্ষেপ কিছুটা কমেছে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত সরকার জানান, এখানে ইলিশ ধরা পড়ছে খুবই কম। যাওবা ধরা পড়ছে সেগুলো আকারে ছোট। ইলিশের জালে উঠে আসছে বড়সড় পাঙাশ। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ইলিশ মিলিয়ে প্রথম দিন অবতরণ কেন্দ্রে ৬০০ থেকে ৭০০ মন আমদানি হয়েছে। এর সঙ্গে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মন নদীর পাঙাশও এসেছে। চাঁদপুর মাছঘাটে আসা বেশির ভাগ ইলিশই আকারে ছোট।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, চাঁদপুর মাছঘাটে প্রচুর মাছের সমাগম দেখা গেছে। ইলিশের পাশাপাশি প্রচুর পাঙাশও উঠেছে। মার্চ এপ্রিল মাসে জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রমের সময় পাঙাশের পোনা সুরক্ষিত থাকায় এ সুফল পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সুফল মিলেছে। তিনি বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সরকারের অনেক সংস্থা যেমন জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ, জেলা পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করার ফলেই এ সুফল পাওয়া গেছে।

এদিকে, চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটের আড়তদার ফারুক চোকদার জানান, ইলিশের মতো পাঙাশ মাছের পোনা সময় মতো সংরক্ষণ করা গেলে বড় পাঙাশ মাছের উৎপাদন আরও বাড়বে। এ ব্যাপারে মৎস্য দপ্তরের নজরদারি জোরদার করতে হবে। মৎস্যজীবী নেতা তছলিম বেপারি বলেন, ইলিশের জালে এখন ঝাঁকে ঝাঁকে বড় বড় পাঙাশ মাছও স্থানীয় নদ-নদীতে ধরা পড়ছে। রোববার চাঁদপুর ঘাটে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ পাঙাশ মাছের দেখা গেছে। একেকটা পাঙাশের সাইজ হবে ৭-৮ কেজি থেকে ১০-১২ কেজি। ইলিশের আমদানিও মোটামুটি দেখা গেছে। তবে ছোট ইলিশের সংখ্যাই বেশি।

কার্তিকের শুরুতে অন্য বছরের মতো এবার শীত শুরু না হলেও দরজায় কড়া নাড়ছে। এসময়ে স্বাভাবিকভাবেই চাঁদপুরের নদ-নদীতে পাঙাশের আনাগোনা শুরু হবার কথা। এবারও এর ব্যতিক্রম নয় এবং সংখ্যায়ও অনেক বেশি। নদীতে পাঙাশের আধিক্যের কারণে বড় সাইজের মাছ ৭০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা এবং মাঝারি থেকে ছোট আকারের প্রতি কেজি ৬০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। তবে আগে পরে এসব পাঙাশ প্রতি কেজি এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায়ও বিক্রি হয়েছে বলে আড়ৎদার ও মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের মতে, ২০১৯ সালে মূল প্রজনকালীন সময়ে দেশের প্রধান ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রসমূহে পরীক্ষামূলক নমুনায়নে ৮৩% ইলিশের রেণু পোনার সঙ্গে ১৭-২০% পর্যন্ত অন্যান্য মাছের রেণু পোনাও পাওয়া গেছে। ফলে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন ২২ দিনে অন্যান্য মাছের নিরাপদ প্রজননও সফলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। যা দেশে অন্যান্য প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করছে বলে মৎস্য গবষেণা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে