ফারুক আহম্মদ, চাঁদপুর থেকে: চাঁদপুর শহরের একটি ফ্ল্যাট বাড়িতে কথিত জিনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে একটি পরিবার। শুধু তাই নয়, ভোগান্তি থেকে বাঁচতে একই ভবনের অপর ফ্ল্যাটে অবস্থান নেওয়ার পরও ‘জিন’ পিছু ছাড়েনি। গত ৫ দিন ধরে শহরের ট্রাক সড়কের শাহজালাল মোল্লার বহুতলাবিশিষ্ট ওই ফ্ল্যাট বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটে চলেছে বলে দাবি করেন বাসিন্দারা। ‘অদৃশ্য শক্তির’ এমন কাণ্ডকারখানা দেখে এরই মধ্যে সেখানে মাওলানাদেরও ডাকা হয়েছে। কিন্তু তাদের তদবিরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২এর উপমহাব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলাম তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে শহরের মিশন রোড রেলক্রসিং সংলগ্ন ট্রাক রোডে রোজ গার্ডেন নামের ওই ফ্ল্যাট বাড়ির চতুর্থ তলায় থাকেন। হঠাৎ করে গত ৫ দিন ধরে তার বাসায় থালাবাটি ছুঁড়ে ফেলা, জিনিসপত্র এলোমেলো করা এবং দেয়ালে ছায়ার ঘোরাফিরা করার ঘটনা মতো ঘটছে বলে জানান মনিরুল। এছাড়া অদৃশ্য অবয়ব একটি কক্ষের মেঝেতে দুর্বোধ্য কিছু লিখে করে রেখে যায় বলেও জানা যায়।
মনিরুল জানান, গত ১৫ আগস্ট বাসায় তিনি একাই ছিলেন। একপর্যায়ে তার আশপাশে থালাবাটি ছুঁড়ে ফেলা, চেয়ার নিয়ে টানাটানি এবং দেয়ালে নানান কিসিমের ছায়া দেখতে পান তিনি। আজগুবি ভূতুরে এমন কাণ্ডকীর্তিতে তিনি ভয় পেয়ে যান।
শেষে দৌড়ে পাশের বাসায় আশ্রয় নেন। পরে অন্যরা তার ফ্ল্যাটে গিয়ে একই অভিজ্ঞতার মুখে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া তার পরিবারের সদস্যদের বাসায় ফিরতে নিষেধ করে দেন। একই সঙ্গে গত শুক্রবার তিনি চতুর্থ তলার বাসা ছেড়ে পঞ্চম তলায় উঠেন। কিন্তু সেখানেও একই পরিস্থিতির মুখে পড়েন। ওই দিনই তিনি এক হুজুরের কাছ থেকে তাবিজ-কবজ নিয়ে আসেন।
বিষয়াদি দেখে মনে হচ্ছে, তাকে ঘিরেই চলছে এসব অলৌকিক কাণ্ডকীর্তি। অদৃশ্য শক্তির এমন কাণ্ডকারখানা থেকে বাঁচতে তাবিজ-কবচ ছাড়াও মাওলানাদের ডেকে নানান তদবির করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে জানা গেছে। কথিত জিন কোনো অবস্থায় তার বাসা ছাড়ছে না।
এ প্রসঙ্গে প্রবাসে বসবাসকারী রোজ গার্ডেন নামের ওই ফ্ল্যাটের মালিক শাহজালাল মোল্লার কেয়ারটেকার আবু তাহের বলেন, ঘটনাটি প্রথমে আমাদের বিশ্বাস হয়নি। কারণ, ৮ বছর আগে তৈরি করা এই বাড়িতে আর কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি।
একই ফ্ল্যাটের অপর ভাড়াটিয়া ওষুধ ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ওই বাসায় কথিত জিনের আলামত আমরাও দেখেছি। এখন এই নিয়ে অন্য বাসার পরিবারগুলোতে এক ধরণের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আরেক ভাড়াটিয়া শাওন জানান, তিনিও জিনের আলামত লক্ষ্য করেছেন। তাই পরিবারের নিরাপত্তার খাতিয়ে তারাও বাসা ছেড়ে দেবার চিন্তা ভাবনা করছেন।
এদিকে, রবিবার বিকেলে পল্লীবিদ্যুত সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলাম জানান, তিনি শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বাসাটি ছেড়ে দেবেন। প্রসঙ্গত, ৬ তলাবিশিষ্ট রোজ গার্ডেন নামের এই ফ্ল্যাটে মোট ২৩টি পরিবার বসবাস করছে এখন।-কালের কণ্ঠ
এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস