চাঁদপুর: চাঁদপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী ও ফরিদগঞ্জ গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহীন সুলতানা ফেন্সিকে পরিকল্পিতভাবে স্বামী জহিরুল ইসলাম খুন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রবিবার(১০ জুন) দুপুরে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের দুই মেয়ে ফারজানা শাহীন পদ্ম ও ডা. ফাতিমা শাহীন পুষ্প এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুষ্প বলেন, ‘আমার বাবা গত ৪ বছর পূর্বে জুলেখা বেগম নামে এক বিবাহিতা এবং স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত তিনি সকলের অগোচরে ওই মহিলাকে বিয়ে করেন।
আমার বাবার এই অনৈতিক সম্পর্ক ও পরবর্তীতে বিবাহ করা আমরা বোনেরা এবং আমার মা কখনোই মেনে নেয়নি, যা নিয়ে আমার মায়ের সাথে বাবার প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। আমার বাবা আমার মাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।’
পুষ্প আরও বলেন, ‘আমার বাবা প্রকাশ্যেই আমার মাকে জীবননাশের হুমকি দিতেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রীও মোবাইলে আমার মাকে হত্যার হুমকি দিতেন, যা আমরা বোনেরা বহুবার দেখেছি এবং শুনেছি।’
নিহত ফেন্সির বড় মেয়ে ফারজানা শাহীন পদ্ম বলেন, ‘মা জীবদ্দশায় আমাদের বলতেন, আমার যদি অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়, তাহলে তোমরা তোমাদের পিতাকে ছাড় দিও না। আমার বাবাই যে খুনি, এটি তার প্রমাণ।’
পদ্ম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বাবা পূর্ব পরিকল্পনা মতো তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সহযোগিতা ও প্ররোচনায় আমার মাকে খুন করেন। পরববর্তীতে আমার পিতার ছোট ভাই নয়ন ও বোন রানুর সহযোগিতায় খুনের আলামত নষ্ট করে খুনকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে।’
গত ৪ জুন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কোনো এক সময় নিজ বাড়িতে খুন হন ফরিদগঞ্জ গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও আওয়ামী লীগ নেত্রী ফেন্সি।
পুলিশ এ ঘটনায় ফেন্সির স্বামী চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলাম এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে আটক করে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিহত ফেন্সির ছোট ভাই ফোরকান উদ্দিন খান ও বড় ভাই নঈম উদ্দিন খান।
উল্লেখ্য, শাহিন সুলতানা ফেন্সি চাঁদপুর মহিলা কলেজের সাবেক ভিপি ছিলেন। এছাড়াও তিনি চাঁদপুর জেলে মহিলা লীগের দীর্ঘ দিন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।