চাঁদপুর : চাঁদপুরে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষচাঁদপুর শহরে বিএনপি আওয়ামী-লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে দুই দলের নেতাকর্মীদের মাঝে এ সংঘর্ষ হয়। এতে দুই দলের ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. দীপু মনি ও বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে বিএনপি প্রার্থী নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রচারণায় বের হলে সেখান থেকে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাড. সলিম উল্লা সেলিমকে আটক করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় অবস্থান নেন শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। খবর পেয়ে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী কয়েক ঘণ্টা থানার সামনে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে বিএনপি প্রার্থী নেতাকর্মীদের থানার সামনে থেকে নিয়ে জেএম সেনগুপ্ত রোডে তার বাসার সামনে গেলে পাশেই ডা. দীপু মনির বাসার সামনে থাকা কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই দলের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছোঁড়ে। লাঠিসোটা নিয়ে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ বাড়ির গেট ভাঙচুর করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আর ডা. দীপু মনির বাড়িতে হামলার অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয় সম্পাদক জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘আমরা সবাই ডা. দীপু মনির বাসায় নির্বাচনি কাজ করছিলাম। হঠাৎ বাসাকে লক্ষ্য করে অসংখ্য ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে বাইরে গিয়ে দেখি বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীর বাড়ির সামনে থাকা জটলা থেকে একেবারে পরিকল্পিতভাবে তাদের অনেক সংখ্যক লোক চারদিক থেকে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় আমাদের প্রায় ১০ জন লোকের মাথা ফেটে যায়। এ অবস্থার খবর পেয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা এসে সঙ্ঘবদ্ধভাবে তাদের পাল্টা ধাওয়া করলে তারা বিএনপি প্রার্থীর বাসায় ঢুকে যায়। পুলিশ অনেক পরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। কারণ, আমরা আমাদের ফলাফলের বিষয়ে নিশ্চিত। তাই নির্বাচনের এই আগ মুহূর্তে এসে আমরা কোনোভাবেই সংঘাতে জড়াতে চাই না। বিএনপি প্রার্থীর নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে নির্বাচনের আগে একটা বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছি। তখন আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবো না।’
এদিকে জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি শাহজালাল মিশন বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আমরা গণসংযোগে নামার সময় আমাদের নেতা অ্যাড. সলিম উল্যা সেলিমক থানা নিয়ে যায়। কেন তাকে আটক করা হচ্ছে এ বিষয় জানতে বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক থানায় যান। এ সময় তার সঙ্গে কিছু নেতাকর্মীও যায়। পরবর্তীতে থানা থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে বিএনপি প্রার্থীর বাসার দিকে আসছি। এ সময় বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ভাইয়ের বাসা থেকে প্রায় ৫০ গজ দূরে অবস্থিত মাননীয় সংসদ সদস্য দীপু আপার বাসা। সেখান থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারা বিএনপি প্রার্থীর বাসায়ও হামলা চালায়। গেট ভাঙচুর করে।’
চাঁদপুরে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাছিম উদ্দিন জানান, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। এখনও কেউ কোনও অভিযোগ করেনি, তাই মামলাও হয়নি।’-বাংলা ট্রিবিউন