নিউজ ডেস্ক: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় মসজিদে ঢুকে ইমামের ওপর তিনজন তরুণী হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্পর্কে তারা তিন বোন বলে জানা গেছে। গত বুধবার ভোরে উপজেলার ১৬ নম্বর রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রকিব জানান, প্রেমের পর বিয়েতে রাজি না হওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে।
ওই তিন বোনের বাবার অভিযোগ, মসজিদের ইমাম অনেক দিন ধরে এলাকার কিছু বখাটে ছেলেদের নিয়ে তার এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছেন। এ নিয়ে তিনি মসজিদ কমিটির সভাপতির কাছে নালিশও করেন। কিন্তু কোনো ফল পাননি। তার মেয়েরা উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করতে যান। সে সময় তার মেয়েদের ইমাম মারধর করেন। বর্তমানে তার এক মেয়ে হাসপাতালে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার ভোরে ফজরের নামাজের পর মোনাজাত চলছিল। এ সময় বোরখা পরা তিনজন মসজিদে ঢুকে ইমামের চোখেমুখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। পরে লোহার তার দিয়ে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে পাশের মুসল্লিরা তাদের ধরে ফেলেন। পরে মসজিদ কমিটির লোকজনকে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে তরুণীদের ছেড়ে দেন। ওই ইমামকে পাশের লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে মসজিদ কমিটির সভাপতি বলেন, ওই ইমাম এক মেয়েকে বহুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছেন বলে তার বাবা অভিযোগ করেছেন। এর ভিত্তিতে তিনি ইমামকে মসজিদ ছেড়ে চলে যেতে বলেন। ইমাম চলেও যান। কিছুদিন পর মসজিদের কিছু লোক তাকে আবার নিয়ে আসেন।
রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইসকান্দার আলী বলেন, ‘মেয়ের পক্ষ থেকে আমরা জেনেছি, ইমামের সঙ্গে মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আছে এবং মেয়ে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছে। কিন্তু ইমাম রাজী না হলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে বোনদের নিয়ে মসজিদে বোরখা পরে ঢোকে। মোনাজাত করা অবস্থায় প্রথমে মরিচের গুড়া এবং পরে পাইপ দিয়ে ইমামকে আঘাত করা হয়।’
তিনি বলেন, মেয়ের বাবা ওই মসজিদের সহসভাপতি। এলাকার পরিস্থিত শান্ত হলে আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো। সমাধানের চেষ্টা করবো।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও ওই ইমামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রকিব বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি ইমাম ওই মেয়ের ভাইকে পড়ানোর সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর মেয়েপক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাবও আসে। কিন্তু বিয়েতে ইমাম রাজী না হচ্ছিলেন না। এ নিয়ে ঘটনার দুই দিন আগে স্থানীয়ভাবে বৈঠকের কথা ছিল। বিষয়টি শুনে পুলিশ পাঠানো হয়।’
ওসি রকিব আরও বলেন, ‘হুজুরও মেয়েকে মারধর করেছে। তারা দুজনই আহত হয়েছেন। এ ছাড়া মসজিদ কমিটি নিয়েও গ্রুপিং আছে। সে কারণে ঘটনাটিকে ভিন্ন রূপ দেওয়ার চেষ্টাও কেউ কেউ করছে। তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে জটিলতর পরিস্থিতি হতে দেইনি। এ ঘটনায় কেউ থানায় এলে মামলা নেব।’-আমাদেরসময়.কম