চাঁদপুর : কুয়েত প্রবাসী বিল্লাল হোসেন ব্যাপারী এখনো জানেন না দুর্ঘটনার শি'কার হয়ে তার আদরের মেয়ে ফারজানা আক্তার না ফেরার দেশে। একই ঘটনায় তার স্ত্রী বেবী আক্তার আর এক সন্তান হাসান ব্যাপারী এবং হাসপাতালে কাঁ'তরাচ্ছেন। তাকে স্বজনরা জানিয়েছেন, ওরা ভালো আছে।
কিন্তু কিছুতেই বিল্লাল হোসেন ব্যাপারীর মন মানছে না। তাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মিয়াজীর কাছে তিনি জানতে চেয়েছেন ওদের কি হয়েছে। সিলেট থেকে এখনো বাড়ি যাচ্ছে না কেনো। এমন নানা প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান অনেকটা নিরুত্তর থাকেন।
গত মঙ্গলবার ভোররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ম'র্মান্তি'ক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হা'রায় চাঁদপুর সদরের উত্তর বালিয়া গ্রামের ফারজানা আক্তার। এই ঘটনায় তার মা ভাইসহ আহ'ত হয় একই পরিবারের ৭ জন।
আজ বুধবার দুপুরে চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মিয়াজী আরো জানান, গত ৬ নভেম্বর এক আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে সিলেট যায় ফারজানা আক্তারসহ একই পরিবারের ৮ জন। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে গত সোমবার রাতে উদয়ন ট্রেনযোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় এই পরিবারটি। কিন্তু পথিমধ্যে কসবায় মন্দবাগে ভ'য়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের বহনকারী ট্রেনটি।
এ সময় অন্যরা গুরুতর আহ'ত হলেও ঘটনাস্থলে প্রাণ হা'রায় স্কুলছাত্রী ফারজানা আক্তার (১৬)। এই ঘটনায় আহ'ত হয় নিহ'ত ফারজানা আক্তারের মা বেবী বেগম (৪৫), ভাই হাসান ব্যাপারী (২৮), নানী ফিরোজা বেগম (৭০), ফারজানার মামি শাহিদা বেগম (৪০), মামাতো বোন মিতু (১৭), ইলমা (৭) ও মামাতো ভাই জুবায়ের (৩)। আহ'তদের এখন কুমিল্লায় চিকিৎসা চলছে। এদিকে মঙ্গলবার রাতে গ্রামের বাড়িতে ফারজানা আক্তারের দাফন সম্পন্ন হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল ফারজানা আক্তারের। দুই ভাই একবোনের মধ্যে সে ছিল সবার আদরের। কুয়েত প্রবাসী বাবা বিল্লাল হোসেন ব্যাপারী তার একমাত্র মেয়ের প্রতি ছিলেন আরো দুর্বল। দুই একদিন পরপরই পরিবারের খোঁজ খবর নিতে গিয়ে মেয়ে ফারজানার সঙ্গে একটু আলাপ করতেন। কিন্তু গত দুই দিন গোটা পরিবারের কোনো খোঁজ খবর পাচ্ছেন না হতভাগা এই বাবা। তাই উপায়ন্ত না পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জানতে চান, ওরা কোথাও কেমন আছে। তবে প্রবাসে অস'হায় বাবাকে কোনো ভালো খবর দিতে পারেননি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মিয়াজী।