এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চাঁদপুরের বড়স্টেশন পাইকারি মাছ বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। তবে স্থানীয় পদ্মা ও মেঘনার চেয়ে দক্ষিণের সাগর-উপকূল থেকে ধরা ইলিশই বাজারে বেশি এসেছে। তারমধ্যে ছোট আকারের ইলিশের প্রাধান্য লক্ষণীয়।
এখন চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। তাই সরগরম চাঁদপুরের এই পাইকারি বাজার। বেপারীরা জানাচ্ছেন, আর মাত্র তিন সপ্তাহ পর মা ইলিশ সংরক্ষণে শুরু হবে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। তাই সাগর ও উপকূলে জেলেরা এখন ব্যস্ত ইলিশ ধরতে। ফলে নানা ধরনের জালে নির্বিচারে ধরা পড়ছে ইলিশ। আর সেই ইলিশ বিক্রি করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন ব্যবসায়ীরা চাঁদপুরে।
ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, শনিবার চাঁদপুর বড়স্টেশন পাইকারি মাছ বাজারে ইলিশের সরবরাহ ছিল মাত্র ৫ শ মণ। অথচ গত বছরগুলোতে এমন ভরা মৌসুমে প্রতিদিন ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার মণ ইলিশ সরবরাহ হতো।
বর্তমানে আকারভেদে এসব ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত। এক কেজির নিচে ইলিশ ১৯০০ থেকে ২০০০, এক কেজি আকারের ২১০০ থেকে ২২০০, আর এক কেজির বেশি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ২৬০০ টাকায়। এছাড়া ছোট ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।
চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শবেবরাত বলেন, ‘আগের মতো ইলিশ বাজারে নেই। তাই সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম বেড়েছে। তবে আকারভেদে দরদাম এখনো চড়া।’
এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে ইলিশ। অনেকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে তারপর রফতানির দাবি তুলছেন। নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বন্ধুদের নিয়ে ইলিশ কিনতে এসেও খালি হাতে ফিরে গেছেন। তিনি বলেন, ‘দাম শুনে কেনার সাহস হয়নি।’
কুমিল্লার দক্ষিণ ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা জসিম উদ্দিনের দাবি, সরকারের উচিত আগে দেশের মানুষের চাহিদা মেটানো, তারপর রফতানি।
চাঁদপুর শহরের মজুমদার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন আলম বলেন, ‘চাঁদপুরে থাকি, তবুও বড় ইলিশ খেতে পারছি না। দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।’
তবে চাঁদপুরে শুধু ব্যবসায়ী নয়, খুচরা ক্রেতারাও দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসছেন তাজা ইলিশের স্বাদ নিতে। অভিযোগ রয়েছে, চাহিদার সুযোগে কিছু বিক্রেতা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, ইলিশ যেখানে ধরা পড়ে সেখান থেকেই দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে বাজারে আসে। তাদের বক্তব্য, ক্রেতাদের উপর চাপিয়ে বাড়তি দাম নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চিঠি দিয়েছেন। তাতে যৌক্তিক পর্যায়ে দাম নির্ধারণের আহ্বান জানানো হয়। নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে ইতিবাচক সাড়া মিললেও ব্যবসায়ীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
তাদের মতে, পচনশীল পণ্য হিসেবে ইলিশ বা এ ধরনের মাছ পূর্ব নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা সম্ভব নয়। সরবরাহের উপর নির্ভর করেই এর দরদাম ওঠানামা করে।