টাকা, মামু-খালু না থাকলে রাজনীতি কইরেন না: দুধ দিয়ে গোসল যুবদল নেতার

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. হোসেন মিয়া হঠাৎ করে দুধ দিয়ে গোসল করে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন। বলেন, ‘টাকা, মামু-খালু না থাকলে রাজনীতি কইরেন না’। রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ভিডিওটিতে তাকে দুধ ঢেলে গোসল করতে দেখা যায়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিডিওর সঙ্গে দেয়া স্ট্যাটাসে ক্ষোভ, হতাশা ও বঞ্চনার ভাষায় তিনি লেখেন, আমার এই ভিডিওটা দেখার পর সবার কাছে আমি হাসির পাত্র হিসেবে থাকবো, এমনিতেই আমি আজ সবার হাসির পাত্র। আমি ধ্বংস হয়নি, আমাকে ধ্বংস করা হয়েছে, আর সেটা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সিস্টেমের কাছে যে সিস্টেমটার নাম হচ্ছে টাকা আর ষড়যন্ত্র।

তিনি আরও লেখেন, আমার কাছের মানুষগুলো আমার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছে। আমার মতো মানুষের রাজনীতিতে দুই-চারটা না থাকলে কিছুই হবে না। কিন্তু একটা প্রশ্ন রেখে যাই আমার লড়াইটা কিসের জন্য ছিল? আমার লড়াইটা ছিল বিএনপির জন্য, যুবদলের জন্য, চাঁদপুর-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী জালাল সাহেবের জন্য।

হোসেন মিয়া দাবি করেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির “দোসরদের” যোগসাজশে তাকে রাজনীতি থেকে সরানো হয়েছে। আজ বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের দোসররা মিলেমিশে ষড়যন্ত্র করে, টাকার পাওয়ারে, ক্ষমতার পাওয়ারে আমার মত ক্ষুদ্র কর্মীকে ধ্বংস করেছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সকল প্রকার রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। বলার মতো অনেক কথা আছে কিন্তু ভাষা নেই। ‘টাকা, মামু-খালু না থাকলে রাজনীতি কইরেন না’। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

এদিকে হোসেন মিয়ার ভিডিও ও বক্তব্য ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকে এ ঘটনাকে "আবেগী সিদ্ধান্ত" বা "অতিরঞ্জন" হিসেবে দেখছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ জামান টিপু বলেন, আমরা হোসেন মিয়ার ভিডিওটি দেখেছি। রাজনীতি হচ্ছে আদর্শ ও সংগঠনের জন্য কাজ করার জায়গা। ব্যক্তিগত হতাশা বা চাপের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া দুঃখজনক। তিনি আমাদের কর্মী ছিলেন, ভুল বোঝাবুঝি বা অভিমান থাকলে আলোচনা ও সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যেই সমাধান হতে পারত। আমরা তাকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই।

তিনি আরও বলেন, যুবদলে কাউকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত কখনো ব্যক্তিগতভাবে নেয়া হয় না। দলের নিয়ম, কমিটি ও মূল্যায়নের ভিত্তিতেই সব সিদ্ধান্ত হয়। যদি তিনি মনে করেন কেউ অন্যায় করেছে সংগঠন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

ভিডিও বার্তার শেষে হোসেন মিয়া বলেন, আমি হাসির পাত্র হয়েছি, তবে সত্য কথা বলেছি। যে বুঝবে সে একদিন বুঝবেই।