আরিফুল ইসলাম আরিফ, জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নির্মিত হতে যাওয়া আব্দুল কাদির মোল্লা কনভেনশন সেন্টার বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রবিবার সকাল দশটায় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করে। এছাড়া ভিত্তিপ্রস্তর স্থলে ডাস্টবিন বানিয়ে ভিত্তিপ্রস্তরটি আন্দোলনকারীদের ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন বরাবর পেশকৃত স্মারকলিপিতে আন্দোলনকারীরা দাবি করেন- মেয়েদের হল সংলগ্ন এলাকায় অবকাঠামো নির্মান করা যাবে না, টারজান পয়েন্টে কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার করা যেতে পারে, দেশের খ্যাতিমান ব্যক্তিদের নাম ছাড়া অন্য কারও নামে অবকাঠামো নামকরণ করা যাবে না, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংশ্লিষ্ট যে কোনো সিদ্ধান্ত প্রণয়নে শিক্ষার্থীদের মতামত প্রাধান্য দিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোকে বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে না এবং মেয়েদের নিরাপত্তা জন্য বহিরাগত ও গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের বক্তব্য: এদিকে আব্দুল কাদির মোল্লা কনভেনশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্ধোধনের পর শিক্ষার্থী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্রপত্রিকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে জানিয়ে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস থেকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসন তাদের অবস্থান তুলে ধরেছেন।
এছাড়া কনভেনশন সম্পর্কে কোনো প্রকার বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করতে ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
অর্থদাতা প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনো প্রকার শর্ত সাপেক্ষে কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে না জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মানের কোনো কনভেনশন সেন্টার, সেমিনার হল ও ডরমেটরি নেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি আন্তর্জাতিকমানের কনভেনশন সেন্টার নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিন্তু কনভেনশন সেন্টার নির্মাণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ নেই এবং এ খাতে সরকারি অর্থ পাওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। এজন্য শিল্পপতি আবদুল কাদির মোল্লা এই কনভেনশন সেন্টার নির্মাণের অনুদান নিয়ে এগিয়ে এসেছেন এবং এর পেছনে বাণিজ্যিক কোন উদ্দেশ্যে নেই।
এটি শিক্ষা-গবেষণা সহায়ক একটি অবকাঠামো হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে দেশি-বিদেশি গবেষকদের অবস্থান ও গবেষণার সুবিধা থাকবে। এই সেন্টারে আন্তর্জাতিকমানের ওয়ার্কসপ, সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, বার্ষিক সম্মেলন ইত্যাদি করার মতো উপযুক্ত সেমিনার হল নির্মাণ করা হবে। যা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমকে সহায়তা, গতিশীল ও উন্নত করবে। এখান থেকে যে সমস্ত শিক্ষা ও গবেষণা কাযক্রম পরিচালিত হবে তাতে শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করতে পারবে।
উল্লেখ্য, গত ১২ই জানুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে থার্মেক্স গ্রুপ ও মজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লার নামে একটি কনভেনশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এখানকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
১৫ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস