নিউজ ডেস্ক: ‘ভারত গত এক দশক ধরে ঠিক করছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন’- বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘জাতীয় সম্পদ, জাতীয় নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র পূনঃউদ্ধারের সংগ্রামে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ডাক’ শীর্ষক এ সভায় তিনি বলেন, ভারত এক দশক ধরে ঠিক করছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। শুধু তাই নয়, শোনা কথা, বাংলাদেশের ব্যবসা- বাণিজ্যতেও ভারতের ব্যক্তিরা তদবির করেন। এছাড়া ভারতের সংবাদপত্রে এসেছে, ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিৎ মুখার্জিও এসব বিষয়ে তদবির করেন।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের নিরাপত্তা স্মারকে স্বাক্ষর প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ভারতের নিরাপত্তা চুক্তি হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা চুক্তি নয়। কারণ আমাদের চারিদিকে ভারত, আর ভারতের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ লাগবে না, তারা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। চীনে সঙ্গেও যুদ্ধ হবে না। সুতরাং অন্যদেশের সঙ্গে যখন ভারতের যুদ্ধ লাগবে তখন বাংলাদেশকে তাদের রাষ্ট্রের অংশ হিসাবে ব্যবহার করবে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ বঙ্গপোসাগর রক্ষার জন্য চীনের কাছ থেকে সাবমেরিন কিনে আমরা কোন অপরাধ করি নাই। আর এ জন্য অন্যদেশকে কেনো জবাব দিতে হবে। আর এর জবাব দেওয়ার জন্যই প্রধানমন্ত্রী ভারত গিয়েছেন- বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত অনেক সম্মান দিয়েছেন- উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ব্যক্তিকে না কি রাষ্ট্র সম্মান দিয়েছেন? তবে ভারত যদি তিস্তা চুক্তি করতো তাহলে বাংলাদেশের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হতো।
ভারত বন্ধুত্বের নামে প্রভুত্ব দেখাচ্ছে। ভারতের নিরাপত্তা চুক্তির ইচ্ছার মধ্যে কূটকৌশল রয়েছে- বলেন তিনি। বিএনপির এ নেতা বলেন, ভারতের সাথে না কি বাংলাদেশের সম্পর্ক সর্বোচ্চ উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তাহলে কেনো এতো অবিশ্বাস্ত আর অবিশ্বাস না থাকলে, কেনো এত চুক্তি। প্রশ্ন তার।
ভারত সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে চুক্তির বেড়াজালে ফেলে বন্ধুত্ব হবে না। এতে ঘৃণা বৃদ্ধি পাবে। এই ঘৃণা এক সময় অগ্নিগিরির মত হবে। আর তখন ধ্বংস দেখার অপেক্ষা মাত্র।
গয়েশ্বর বলেন, ভারত বন্ধুত্ব চায় না। আর হাসিনাও ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু নয়। ভারত তাকে ‘শেখ হাসিনা’ দাসি হিসাবে রাখতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের আসার পর আর নাটকের প্রয়োজন হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি চুক্তির জন্য আশকোনা, সিলেট ও মৌলভিবাজারের নাটক সাজানো হয়। কিন্তু যদি জনগণ নাটকটি ধরতে না পারতো তাহলে আরো নাটক হতো। আর এই একটি চুক্তির জন্য কিছু শিশুককে প্রাণ দিতে হয়েছে।
ঢাকাতে ইন্ডিয়ার যত গোয়েন্দা সংস্থার ব্যক্তি রয়েছে বাংলাদেশেরও তত নেই- বলে মন্তব্য করেন তিনি আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহােরর সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশীদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।
১০ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এইচএস/কেএস